ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে উপকূলীয় উপজেলা দাকোপের কামিনিবাসীয়ায় ভেঙে গেছে বাঁধ। আতংকিত এলাকাসী। জোয়ারের তোড়ে বাঁধ ছাপিয়ে চালনা পৌরসদরসহ বেশ কিছু এলাকায় পানি ঢুকে বসত ভিটে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিমজ্জিত হয়েছে। উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার মানুষ ব্যাপক ক্ষতির মুখে। এলাকাবাসী এই বিপর্যয়ের জন্য পাউবোর উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন।
স্থানীয় নদ নদীতে স্বাভাবিক জোয়ার অপেক্ষা আনুমানিক ৩ ফুট পানি বৃদ্ধি পায়। চারিপাশে নদী বেষ্টিত উপজেলার ৯ টি ইউনিয়ন ও চালনা পৌর এলাকার ১০/১২ টি স্থানে ওয়াপদা বাঁধ ছাপিয়ে প্রত্যন্ত এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ঢাকী নদীর পানির চাপে তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের কামিনিবাসিয়া সোনার বাংলা কলেজ এলাকার বেড়ীবাঁধ ২৬ মে বুধবার দুপুরের জোয়ারে ভেঙে যায়। ফলে তিলডাঙ্গা ইউনিয়নসহ ৩১ নং পোল্ডার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
উপজেলার সুতারখালী ইউনিয়নে কালাবগী, নলিয়ান, কামার খোলা ইউনিয়নে কালিনগর বাজার, লাউডোব ইউনিয়নে ভেড়িবাঁধের বাহিরে আসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের বসতঘর পানিতে নিমজ্জিত, বটবুনিয়া বাজার, ঝালবুনিয়া, পানখালী জাবেরের খেয়াঘাট, পানখালী পুরাতন ফেরী ঘাট, খোনা, লক্ষিখোলা পিচের মাথা, চালনা পৌরসভার গোড়কাটি এবং খলিষা এলাকার বাঁধ ছাপিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে যায়।
এর মধ্যে গোড়কাটি, পুরাতন ফেরীঘাটসহ বেশ কয়েকটি এলাকার বেড়ীবাধ অত্যান্ত ঝুকির মুখে আছে। কালাবগী ফকির কোনা, ঝুলনপাড়া, নলিয়ান বাজার, পানখালী জাবেরের খেয়াঘাট, চালনা পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডসহ বেশ কিছু এলাকায় ওয়াপদা বেড়ীবাঁধের বাইরে বসবাসকারী প্রায় ৫ হাজার মানুষ পানিতে পুরোপুরি নিমজ্জিত।
দাকোপ উপজেলা চেয়ারম্যান মুনসুর আলী খান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিন্টু বিশ্বাস, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্বশেখ আবুল হোসেন, চালনা পৌর মেয়র সনত কুমার বিশ্বাসজিত এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শেখ আব্দুল কাদের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
উপজেলা প্রশাসন তাৎক্ষনিক ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরন করেছেন। উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং ইউনিয়ন পরিষদের তত্বাবধানে ঝুঁকিপূর্ন এলাকাসহ ভেঙে যাওয়া বাঁধ নির্মানের কাজ চলছে বলে জানা গেছে। উপজেলার কামিনিবাসিয়া এবং পানখালী এলাকায় প্রায় ৮ শ’ শ্রমিক কাজ করছে।
এ ছাড়া অন্যান্য এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদের তত্বাবধানে মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ রক্ষার জন্য প্রানপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। চলমান পরিস্থিতিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কিছু জিও ব্যাগ দিয়ে দায় সেরেছেন বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পানি উন্নয়ন বোর্ড দীর্ঘদিন ঝুঁকিতে থাকা এ সকল বাঁধ নির্মাণে এগিয়ে না আসায় এ অবস্থা। চলমান পরিস্থিতির জন্য তাদের উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন তারা। এ ব্যাপারে পাউবোর দায়িত্বশীল পর্যায়ের কর্মকতারা বলেন, বাঁধ নির্মাণে বরাদ্দ না থাকায় তাদের কিছুই করার ছিলনা বলে জানান।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি