আরও একবার শিরোপার খুব কাছে গিয়ে হতাশার হার। তুমুল আক্রমণে প্রথমার্ধে রিয়াল মাদ্রিদের ভিত নাড়িয়ে দেওয়ার পরও বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের হলুদ শিবির তাই তো শোকে ‘নীল’! ওয়েম্বলিতে ২০১৩ সালে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে তারা হেরেছিল ২–১ ব্যবধানে। গতকাল দ্বিতীয়বার একই মাঠে ২-০ গোলে রিয়ালের কাছে হেরে গেছে ডর্টমুন্ড। ফলে দুই ফাইনালে হারের তিক্ততা নিয়েই ক্লাবটির হয়ে বিদায় হয়ে গেল মার্কো রয়েসের। তিনিও বুঝলেন– ‘ফুটবল কোনো রূপকথা নয়’!
অবশ্য এমন মন্তব্য রয়েসের মুখ থেকে আসেনি। ম্যাচ শেষে ডর্টমুন্ড তাদের অফিসিয়াল এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে লিখেছে, ‘ফুটবল কোনো রূপকথা নয় এবং এখানে সব সময় শেষটা সুখের হয় না।’ এরপর সমর্থকদের অফুরান ভালোবাসার জন্য কৃতজ্ঞতা জানায় ডর্টমুন্ড, ‘আমাদের এই গল্প চলমান থাকবে, তবে তোমাদের সমর্থন ছাড়া সেটি সম্ভব নয়। এসব মিলিয়েই আমাদের বিষ্ময়কর এই হলুদ বন্ধন।’
রয়েসের মতো ডর্টমুন্ডের আরেক তারকা ম্যাট হামেলসও হয়তো শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। যদিও তিনি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেননি। ২০১২ সাল থেকে রয়েস টানা ১২ মৌসুম আর হামেলস ডর্টমুন্ডের হলুদ জার্সি গায়ে তুলেছেন ১৪ মৌসুম। দুজনের কারোরই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা হয়নি। দুইবার জার্মানির সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতা বুন্দেস লিগা জিতেছেন হামেলস, রয়েসের কপালে সেটিও জোটেনি। ২০১৩–এর পর ২০২৪ আসরেও তারা দলকে ইউসিএল ফাইনালে তুলে ডুবেছেন চূড়ান্ত হতাশায়।
৩৪ বয়সী জার্মান স্ট্রাইকার রয়েস বরুশিয়ার হয়ে ৪২৯ ম্যাচে গোল করেছেন ১৭০টি। ক্লাব ছাড়ার কথা তিনি আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন। ফলে ওয়েম্বলিতে শেষবার ডর্টমুন্ড জার্সি গায়ে তুলবেন সেটা জানাই ছিল। তবে রূপকথার নায়ক হওয়া হলো না শেষ ম্যাচেও। অন্যদিকে দুই মেয়াদে ক্লাবটির হয়ে খেলেছেন হামেলস। তিনি নতুন করে ডর্টমুন্ডের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়াবেন নাকি ভিন্ন ক্লাবে যাবেন সেটি এখনও অনিশ্চিত।
এদিকে, ম্যাচ হারলেও খেলোয়াড়দের নিবেদনে সন্তুষ্ট ডর্টমুন্ডের স্পোর্টিং ডিরেক্টর সেবাস্টিয়ান কেইল। তিনি বলেন, ‘আমরা দারুণ একটি ম্যাচ খেলেছি। বিশেষ করে প্রথমার্ধে, প্রায় নিঁখুত পারফরম্যান্স। গোল পেলে পুরোপুরি নিখুঁত হতো। আমরা সুযোগ কাজে লাগাতে পারিনি। আমার মতে এটি নেতিবাচক দিক। দিন শেষে আমরা দেখলাম ফাইনালে কতটা ভালো খেলতে পারে রিয়াল মাদ্রিদ এবং আদর্শ পরিস্থিতিতে কীভাবে ফল বের করতে পারে।’
একইসঙ্গে ফুটবলারদের পারফরম্যান্সে গর্বিত এই ডর্টমুন্ড কর্মকর্তা, ‘আমাদের জন্য যত কঠিনই হোক, তারা ম্যাচের গতিবিধি বদলাতে সমর্থ ছিল। কারণ আমরা খুব কাছাকাছি ছিলাম এবং হয়তো প্রাপ্যও ছিলাম। তবু আমরা এখনও নিজেদের অর্জন নিয়ে গর্ব করতেই পারি।’ এর আগে ১৯৯৭ সালে কেবল একবারই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল জার্মান ক্লাবটি। পরে আরও দুবার ফাইনাল খেলে ফিরতে হয়েছে শিরোপাবঞ্চিত হয়ে।
খুলনা গেজেট/এএজে