ডুমুরিয়ার চুকনগর ভদ্রা নদীর উপর নির্মিত ব্রীজটি তলদেশ থেকে মাঝ বরাবর ফাটলের ৪ বছর অতিবাহিত হলেও আজও সংস্কার করা হয়নি। যে কোন মুহুর্তে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটার আশংঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে চুকনগরের সাথে শিল্পনগরী নওয়াপাড়ার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। ফলে খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার ব্যবসায়ীদের সাথে যশোর জেলার ব্যবসায়ীদের (তিন জেলার মানুষের) ব্যবসায়ীক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, ১৯৮৮সালে ইউ এস এইড এর সহযোগীতায় আমেরিকান সরকারের অর্থায়নে বাংলাদেশ ত্রান ও দুর্যোগ মন্ত্রালয়ের অধীনে ডি জি রিলিফ ডিপারমেন্ট মাধ্যমে মাত্র ৫টন মালামাল বহন ক্ষমতা সম্পন্ন এই ব্রীজটি নির্মান করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে ব্রীজটি ব্যবহারে নিয়ম কানুন মানা হলেও সোলগাতিয়া ব্রীজটি নির্মানের পর নওয়াপাড়া থেকে সার, সিমেন্ট, রড বোঝায় গাড়ী, বেনাপোল ও ভোমরা স্থল বন্দর থেকে পাথর বোঝায় গাড়ি, ক্লিংকারবাহী গাড়ী, পেয়াজ, রসুন বোঝায় গাড়ী ব্রীজের উপর দিয়ে চলাচল করছে। ৪০ থেকে ৫০ টন পর্যন্ত মালামালপূর্ণ গাড়ী এর উপর দিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করছে। কিন্তু তারা জানে না যে ব্রীজটির তলদেশে ফাটল ধরেছে।
বর্তমানে ব্রীজটি চরম বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। প্রচন্ড ঝুকি নিয়ে যানবাহনগুলো ব্রীজ পার হচ্ছে। ২০১৮ সালে ব্রীজের দুই মাথায় মাঝখানে বিপদ সীমার চিহৃ ও ব্রিজের মাঝ বরাবর দুই পাশে দুটি পিলার জমিয়ে দিয়ে ব্রীজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশেক হাসান। যাতে ভারী যানবাহন ব্রীজের উপর দিয়ে পার হতে না পারে। কারণ যে কোন সময় ব্রীজটির মুল অবকাঠামো ভেঙ্গে নদীতে পড়তে পারে বলে তাদের ধারণা। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে বিপদ সীমার চিহৃসহ পিলার হারিয়ে গেছে।
এদিকে প্রায় ৪ বছর অতিবাহিত হলেও ব্রীজটি সংস্কারের কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করায় শিল্পনগরী নওয়াপাড়ার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারে বিচ্ছিন্ন হওয়ার শংঙ্কায় এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। তবে অনেকে ব্রীজটির নড়বড়ে অবস্থা অনুভব করে নিরুপায় হয়ে যশোর হয়ে অতিরিক্ত যানবাহন খরচ দিয়ে মালামাল আনা নেয়া করছেন। এতে তারা লাভের পরিবর্তে লোকসানের সম্মুখিন হচ্ছে। তবে এ অবস্থা চলতে থাকলে ব্রীজটি কোন মুহুর্তে ভেঙে পড়ে খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলা মানুষের সাথে যশোর জেলার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পানি কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ এবিএম শফিকুল ইসলাম ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ হেলাল উদ্দীন বলেন, ৪ বছর আগে ব্রীজটির তলদেশ মাঝ বরাবর ফাটল ধরায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের চীপ ইঞ্জিনিয়ার নুরুল আলীকে আনা হয়। তখন আমরা দাবি জানিয়েছিলাম ব্রীজটি সংস্কার করার জন্য। কিন্তু তারা এ বিষয়টি নিয়ে কোন কর্ণপাত না করায় আজ ব্রীজটি চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই আমাদের দাবি এই ব্রীজটি খুলনা, যশোর ও সাতক্ষীরা এই ৩টি জেলার সংযোগস্থল হওয়ার একটি বড়, টেকসই ও মানসম্পন্ন ব্রীজ অনতিবিলম্বে করতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরীফ আসিফ রহমান বলেন, ২০১৮ সালে ব্রীজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল, সেটা আমার জানা ছিল না। যখন জানতে পারলান আমি বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে নতুন একটি টেকসই ও মানসম্মত ব্রীজ নির্মানের ব্যাপারে আলোচনা করবো।