বাগেরহাটে করোনা ভাইরাসের টিকার মজুদ শেষ হয়েছে। বুধবার কেন্দ্রে এসে টিকা না পেয়ে ফিরে গেছেন অনেকে।বাগেরহাট স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে টিকা প্রাপ্তি স্বাপেক্ষে আগামী সপ্তাহে আবার টিকা প্রদান শুরু করা হবে।
দুপুরে বাগেরহাট সদর হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্রে সামনে প্রচুর লোকের ভীর দেখা যায়। রোদে দাড়িয়ে অপেক্ষা করছেন অনেকে। অনেকে আবার টিকা না পেয়ে চলে যাচ্ছেন ক্লান্ত মনে। কেউ কেউ আবার প্রথম ধাপের মত টিকা শেষ হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন।
দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিতে আসা বাগেরহাট সদর উপজেলার বাগমারা এলাকার বৃদ্ধ কৃষ্ণ কিশোর সেন বলেন, এখানে কোন নিয়ম কানুন নেই। অনেকে এসেই অন্য দরজা দিয়ে প্রবেশে করে টিকা পেয়ে যাচ্ছেন। আমরা ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থেকেও টিকা পাইনা। এখন বলছে টিকা শেষ। তবে কবে আসবো সে কথাও কিছু বলছে না। যারা প্রথম ডোজ দিয়েছে, তাদের জন্য অন্তত দ্বিতীয় ডোজ মজুদ রাখার দাবি জানান তিনি।
একই উপজেলার কাশেমপুর গ্রামের বিনদীনি বৈরাগীর (৬৫) বলেন, সকাল থেকে দাড়িয়ে আছি। এখন দুপুরে এসে বলে টিকা শেষ। এটা কোন ধরণের আচরণ জানি না।
শুধু বিনোদীনি এবং কিশোর সেন নয়, একই ধরণের অভিযোগ রয়েছে টিকা নিতে আসা অনেকের।
বাগেরহাট সিভল সার্জন অফিস সূত্রে জানাযায়, বাগেরহাট জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এ পর্যন্ত ৩ লক্ষ ২ হাজার টিকা পেয়েছে। এর মধ্যে চীনের সিনোফার্মার এক লক্ষ ৮৯ হাজার ২০০ ডোজ, ভারতের স্টোজেনিকা ৯৯ হাজার, জাপানি স্টোজেনিকা ১১ হাজার ডোজ এবং যশোর থেকে স্টোজেনিকার দুই হাজার ডোজ ধার করেছে বাগেরহাট জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। বুধবার (০১ সেপ্টেম্বর) একদিনে বাগেরহাটে এক হাজার ৫৭২ জনকে প্রথম ডোজ এবং এক হাজার ৬৬৩ জনকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শুধু বাগেরহাট সদর হাসপাতালেই টিকা নিয়েছে ৬৬০ জন।
স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেব মতে এখন পর্যন্ত বাগেরহাটে দুই লক্ষ ৮৯ হাজার ৭১৯ জন মানুষ টিকা নিয়েছেন। এদের মধ্যে সিনো ফার্মার প্রথম ডোজ নিয়েছেন এক লক্ষ ৫১ হাজার ২৫৬ জন। সিনো ফার্মার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৩২ হাজার ৬৪১ জন। স্টোজেনিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৪ হাজার ৭৮৪ জন। স্টোজেনিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৫১ হাজার ৩৮ জন।
বাগেরহাটের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, প্রথম থেকে বাগেরহাটে টিকার জন্য ব্যাপক চাহিদা ছিল। স্বাস্থ্য বিভাগও চেষ্টা করেছে সকলকে টিকা প্রদানের জন্য। এ পর্যন্ত আমরা দুই লক্ষ ৮৯ হাজার ৭১৯ জনকে টিকা দিতে সক্ষম হয়েছি। তবে আমাদের টিকার মজুদ শেষ হয়েছে। এ জন্য কয়েকদিন টিকা প্রদান বন্ধ থাকবে। মন্ত্রণালয়ে টিকার চাহিদা পত্র পাঠানো হয়েছে। টিকা প্রাপ্তি স্বাপেক্ষে আগামী সপ্তাহ থেকে নিয়মিত টিকা প্রদান করা হবে।
খুলনা গেজেট/এএ