খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ আশ্বিন, ১৪৩১ | ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  রাঙামাটিতে প্রশাসনের কর্মকর্তা ও নেতৃবৃন্দের সাথে ৩ উপদেষ্টার বৈঠক চলছে

বলাবাড়িয়ায় পাউবো’র বেড়িবাঁধে ভাঙ্গন, আতংকে এলাকাবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের বলাবাড়িয়ার বাবুলালের খেয়াঘাট এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। খোলপেটুয়া নদীর প্রবল জোয়ারের তোড়ে বেড়িবাঁধ একটু একটু করে ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে একেবারে সংকীর্ণ হয়ে গেছে। ফলে কোন রকম ঝড় ও বৃষ্টি হলেই ওই বাঁধ ভেঙ্গে নদীর পানিতে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডে বিভাগ-২ এর আওতাধীন ৪নং পোল্ডারের আশাশুনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের বলাবাড়িয়া বাবুলালের খেয়াঘাট এলাকা বেড়িবাঁধে ভাঙ্গন চলছে। খোলপেটুয়া নদীর প্রবল জোয়ারের তোড়ে প্রতিদিন একটু একটু করে ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে কোনো কোনো স্থানে দুই থেকে তিন ফুটের বেশি বাঁধ অবশিষ্ট নেই। ভাঙ্গন পয়েন্টের কয়েকটি স্থানে মাটি দিয়ে ভাঙ্গনরোধ করার চেষ্টা করছে স্থানীয়রা। বেড়িবাঁধে ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় নদীর তীরবর্তী এলাকায় বাসবাসকারি মানুষ আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।

স্থানীয়রা জানায়, বলাবাড়িয়া প্রাইমারী স্কুল থেকে বাবুলালের খেয়াঘাট সংলগ্ন প্রায় ৩০০ ফুট বাঁধ অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ভয়ে আশেপাশের বাড়ি থেকে শিশুদের বাড়ি থেকে বের হতে দিচ্ছে না তাদের মা-বাবা। দ্রুত বাঁধটি মেরামত করা না হলে যে কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগে তা ভেঙ্গে এলাকার কয়েকশ’ চিংড়ি ঘেরসহ ঘরবাড়ি পনিতে তলিয়ে যেতে পারে। জলাবদ্ধতার কবলে পড়তে পারে ওই এলাকার কয়েক হাজার পরিবার। তারা দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধটি সংষ্কারে স্থানীয় প্রশাসনসহ পাউবো’র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

আশাশুনি উপজেলার বলাবাড়িয়া এলাকার আলমগীর কবির জানান, আশাশুনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের বলাবাড়িয়া এলাকায় খালপেটুয়া নদীর তীরবর্তী পাউবো’র বেড়িবাঁধ গত পাঁচ বছরে একাধিকবার ভেঙ্গে আশাশুনি সদর ও শ্রীউলা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্রায় ছয় মাস ধরে বলাবাড়িয়ার বাবুলালের খেয়াঘাট এলাকায় বাঁধে ভাঙ্গন চলছে। বাঁধ ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে বর্তমানে প্রায় তিন শত ফুট এলাকা জুড়ে সরু হয়ে গেছে। ভাঙ্গনকবলিত এরাকায় বাঁধের দুই থেকে তিন ফুটের বেশি অবশিষ্ট নেই। ওই স্থান দিয়ে সাইকেল চালিয়েও মানুষ চলাচল করতে পারছে না।

একই এলাকার অনুপ কর্মকার জানান, ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে বর্তমানে বাঁধের অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, অমাবস্যা বা পূর্ণিমার গোনে নদীতে জোয়ার বেশি হলে যে কোনো মুহূর্তে ওই সরু বাঁধ ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হতে পারে। সামনে বর্ষা মৌসুম এখনই যদি বাঁধ সংস্কার না করা না যায় তাহলে বড় ধরণের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

আশাশুনি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হোসেন আলী জানান, গত ছয় থেকে সাত মাস ধরে ওই এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গেছে। বতমানে বলাবাড়িয়া এলাকা তিন শত ফুটের মতো এলাকা জুড়ে বাঁধ ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে একেবারে সরু হয়ে গেছে। বাঁধ এতটাই সরু হয়েছে যে, তার উপর দিয়ে একটা ভ্যান কিম্বা সাইকেল চলাচল করতে পারে না কেউ।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলীকে নিয়ে সম্প্রতি তিনি ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, নতুন বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে চার বিঘা জমি কেনার চেষ্টা চলছে। জমি না হলে নতুন করে বাঁধ করা যাবে না।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহনেওয়ার তালুকদার জানান, বাঁধটি তিনি পরিদর্শন করেছেন। এই স্থান বাঁধে ভাঙ্গন চলছে। বর্ষার আগেই বাঁধটি মেরামত করার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সিদ্ধান্ত দিলে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধটি মেরামতের কাজ শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।

খুলনা গেজেট/ এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!