যশোরের চাঞ্চল্যকর শামসুর রহমান খোকা হত্যা মামলায় ছেলে ও ভাইকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস দেয়া হয়েছে আরও ৬জনকে। বুধবার দুপুরে স্পেশাল দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সামছুল হক (জেলা জজ) এ রায় ঘোষণা করেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পিপি সাজ্জাদ মোস্তফা রাজা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, নিহত শামসুর রহমান খোকার ছেলে মোশারেফ হোসেন ও ভাই তাহের আলী।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০০ সালের ১১ মে রাত ৯টার দিকে শামসুর রহমান খোকাকে শালিসের জন্য প্রতিবেশী মেহের আলীর বাড়িতে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। ওইরাতে তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এরপর নিখোঁজের ঘটনায় যশোর কোতোয়ালি থানায় জিডি করে তার পরিবার। পরবর্তীতে ২৩ আগস্ট শামসুর রহমান খোকার স্ত্রী ছায়েরা খাতুন নিজের তিন ছেলেসহ ৮জনকে আসামি করে আদালতে হত্যার পর গুমের অভিযোগে মামলা করেন।
আদালতের নির্দেশে অভিযোগটি যশোর কোতোয়ালি থানায় মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়। এরপর পুলিশ তদন্ত করে জড়িত সন্দেহে তার ছেলে মোশারেফ হোসেন ও আজগার আলী নামে দু’জনকে আটক করে। তাদের মধ্যে আজগার আলীর দেয়া তথ্যানুযায়ী ২০০১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার সুবর্ণমায়া গ্রামের ডা. জিন্নাত আলীর বাথরুমের সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে শামসুর রহমান খোকার কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ তদন্ত শেষে ২০০২ সালের ৯ মে নিহতের ছেলে মোশারেফ হোসেন ও ভাই তাহের আলীসহ নয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা ও গুমের অভিযোগে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহ দারা খান। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, শামসুর রহমান খোকা তার নিজ পুত্রবধূ ও ভাবির সাথে অনৈতিক সম্পর্ক করায় হত্যার শিকার হন। বিচার চলাকালে আজগার আলী মারা যাওয়ায় আট জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়। সাক্ষ্য প্রমাণে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক আসামি মোশারেফ হোসেন ও তাহের আলীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে কারাদন্ডের আদেশ দেন।
রায় শেষে দন্ডিতদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। একইসাথে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার অপর ৬ আসামিকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। খালাশ প্রাপ্তরা হলেন, একই গ্রামের ওয়াদুদ হোসেন, মওদুদ হোসেন, ইনছার আলী, শহিদুল ইসলাম, মেহের আলী ও নুর ইসলাম।
খুলনা গেজেট/ এসজেড