যশোরের চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক ইনচার্জ ইন্সপেক্টর রোকিবুজ্জামানের বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগে যশোর আদালতে মামলা হয়েছে। গত ২১ মার্চ আদালতে মামলাটি করেছেন যশোর শহরের মিশনপাড়ার মৃত আবুল হাসেমের ছেলে মাসুম কবির। এরআগে তিনি দুদকেও একই অভিযোগ করেন। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে দুদকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তা জানতে চেয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়। গত ৪ এপ্রিল মামলার ধার্য দিনে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ইখতিয়ারুল ইসলাম মল্লিক দুদকের প্রতিবেদন না আসায় আগামি ২৪ মে মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, তিনি যশোর মাদকাসক্ত নিরাময় ও পূনর্বাসন কেন্দ্রে মালিকানা সদস্য থাকা অবস্থায় গত বছরের ২২ মে মাহফুজুর রহমান নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়। ওই মৃত্যু সংক্রান্তে মামলায় তাকে আসামি করা হবে না মর্মে রোকিবুজ্জামান তার কাছে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। অন্যথায় ওই মামলায় তাকে আসামি করা হবে বলে ভয়ভীতি দেখায়। তারই অংশ হিসেবে গত বছরের ২২ মে রাত ১০ টায় রোকিবুজ্জামান বাদীকে চাঁচড়া ফাঁড়িতে ডেকে নেন। সেখানে নিয়ে তিনি ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। এ টাকা দিতে তিনি অস্বীকার করলে রাত সাড়ে তিনটায় মিশনপাড়ার বাড়ি থেকে তাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। এরপর তিনি বাদী ও তার শ্বশুরকে ওই দশ লাখ টাকা ঘুষ দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।
সবশেষে ঘুষের টাকা না পেয়ে এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় যে হত্যা মামলার দায়ের হয়, সে মামলায় বাদীকে আসামি করা হয়। এছাড়া মামলার আসামি ও স্বাক্ষীদেরও আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে মাসুম কবীরের বিরুদ্ধে মিথ্যা স্বাক্ষী দেয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয় বলে মামলায় উল্লেখ করেন মাসুম কবীর।
তিনি মামলায় আরও উল্লেখ করেন, মুলত আশরাফুল কবীর তুহিনের সার্বিক তত্ববধানে পরিচালিত হতো মাদকাশক্তি নিরাময় কেন্দ্রটি। ওইদিন সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে রুটি তৈরিকে কেন্দ্র করে গোলযোগের কারণে মারপিটের ফলে মৃত্যু হয় রোগী মাহফুজুর রহমানের। যা সিসিটিভি ফুটেজে উঠে এসেছে। পরে তিনি ঘটনাটি তুহিনের মাধ্যমে জানতে পারেন। অথচ ইন্সেপেক্টর রোকিবুজ্জামান ১০ লাখ টাকা ঘুষ না পেয়ে বাদীকে ওই হত্যা মামলার হুকুমের আসামি করেছেন। বাদী প্রথমে এ বিষয়ে দুদক কার্যালয় যশোরে অভিযোগ দেন। কিন্তু অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার না পেয়ে বাধ্য হয়ে তিনি আদালতে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(১) ধারায় এ মামলাটি করেন। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে এ সংক্রান্ত্রে অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তার প্রতিবেদন চেয়ে আগামি ২৪ মে মামলার পরবর্তি দিন ধার্য করেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই