খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৮৩
  ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে কোনো ধরণের হামলার শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

 তালের চারা রোপণ করে চিত্ত রঞ্জনের দৃষ্টান্ত স্থাপন

অভয়নগর  প্রতিনিধি

অভয়নগরের বিভিন্ন সড়কের পাশে ৫৫ হাজার তালের চারা রোপণ করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন উপজেলার ধোপাদী গ্রামের এক হতদরিদ্র কৃষক। দেশে বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে তালগাছ লাগানো নিয়ে সম্প্রতি বেশ আলোচনা হলেও ১২ বছর আগে নীরবে-নিভৃতে এ কাজ শুরু করেছিলেন যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার ধোপাদী গ্রামের শিশুবর দাসের ছেলে তালগাছপ্রেমী চিত্ত রঞ্জন দাস। অন্যদের ফেলা দেওয়া তালের বীজ সংগ্রহ করে নিজ খরচে এ পর্যন্ত ৫৫ হাজার তালের চারা লাগিয়েছেন তিনি।

বিভিন্নভাবে এই বীজ নষ্ট হয়েছে, নষ্ট হয়েছে চারাও। এমনকি গাছও নষ্ট হয়েছে কিন্তু হাল ছাড়েননি চিত্ত রঞ্জন দাস। কৃষি কাজের পাশাপাশি তালগাছ রোপন ও তার রক্ষণাবেক্ষণ করেই তিনি পরম শান্তি পান বলে জানান। ১২ বছর আগে তার রোপনকৃত তালের গাছ এখন অভয়নগরের বিভিন্ন সড়কের দু’ধারে দৃশ্যমান। বজ্রনিরোধক পরিবেশবান্ধব এ গাছের চারা রোপণ ও পরিচর্যা করে ইতিমধ্যে এলাকাবাসীর প্রসংসা কুড়িয়েছেন। ধোপাদী গ্রামের সড়কগুলোতে গেলে সারি সারি তালগাছ নজর কাড়বে যে কোন প্রকৃতিপ্রেমীর। ধোপাদী, বুইকারা, সরখোলার পথজুড়ে আছে চিত্ত রঞ্জনের লাগানো হাজার হাজার তালগাছ।

চিত্ত রঞ্জন দাস জানান, এখন অসংখ্য তালগাছ আছে যেগুলো বড় হয়েছে কিন্তু বিভিন্ন কারণে অনেক গাছই বড় হতে পারেনি। গাছ একটু বড় হলেই অনেকে ডাল-পাতা ছেঁটে নিয়ে যায়। তালপাখা বানানোর জন্য একশ্রেণির অসাধু ব্যক্তি পাতা কেটে নিয়ে যায়। আমি একদিন থাকবো না কিন্তু এই তালের চারা আমার স্মৃতি বহন করবে শত শত বছর। মুলত তাল গাছের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা থেকেই এ গাছ লাগিয়ে তার পরিচর্যা করে আসছি। একটি তালগাছ পরিপক্ব হতে মূলত ২০ বছর সময় নেয়। এখন থেকে ধাপে ধাপে হয়তো অনেক গাছেই ফল আসবে। গাছের ছায়ায় ক্লান্ত পথিক বিশ্রাম নিবে, বজ্রপাত ঠেকাবে।

ধোপাদী দক্ষিন পাড়ার একাধিক কৃষক জানান, আমরা বিলে ধান চাষাবাদ করি, ঘাস কেটে বাড়ির ফেরার পথে ক্লান্ত হয়ে পড়লে চিত্ত রঞ্জনের লাগানো তালগাছের নিচে বসে বিশ্রাম নিই।

রবিউল নামের এক পথচারী জানান, সড়কের পাশ ধরে সারি সারি তালগাছ দেখে সত্যি অনেক ভালো লাগে। এসময় দরিদ্র কৃষক চিত্ত রঞ্জনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান অনেকে। পরিবেশ বন্ধু চিত্ত রঞ্জনের কৃত্তি এলাকাবাসীর নজর কাড়লেও সরকারী বা বেসরকারী কোন প্রতিষ্ঠান থেকে এখনো পাননি নূন্যতম কোন স্বীকৃতি। তালের চারা সংরক্ষণ ও পরিচর্যায় সরকারী সহযোগিতার পাশাপাশি ভালো কাজের স্বীকৃতি চান এলাকাবাসী।

নওয়াপাড়া পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সলর তালিম হোসেন জানান, চিত্ত রঞ্জন দাস নিজ উদ্যোগে অভয়নগরের বিভিন্ন সড়কে অসংখ্য তালের চারা নিজ রোপণ করেছেন, যা এখন দৃশ্যমান। ভবিষ্যতে এ তালগাছগুলো দেশের সম্পদ হয়ে থাকবে, তাকে এলাকাবীর পক্ষ থেকে আমি ধন্যবাদ জানায়।

উপজেলা কৃষি অফিসার লাভলী খাতুন বলেন, আমি এক মাস হল এ উপজেলায় যোগদান করেছি।তার বিষয় টি তে আগ্রহ বাড়ানোর জন্য সহযোগিতা করা হবে।

খুলনা গেজেট/ এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!