খুলনা, বাংলাদেশ | ২৯ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১৪ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  বাড্ডা থানার আলামিন হত্যা : আনিসুল হকের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
  ইসরায়েলি সেনা ক্যাম্পে হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলা, নিহত ৪

পাইকগাছায় বেড়েছে চোখ ওঠা রোগ, শিশুদের নিয়ে বিপাকে অভিভাবকরা

শেখ নাদীর শাহ্,পাইকগাছা

খুলনার পাইকগাছার ছড়িয়ে পড়েছে কনজাংটিভাইটিস বা চোখ ওঠা রোগ। শিশু, কিশোর থেকে শুরু করে যুবক,বৃদ্ধসহ সব বয়সী মানুষের মাঝে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ায় উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের মাঝে বিরাজ করছে সংক্রমিত হওয়ার আতঙ্ক।

চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় চোখ ওঠাকে কনজাংটিভাইটিস বলা হয়। গরম আর বর্ষা মৌসুমে চোখ ওঠার প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। চিকিৎসকদের মতে এটি ছোঁয়াচে রোগ হওয়ায় পরিবারের একজন সদস্যের হলে দ্রুত তা অন্য সকল সদস্যদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এ রোগটি মূলত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া এ দু’ কারণে হয়ে থাকে।

আক্রান্তদের যাদের চোখ জ্বালাপোড়ার সঙ্গে ময়লা আসে সেটাই হলো ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন। আর চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এটাকে ব্যাকটেরিয়াল কনজাংটিভাইটিস বলে। আর শুধু ভাইরাস জনিত ইনফেকশন হলে চোখ জ্বালাপোড়া করে এবং চোখের কোনা বহুলাং লাল হলে হয়ে যায়। এক্ষেত্রে চোখে হাত দেয়া যাবে না। চিকিৎসকদের মতে এ রাগে আক্রান্ত হলে এলার্জি হয় এমন খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো। পাশাপশি চোখ স্পর্শ করা যাবে না।

দেখা গেছে, উপজেলায় আক্রান্তদের একটি বড় অংশ শিশু । যার ফলে আক্রান্তরা স্কুলে যেতে পারছে না। অনেকেই আবার আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে স্কুলেই যেতে চাইছে না। ফলে রীতিমত বিপাকে পড়েছেন অভিভাবকরা।

এ ব্যাপারে উপজেলার কপিলমুনি এলাকার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সাবিহা নওশীন ইউশা জানায়, তার ক্লাসের একাধিক সহপাঠি চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। যাদের অনেকেই খালি চোখে স্কুলে আসছে। একাধিক শিক্ষকরাও আক্রান্ত হয়েছে। তবুও আক্রান্ত হওয়ার ভয় থাকলেও বাধ্য হয়েই স্কুলে যেতে হচ্ছে বলেও জানায় সে।

আক্রান্তদের অপর এক মুদি ব্যাবসায়ী প্রিতম চঞ্চল বিশ্বাস জানান, প্রথমে তার পরিবারের সদস্যরা আক্রান্ত হয়েছিলেন। রোগটি ছোঁয়াচে হওয়ায় তাদের মাধ্যমে তিনি আক্রান্ত হয়েছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কয়েকজন অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে চোখ ওঠা রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। বাচ্চাদের সহপাঠীদের থেকে শুরু করে শিক্ষক ও অভিভাবকরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে বাচ্চারা স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে। আবার সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না বলেও জানান কেউ কেউ। তবে সচেতন অভিভাবক মহল কাউকে আতঙ্কিত না হয়ে সকলকে সচেতনতা অবলম্বন করে চলার পরামর্শ দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নীতিশ চন্দ্র গোলদার বলেন, চোখ ওঠা রোগ নিয়ে মূলত উদ্বেগের কিছু নেই। কিছুদিন ঘরে থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিলেই ঠিক হয়ে যায়। তবে রোগটি ছোঁয়াচে, তাই যথা সম্ভব আইসোলেশনে থাকা ভালো। আর এ রোগে আক্রান্তদের লোকজন থেকে দূরে থাকতে বলা হচ্ছে। সানগ্লাস পরতে বলা হচ্ছে।

তিনি আক্রান্তদের চোখ ভেজা থাকলে চোখ টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে পেপারটি অবশ্যই ডাস্টবিনে ফেলা, ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চোখের অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার, আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত প্রসাধনসামগ্রী ও ব্যক্তিগত কাপড়চোপড় অন্য কাউকে ব্যবহার করতে না দেওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন।

চিকিৎসকদের পরামর্শে চললে আক্রান্ত ব্যাক্তি ৬ থেকে ৭ দিনেই ভালো হয়ে যায়। তাই আতঙ্কিত না হয়ে সকলকে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ প্রদান করেছেন এ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!