খুলনা, বাংলাদেশ | ২৫ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১০ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  পিরোজপুরে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে শিশুসহ ৮ জন নিহত

দিঘলিয়ার বারাকপুরে সফল উদ্যোক্তা রনি

একরামুল হোসেন লিপু, দিঘলিয়া

‘বাড়ছে সেবার বহর, গ্রাম হবে শহর’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর সারা দেশে প্রত্যেক ইউনিয়নে ১টি করে একযোগে সাড়ে ৪ হাজার ডিজিটাল সেন্টারের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্দেশ্য ছিলো গ্রাম অঞ্চলের জনগণের দোরগোড়ায় ডিজিটাল সেবা পৌছে দেওয়া।

এছাড়া সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিলো ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে। প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার তাঁর উদ্দেশ্য দুই’ই সফল হয়েছে।

বাংলাদেশ আজ ক্রমাম্বয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশে রুপান্তরিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে গ্রামাঞ্চলে ইউনিয়ন ভিত্তিক এ ডিজিটাল সেন্টারগুলো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গ্রামের সাধারণ মানুষ এ সকল সেন্টারগুলো থেকে কাঙ্ক্ষিত সেবা পেয়ে উৎফুল্ল হচ্ছে। এছাড়া এসকল ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা হিসেবে সারা দেশে হাজার হাজার শিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

এমনই একজন উদ্যোক্তা মোঃ আ. ওয়াহিদ মোড়ল। যিনি রনি নামেই এলাকায় সমাধিক পরিচিত। খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর ইউনিয়নের বারাকপুর গ্রামের বাসিন্দা। এইচ এস সি পাশ করার পর সংসারে কিছুটা স্বচ্ছলতা আনার জন্য চাকুরী খুঁজতে শুরু করেন। অনেক চেষ্টা করেও চাকুরীর কোন ব্যবস্থা করতে না পেরে হতাশায় ভুগতে শুরু করেন। ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী একযোগে সারা দেশে প্রত্যেক ইউনিয়নে ১টি করে ডিজিটাল সেন্টার উদ্বোধনের পর রনি নিজেকে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করাতে তৎপরতা শুরু করেন এবং ২০১২ সালের ২৭ মার্চ থেকে সে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু করেন।

ভৈরব নদীর কূল ঘেঁষে গড়ে ওঠা বারাকপুর বাজারে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে ডিজিটাল সেন্টারের কার্যক্রম শুরু করেন। বর্তমানে রনি বারাকপুর বাজারের একজন সফল জনপ্রিয় ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত। প্রতিদিন অত্র ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে ৩০ থেকে ৩৫ জন সেবাগ্রহীতা তার সেন্টারের সেবা নিতে আসেন। প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত আগত সেবাগ্রহীতাদের কাঙ্খিত সেবা প্রদান করে চলেছেন।

ডিজিটাল সেবা ছাড়াও তিনি এ সেন্টার থেকে ফ্রি অক্সিজেন সেবা প্রদান করে থাকেন। ডিজিটাল সেবা প্রদানের পাশাপাশি তিনি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। তিনি চেষ্টা করছেন এলাকার আরো অনেক শিক্ষিত বেকার যুবকদের এ জাতীয় কাজে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করানোর।

ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা হিসেবে রনি ২০১৮ সালে খুলনা জেলার শ্রেষ্ঠ ডিজিটাল উদ্যোক্তা হিসেবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে পুরস্কৃত হন।

বারাকপুর বাজারের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা ওয়াহিদ মোড়ল রনি ডিজিটাল বাংলাদেশ ই সেবা- ক্যাম্পেইন এর মাধ্যমে সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে ৫৬ প্রকার সেবা প্রদান করে থাকেন। সেবা গুলোর মধ্যে রয়েছে পাসপোর্টের আবেদন ও ফি জমাপ্রদান, বিদ্যুৎ বিল জমাদান, জমির পর্চা, ই-নামজারি, মুক্তপাঠ অনলাইন কোর্স, এজেন্ট ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিং গ্রাহকের একাউন্ট খেলা, বিদেশ হতে প্রেরিত রেমিটেন্স বিতরণ, ডিপিএস একাউন্ট খোলা, নগদ টাকা জমা ও উত্তোলণ, মোবাইল ব্যাংকিং, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, ই-টিকেটিং সার্ভিস, একশপের মাধ্যমে অনলাইনে নেচাকেনা, অনলাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের আবেদন ফি জমাদান, অনলাইনে বিভিন্ন সরাকারি ফর্ম পূরণ, অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন, জাতীয় পরিচয় পত্রের অনলাইন কপি প্রদান, চারিত্রিক সনদের আবেদন, নাগরিক সনদের আবেদন, ওয়ারিশ সনদের আবেদন, বিদেশ গমনেচ্ছুক কর্মীদের অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন, ই-টিন সার্ভিস, ট্রেড লাইসেন্স, সরাকারি -বেসরকারি ত্রাণ, অনলাইনে জিডি, অনলাইনে জন্মনিবন্ধন, ভিডিও রেকর্ডিং, হজ্জ প্রাক নিবন্ধন, মেডিকেল ভিসা ডাক্তারের এপোয়েনমেন্ট, ফটোকপি, স্কানিং, লেমিনেটিং, ক্লিয়ারিং চেক গ্রহণ, ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডের আবেদন গ্রহণ, অনলাইনে অন্যান্য ব্যাংকের হিসাবে টাকা গ্রহণ, ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবার আবেদন গ্রহণ, ফান্ড ট্যান্সফার,হোল্ডিন কর গ্রহণ, অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স লার্নার আবেদন, অনলাইনে শিক্ষকদের পেনশন আবেদন, অনলাইনে চাকুরীর আবেদন, ডাক্তার বাড়ি (ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা প্লাটফর্ম), ভিসা চেকিং, জাতীয় তথ্য বাতায়ন থেকে সরাকারি তথ্য প্রদান, সরাকারি নোটিশ বিক্রয়, কৃষি তথ্য সেবা, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন, বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফল প্রদান, প্রত্যয়ন প্রস্তুুত, ভাতার আবেদন (সমাজসেবা অধিদফতর), প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল হতে প্রাপ্ত আর্থিক অনুদানের চেক উত্তোলনের আবেদন, অনলাইনে পণ্য ক্রয় সেবা, ইন্টারনেট /ব্রাউজিং ই-মেইল, অনলাইনে ফরম পূরণ, ই-পুজি ও হোম ডেলিভারি সার্ভিস।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!