ওপেনার তামিম ইকবাল বিশ্বকাপে পাঁচটির বেশি ম্যাচ খেলবেন না, এমন তথ্য যারা ছড়িয়েছে তাদের বিষয়ে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক উইকেটরক্ষক ব্যাটার খালেদ মাসুদ পাইলট।
বিশ্বকাপ স্কোয়াড থেকে বাদ পড়া তামিম ইকবালের বুধবার বিকেলের ভিডিওবার্তার পরিপ্রেক্ষিতে রাতে ফেসবুক লাইভে আসনে জাতীয় দলের সাবেক এ ক্রিকেটার।
ওই ভিডিওবার্তায় তামিম বলেন, ‘আমি কোনো সময় কোনো মুহূর্তে বলি নাই যে, আমি পাঁচটা ম্যাচের বেশি খেলতে পারব না। এ কথা কোনো সময় হয় নাই। এটা মিথ্যা ও ভুল কথা। কে করছে এটা আমি জানি না। এটা মিথ্যা কথা।’
তামিম বলেন, ‘আমি বলেছিলাম যে দেখেন, আমার বডিটা এ রকমই থাকবে। এটা মাথায় রেখে সিলেক্ট করবেন।’
এমন বাস্তবতায় পাইলট বলেন, ‘তামিমের যেটা আমি দেখলাম একটা, সে বেসিক্যালি একটা ভিডিওবার্তা দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। তো আমার মনে হয় যে, সে কিন্তু ক্লিয়ার করে দিয়েছে। সে কিন্তু বলে নাই যে, আমি পাঁচটা ম্যাচ খেলব না। তার মানে বাংলাদেশ টিম থেকে বোর্ড যদি চায়, ইচ্ছা করলে তদন্ত করে বের করে ফেলতে পারবে কারা এই নিউজটা বের করেছে। বিকজ ক্রিকেট বোর্ডের কিছু মানুষ আছে যারা সোশ্যাল মিডিয়াকে পোষে। তারা এই সোশ্যাল মিডিয়াগুলোকে ইনফরমেশন দিয়েছে যে, বেসিক্যালি তামিমকে খারাপ করার জন্য…কিছু লোক আছে যারা…আমি সমস্ত ক্রিকেট বোর্ডের লোককে ঢালাওভাবে বলব না, একজন-দুইজন মানুষ আছেন যারা ক্রিকেট বোর্ডের ভাইরাস আমার কাছে মনে হয়; ক্রিকেট বোর্ডের ভাইরাস। তারাই এই জিনিসটা তৈরি করছে।
‘আমার মনে হয় অনেক ডিরেক্টর আছেন, তারা সবাই অনেক সম্মানিত ব্যক্তি আছেন। তারা হয়তো ইনভলভডই (জড়িত) না এর সাথে, কিন্তু দুই-একজন মানুষ আছেন যারা পুরা এই নাটকটা বানাচ্ছেন। পুরা ইন্ডিয়ান সিরিয়ালগুলা যেমন নাটক হয়, এ রকম একটা নাটক বানাচ্ছেন। তো এই নাটকটা আসলে ক্রিকেটর জন্য ভালো না। এটা খুবই দুঃখজনক এবং আমি মনে করি যে, আমাদের কাছে এ রকম কালচার সাধারণ মানুষ আশা করে না।’
তামিম ও সাকিবের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে বলে মনে করেন তাদের অগ্রজ পাইলট।
তার ভাষ্য, ‘বিশেষ করে আপনি যেভাবে তামিমকে এক ধরনের পচানো হচ্ছে পাঁচটা ম্যাচ খেলার জন্য সে হয়তো বলেছে যে, পাঁচটা ম্যাচ পরে আর খেলবে না। আবার এদিক দিয়ে সাকিবকে এক ধরনের ভাবে পচানো হচ্ছে যে, সাকিব এই সমস্ত দায়িত্বে ছিলেন।
‘আসলে কি তাই হইছে? তো সাধারণ মানুষ কিন্তু আসলে বোকা সাজছে এই সোশ্যাল মিডিয়ার ওজনে। সোশ্যাল মিডিয়াতে সারাক্ষণ আপনার ফেসবুকের মধ্যে থাকছেই। সোশ্যাল মিডিয়াতে পজিটিভকে নেগেটিভ, নেগেটিভকে পজিটিভ বানিয়ে প্লেয়াররা এর মধ্যে কিন্তু দেখা গেল যে, প্লেয়ারদেরকে ভিলেন বানানো হচ্ছে।’
ভিডিওবার্তায় ব্যাটিংয়ের অর্ডার পরিবর্তন নিয়ে তামিমের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পাইলট বলেন, ‘আপনারা যদি দেখেন, তামিম কিন্তু একটা কথা বলেছে। কোনো একজন তাকে বোর্ডের অফিশিয়াল নাকি টিমের ম্যানেজমেন্ট ফোন দিয়েছেন, যে কিনা বলেছেন যে, তুমি প্রথম ম্যাচ, আফগানিস্তানের সাথে ম্যাচটা খেলবা না ওপেনিং করবা না, তুমি মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করবা। কোন কারণে তাকে বলতে পারে, বলেন তো আপনি যে, ওপেনিং ব্যাটিং করবা না তামিম? বিকজ একটা প্লেয়ার সারা জীবন ওপেন করে আসছে এবং তাকে জানেন যে, সে ওপেনার বাংলাদেশ টিমের। তাকে কী করে এ রকম একটা তাকে বলতে পারে? আমি জানি না কী প্ল্যান।
‘তার মানে বোঝাই যাচ্ছে যে, তামিমকে আপনি আউট করতে চাচ্ছেন। তামিমকে বাদ দিয়ে তুমি নিচে খেলো, ওপরে একটা ওপেনারকে আমি ট্রাই করব। ওখানে ও পারফর্ম করলে তুমি সাইজ। তো এ রকমই কথা। আমার কাছে মনে হয় খুবই দুঃখজনক।’
তামিম পাঁচটির বেশি ম্যাচ খেলতে পারবেন না, এ রকম তথ্য যারা ছড়িয়েছে তাদের বিষয়ে তদন্ত চেয়েছেন জাতীয় দলের আলোচিত উইকেটরক্ষক পাইলট।
তিনি বলেন, ‘টিম বাংলাদেশ অনেক ভালো করুক, আমরা সেই দোয়া করি। দিনশেষে কিন্তু আমাদেরই একটা ইমেজ, কিন্তু আমি বলব যে, এটার তদন্ত অবশ্যই করা উচিত। আমি জানি ক্রিকেট বোর্ড তদন্ত করবে না। বিকজ ক্রিকেট বোর্ডের বড় পাওয়ারফুল মানুষরা এর মধ্যে জড়িত, কিন্তু কারা কারা সোশ্যাল মিডিয়াতে এ ধরনের নেগেটিভ কথা বলেছে, সোশ্যাল মিডিয়াকেও ধরা উচিত, তদন্ত করা উচিত, কার কাছ থেকে এই ইনফরমেশনটা পেয়ে তারা এই নেগেটিভ নিউজগুলা দিয়েছে। এটা কোনো ঘটনাই না…মিথ্যাকে সত্যি বানিয়েছে। আমার মনে হয় ট্র্যাক করলেই ধরলেই কারা কারা ইনভলভ, কে কে নিউজটা পাস করেছে বেরিয়ে আসবে যদি ক্রিকেট বোর্ড ধরতে চায়। তাহলে বেরিয়ে আসবে আসলে এই ভিতরের গুটিচালকটা কে বা কারা।
‘আমি হয়তো জানি অনেক কিছুই। আমি বলব না। বিকজ হচ্ছে খুবই দুঃখজনক আমার কাছে মনে হয় যে, লজ্জাজনক ব্যাপার। আমরা ক্রিকেট খেলেছি। ক্রিকেটের সার্কেলেরই কিছু মানুষজনের মধ্যে অনেক জড়িত আছে, কিন্তু এই মানুষগুলোকে আমার কাছে খুবই ভাইরাস মনে হয় যে, এরা ভয়ানক। আপনি কখন কোন টিম বানাবে, কাউকে বুঝতে দিবে না কী বানাবে না বানাবে, এর মধ্যে অনেক কিছু ইন্টারেস্ট আছে। তো সেই ইন্টারেস্টটা যেন বাংলাদেশের স্বার্থ নষ্ট করে যেন তার ইন্ডিভিজ্যুয়াল ইন্টারেস্টটা যেন না থাকে। সেটা আমি বিশেষভাবে অনুরোধ করব ক্রিকেট বোর্ডকে এবং সংশ্লিষ্ট ক্রিকেট বোর্ডের আশপাশে যারা আছেন অবশ্যই এটা তদন্ত করা উচিত কারা এই জিনিসটা লিক আউট করেছে যে, তামিম পাঁচটা ম্যাচের বেশি খেলতে পারবে না অথবা সাকিব বলেছে, তামিমকে নিব না, এই করব না, এই করব না। এই যে কথাগুলো বলেছে, কারা বের করেছে বাইর করা উচিত এবং জেনুইন তদন্ত করা উচিত।’
খুলনা গেজেট/এনএম