খুলনার কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের হতদরিদ্র নারীদের জন্য বরাদ্দকৃত গেল দু’বছরের ভিজিডি কার্ডধারীদের চক্র শেষ হলেও সঞ্চয়কৃত টাকা ফেরত দেয়া নিয়ে নানা তালবাহনার অভিযোগ উঠেছে। অজ্ঞাত কারণে সঞ্চয়কৃত টাকা উপকারভোগীদের নামে ব্যাংক হিসেবে জমার ব্যবস্থা করা হয়নি। অভিযোগ রয়েছে ব্যক্তিস্বার্থের জন্য এমনটি করা হয়েছে। এছাড়া চক্রের সময় পার হলেও আত্মকর্মসংস্থানের জন্য দেয়া হয়নি কোন প্রশিক্ষণ।
ভিজিডি কার্ডের সুবিধাপ্রাপ্ত একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের ভিজিডি কার্ডের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এখন আর তারা চাল পাচ্ছেন না। তবে চক্র শেষ হলেও এখনো সঞ্চয়কৃত টাকা ফেরত পাননি তারা। কবে সঞ্চয়কৃত টাকা ফেরত পাবেন তা নিয়ে দ্বিধা দ্বন্দ্বে রয়েছেন। এছাড়া চক্র চলাকালে তাদের নামে কোন ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খোলা হয়নি। প্রতি মাসে চাল গ্রহণের সময় ২শ’ টাকা করে জমা দিয়েছেন তারা। যা তাদের নামে ব্যাংক এ্যাকাউন্টের ব্যবস্থা করে স্ব স্ব হিসেবে জমা হওয়ার কথা। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ব্যাংক এ্যাকাউন্টে জমা রাখা হয়নি।
আরও জানা যায়, প্রতি মাসে ওই ইউনিয়নের ৫১৩ জন সুবিধাভোগীর প্রত্যেকে ২শ’ টাকা করে মোট ১ লাখ ২ হাজার ৬শ’ টাকা ব্যাংকে জমা হওয়ার কথা ছিল। সে হিসেবে ২ বছরে মোট জমা হওয়ার কথা ছিল ২৪ লাখ ৬২ হাজার ৪শ’ টাকা। অভিযোগ উঠেছে জমাকৃত টাকা জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের ব্যক্তিস্বার্থের কারণে উপকারভোগীদের নামে ব্যাংক হিসেবে জমা রাখেন নাই।
অপরদিকে, সুবিধাভোগীদের স্ব নামে ব্যাংক এ্যাকাউন্ট করে টাকা জমা রাখা হয়নি একই উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের উপকারভোগীদেরটা। তবে সম্প্রতি প্রত্যেককে ২ হাজার ৮৫০ টাকা করে ফেরত দেয়া হয়েছে। তবে আত্মকর্মসংস্থানে উদ্বুদ্ধ করতে ভিজিডি উপকারভোগীদের কোন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হয়নি।
মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জিএম আব্দুল্লাহ আল মামুন খুলনা গেজেটকে বলেন, করোনা সমস্যা দেখা দিলে উপকারভোগীদের সুবিধার্থে আর টাকা জমা রাখা হয়নি। এজন্য ১৪ মাসের সঞ্চয়ের সাথে ৫০ টাকা যোগ করে ২ হাজার ৮৫০ টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে মহেশ্বরীপুর ইউপি চেয়ারম্যান বিজয় কুমার সরদার বলেন, সম্প্রতি ৭ টা ওয়ার্ডের কার্ডধারীদের টাকা ফেরত দিয়েছি। বাকি ২টা ওয়ার্ডে বুধবার টাকা ফেরত দিবো। তবে ব্যাংক হিসেবে জমা না রাখার বিষয়ে কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রেশমা আক্তার খুলনা গেজেটকে বলেন, মহেশ্বরীপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমাদেরকে জানিয়েছেন উনার সমস্যার কারণে ৩ টা ওয়ার্ডের টাকা এখনও ফেরত দিতে পারেননি। তবে খুব তাড়াতাড়ি বাকি ৩ টা ওয়ার্ডের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করা হবে।
আর ব্যাংক এ্যাকাউন্টের বিষয়ে বলেন, আমি এখানে নতুন আসছি। আমার সময় থেকে ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এনএম