খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ মাঘ, ১৪৩১ | ২১ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  নাটোরে লালপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৩ স্কুলশিক্ষার্থী নিহত
  নির্বাচনী অঙ্গনকে দুর্নীতিমুক্ত করতেই সংস্কারের প্রস্তাব : বদিউল আলম
  বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বৈঠকে যোগ দিতে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়নি, আটক দু’জন মুক্ত

নিজস্ব চিকিৎসক ছাড়াই খুলনায় চলছে খানজাহান আলী হাসপাতাল!

নিজস্ব প্রতিবেদক

খানজাহান আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় থানায় এখনও কোন মামলা হয়নি। আটক হওয়া হাসপাতালের দুই কর্মচারীকে সোমবার দুপুরের পর থানা হাজত থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। এশার নামাজের পর মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী ইলিয়াজ হোসেন ফকিরের নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এর আগে নিরাপত্তার স্বার্থে রাতে পুলিশ হাসপাতালের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

ইলিয়াজ হোসেন ফকির গত পাঁচ মাস যাবত হার্নিয়া রোগে ভুগছিলেন। কয়েকমাস ধরে গ্রাম্য ও স্থানীয় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন তিনি। কিন্তু তাদের দেওয়া চিকিৎসাপত্রে কাজ না হওয়ায় খানজাহান আলী হাসপাতালের নিয়োজিত দালাল ও মোহাম্মাদ নগর এলাকার ফার্মাসিস্ট মো: মনির ফাঁদে পা দেন তিনি। ওই হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এরপর তিনি ওই হাসপাতালে ভর্তি হন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে অস্ত্রোপচারের জন্য আবু নাসের হাসপাতালের ডেপুটি ডিরেক্টর ডা: এসএম মোর্শেদ ও অজ্ঞান করার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজের ডা. রেজাউল মোমিন শুভ এবং একজন ইর্ন্টানী চিকিৎসককে কল করে আনা হয় ওই হাসপাতালে। বিকেল চারটা ৫৫ মিনিটে অপারেশন করে ওই তিন ডাক্তার। পরে তার পরিবারের সদস্যদের জানানো হয় অপারেশন সফল হয়েছে। কিন্তু অস্ত্রোপচারের পর তড়িঘড়ি করে অপারেশন থিয়েটার ত্যাগ করেন ওই চিকিৎসকরা।

হাসপাতালের মালিক শেখ মনিরুজ্জামান খুলনা গেজেটকে বলেন, চার বছর যাবত হাসপাতালটি পরিচালনা করছেন। হাসপাতালের নিজস্ব কোন চিকিৎসক নেই। কোন রোগী আসলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। অস্ত্রপচারের সময় তিনি হাসপাতালে ছিলেন না। শুনেছেন দুপুর ১২ টার দিকে হার্নিয়া অপারেশনের জন্য দাকোপ উপজেলার জয়নগর গ্রামের ইলিয়াজ হোসেন ফকির তার মালিকাধীন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বিকেলে অপারেশনের পর ওই কক্ষে তার মৃত্যু হয়েছে। রোগীর মৃত্যু ও সংকটাপন্ন রেখে চিকিৎসকরা কিভাবে পালিয়ে গেলেন এর সদুত্তর তিনি দিতে পারেনি। চিকিৎসকদের সাথে তিনি এখনও পর্যন্ত যোগাযোগ করতে পারেননি।

খুলনায় ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, চিকিৎসক-ক্লিনিক মালিক লাপাত্তা (ভিডিও)

অপরদিকে সোমবার দুপুরের পর আটক হওয়া হাসপাতালের দুই কর্মচারীকে থানা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মুক্তির কারণ জানার জন্য একাধিকবার খুলনা থানার অফিসার ইনচার্জ হাসান আল মামুনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

এদিকে আজ দুপুর দু’টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত ইলিয়াজ হোসেন ফকিরের ময়না তদন্ত শেষ হয়। মর্গ থেকে বের হওয়ার পর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. লোপা সাহাকে মৃত্যুর কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। পরে জানানো হবে বলে তিনি কক্ষ ত্যাগ করেন।

ময়না তদন্ত শেষে লাশ গ্রহণ করে ইলিয়াজ হোসেন ফকিরের ভাগ্নে তরিকুল। লাশটি গ্রামের বাড়িতে পৌছা মাত্র হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতরণা হয়। এশার নামাজ শেষে জানাজার পর লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

খুলনা মহানগরীর ময়লাপোতা মোড়ে খানজাহান আলী হাসপাতালে রোগী মৃত্যুর ঘটনায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন, খুলনা মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দ।

ফাউন্ডেশনের খুলনা মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দ মনে করেন, চিকিৎসা ক্ষেত্রে এ ধরণের অবহেলা এবং অস্বাভাবিক মৃত্যু কোনোভাবে কাম্য নয়। এ ব্যাপারে ভবিষ্যতে সবাইকে অধিকতর আন্তরিক এবং সতর্ক হওয়া উচিৎ।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!