খুলনার পাইকগাছা উপজেলার লতার শংকরদানা কাঠের ব্রিজ থেকে তেঁতুলতলা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিঃ মিঃ ইটের সোলিং রাস্তাটি বর্তমানে চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিস্তির্ণ অঞ্চলের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় ইট উঠে বড় বড় খাদের সৃষ্টি হয়েছে। চলাচলের সুবিধার্থে স্থানীয়রা কোথাও কোথাও ইট বিছিয়ে উপযোগী করলেও দীর্ঘদিন সংষ্কারের অভাবে সম্প্রসারিত গর্তগুলি পরিণত হয়েছে একেকটি মরণ ফাঁদে। এমন পরিস্থিতিতে আসন্ন বর্ষা মৌসুমকে ঘিরে নানা আশংকা জেঁকে বসেছে জনপদের সাধারণ মানুষের মধ্যে।
সরেজমিনে স্থানীয়রা জানান, এ রাস্তা দিয়ে তেঁতুলতলা, শংকর দানা, গঙ্গার কোনা, পানা, হাড়িয়া, কাঠামারী, হালদারচক, বাহির বুনিয়া, হানি, মুনকিয়াসহ ১০ গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ চলাচল করে। তবে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষা মৌসুমে বিস্তির্ণ অঞ্চলের মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এ রাস্তাটি পানিতে তলিয়ে থাকে। সর্বশেষ গত বর্ষা মৌসুমে পানিতে তলিয়ে থাকায় রাস্তাটি চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বর্তমানে বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল ছাড়া কোনো যানবাহন এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পারছে না। তা-ও আবার অনেক যায়গায় নেমে ঠেলে পার হতে হয়।
শংকর দানার জ্যোতিষ মন্ডল জানান, দীর্ঘদিন সংষ্কারের অভাবে এবং গেল বছর বর্ষাকালে দীর্ঘ দিন পানিতে ডুবে থাকায় রাস্তাটির করুণ পরিস্থিতির জন্য দায়ী।
ছেলে-মেয়েদের হেঁটে স্কুলে যেতে হয়। বর্ষা মৌসুমে রাস্তায় পড়ে বই খাতা ভেঁজার ঘটনা নিত্য-নৈমিত্তিক। আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই রাস্তাটির আশু সংস্কারের জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।
তেঁতুলতলা গ্রামের কুমারেশ সরদার ও সুভাষ মনি জানান, এলাকার মানুষের চলাচলের জন্য ২০০৭ সালে লতা ইউপির সাবে চেয়ারম্যান দিবাকর বিশ্বাস রাস্তাটি পাকা করে দেন। তবে সুষ্ঠু তদারকির অভাবে এলাকার চিংড়ি ঘের মালিকেরা ঘেরের পানিতে বছরের একটা বড় অংশ জুড়ে রাস্তাটি পনিতে ডুবিয়ে রাখে। এর উপর সংষ্কার হয়না দীর্ঘ দিন। বিষয়টি নিয়ে তারা সাবেক চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মÐলকে জানালেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। রাস্তাটি নির্মাণের দীর্ঘ ১৫ বছরেও আর কেউ সংস্কার পর্যন্ত করেনি।
লতা ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান কাজল কান্তি বিশ্বাস জানান, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রথম ওই রাস্তার কাগজপত্র তৈরি করে উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তরে পাঠিয়েছেন। আরো আগেই রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে জানিয়ে, বিষয়টি নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
এব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান জানান, শংকর দানা থেকে গঙ্গারকোনা পর্যন্ত রাস্তাটির অবস্থা খুব খারাপ স্বীকার করে জানান, ‘রাস্তাটি প্রকল্প অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে আগামী তিন মাসের মধ্যে টেন্ডার হবে। টেন্ডারের ভিত্তিতে আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই রাস্তাটির কাজ শেষ হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।