খাদ্যের সন্ধ্যানে কালোমুখী হনুমানের দল তাদের কোলের বাচ্চা সাথে নিয়ে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের পাশাপাশি এবার হানা দিয়েছে, পৌরশহরের তাহেরপুর মাষ্টার পাড়ার বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে। রবিবার (২৮ মার্চ) দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত হনুমানের দল মাষ্টার পাড়ায় অবস্থানকালে শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ যে যার মত ঘর থেকে খাদ্য এনে তাদের হাতে তুলে দেয়। তার পরেও ওই মাষ্টারপাড়ার শিক্ষক ইসহাক আলীসহ বিভিন্ন ব্যক্তির ছাদ কৃষির উপর হনুমানের দল পর্যায়ক্রমে আক্রামণ চালিয়ে তছনছ করলেও তাদেরকে কিছু না বলে সবকিছু মেনে নিয়েছে সবাই।
জানাযায়, কয়েকদিনের ব্যবধানে পৌর এলাকার মোহনপুর, বিজয়রামপুর, হাকোবা, গাংড়াসহ উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের ফসলের ক্ষেতসহ বসতবাড়িতে হনুমানের দল হানা দিয়ে মানুষের ক্ষতি-সাধন করে চলেছে। বিশেষ করে বসতবাড়ির ছাদে(ছাদকৃষি) উৎপাদিত সবজি ও ফলজ গাছে হানা দিয়ে সাবাড় করে দিচ্ছে। এছাড়া খাবার না পেয়ে গৃহস্থলীর আসবাপত্র তছনছ সহ রান্না করা খাবারও নিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি কোলে বাচ্চা দেখে হনুমানের দলকে আদর করে শিশু-কিশোর ও নারী-পুরুষরা তাদেরকে খাবারও দিচ্ছেন। জানাযায়, কেশবপুর পৌরশহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হরিহরনদীর তীরে হনুমানের অভয়ারণ্য গড়ে ওঠে প্রায় দেড়যুগ আগে। সরকার এ অভয়ারন্যে হনুমানের জন্য খাদ্যও বরাদ্দ করে। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে সংশ্লিষ্টরা প্রতিদিন যে খাদ্য সরবরাহ করেন প্রয়োজনের তুলনায় তা অত্যন্ত অপ্রতুল। ফলে খাদ্যের সন্ধানে হনুমানের দল আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে হানা দিচ্ছে।
মণিরামপুর পৌরশহরের তাহেরপুর মাষ্টারপাড়ার অনার্স পড়ুয়া ছাত্রী আমেনা খাতুন জানান, হনুমানের দল তাদের বাসায় প্রবেশ করে অনেক কিছু তছনছ করলেও তাদেরকে আদর করে খাদ্য প্রদান করা হয়েছে। হনুমানের এলাকা কেশবপুরের স্থানীয় অনেকেই জানান, ইতিপূর্বে হনুমান রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য প্রদানসহ রক্ষণাবেক্ষণ ছিল বর্তমানে তার অনেক ঘাটতি হয়েছে।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে কেশবপুর উপজেলা বন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) গোলাম মোস্তফা জানান, অভয়ারন্যে বর্তমান হনুমানের সংখ্যা রয়েছে প্রায় সাড়ে ছয় শতাধিক। সরকারি ভাবে এদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে প্রতিদিন ৩৬ কেজি পাকাকলা, পাঁচ কেজি বাদাম এবং চারকেজি পাউরুটি। যা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগন্য। ফলে খাদ্যাভাবে হনুমানের দল বিভিন্ন লোকালয়ে হানা দিচ্ছে। জানতে চাইলে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এমএম আরাফাত হোসেন দাবী করেন, হনুমান রক্ষায় প্রতিদিন ছয়টি স্থানে তাদেরকে খাদ্য প্রদান করা হয়ে থাকে।
খুলনা গেজেট/কেএম