জমে উঠেছে খুলনার জোড়াগেট পশুর হাট। গত দু’দিনের তুলনায় শুক্রবার হাটে ব্যাপক পশুর আমদানি হয়েছে। বড় সাইজের গরুর দাম কমলেও ছোট আকৃতির দাম একই রয়েছে। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় ক্রেতাদের সমাগম ছিল বেশ। তবে এবার হাটে পুরুষদের পাশাপাশি নারী ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়।
শুক্রবার রাতে পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়েছে বিভিন্ন আকৃতির গরু ও ছাগল। হাটের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য বাড়ানো হয়েছে প্রশাসনের নজরদারি। জাল নোট শনাক্তকরণে নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।
চলছে হাকডাক ও ইউটিউবারদের ভিডিও। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় বিভিন্ন পেশার মানুষের উপস্থিতির পাশাপাশি দেখা গেছে নারী ক্রেতাদেরও।
কথা হয় মুজগুন্নী আবাসিক এলাকার মো: ফরিদ খা’র সাথে। তিনি বলেন, গত দু’দিনের তুলনায় আজ হাটে ব্যাপক পশুর আমদানি হয়েছে। কমতে শুরু করেছে বড় আকৃতির গরুর দাম। কিন্তু ছোট সাইজেরটা এখনো কমেনি। আসরের নামাজের পরে পশু কিনতে এ হাটে এসেছেন, কিন্তু দাম দরে পড়তা না হওয়ায় গরু কিনতে পারেনি। কারণ গত বছরের তুলনায় এবার দাম একটু বেশী।
আব্দুস সালাম শিকদার নগরীর ফারাজী পাড়ার বাসিন্দা। গত দু’দিন ধরে কোরবানির পশু কিনতে খুলনাসহ আশপাশের হাটগুলোতে ঘুরছেন। কিন্তু সাধ্যের মধ্যে মেলাতে পারেননি। শুক্রবার জেলখানা নদীর ওপার আমতলা হাটে গিয়েছিলেন। সেখানেও পড়তা না হওয়ায় জোড়াগেটের হাটে এসেছেন। এখানে দাম বেশী হওয়ার কারণে বাড়ি ফিরে গেছেন।
মো: রেজাউল করিম কোরবানির পশু কিনতে জোড়াগেটের হাটে তিনদিন ধরে ঘুরছেন। তিনি বলেন, বড় গরুগুলোর দাম আজ রাত থেকে কমতে শুরু করেছে। কিন্তু কমেনি ছোট সাইজের পশুর দাম। রাতের বাজার দরটা দেখবেন। না হলে আগামীকাল শনিবার গরু কিনবেন।
পূর্ব বানিয়াখামার এলাকার বাসিন্দা হাসান বাপ্পি বলেন, ব্যবসা এখন গরুর মালিকদের হাতে নেই। হাত বদল হয়ে ফড়িয়া ও দালাল চক্রের হাতে চলে গেছে। নগরীর কয়েকজন কসাইকে হাটে গরু বিক্রি করতে দেখেছেন। তিনি আজ দুপুরে গরু কিনতে রূপসা উপজেলার আমতলা হাটে গিয়েছেন। সেখানে দাম বেশী থাকায় সন্ধ্যার দিকে জোড়াগেট আসেন। ৮০ হাজার টাকার গরু ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় কিনেছেন। ছোট গরুর দাম বেশী বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান।
পুরুষদের পাশাপাশি নারী ক্রেতাদের উপস্থিতি দেখা গেছে হাটে। খুলনার বাসিন্দা নাসরিন। পারিবারিক অবস্থান ঢাকার উত্তরায়। পরিবারের প্রধান অসুস্থ থাকার কারণে তিনি গরু কিনতে হাটে এসেছেন। এবার হাটে গরুর দাম তুলনামূলকভাবে বেশী বলে তার অভিমত।
বিক্রেতা সোহাগ বলেন, আজ বিভিন্নস্থানের হাট ভেঙ্গে জোড়াগেটমুখী হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বড় সাইজের গরুর দাম কমছে। কিছু কমেছে ছোট আকৃতির পশুর দামও। ১৭ টি গরু নড়াইলের কালিয়া থেকে এনেছেন তিনি। তার থেকে ১৪ টি বিক্রি হয়ে গেছে। দাম পড়তির কারণে বাকী গরুগুলোকে নিয়ে তাকে বেশ চিন্তিত থাকতে দেখা যায়।
জোড়াগেট পশুর হাটের আহবায়ক মো: শামসুজ্জামান মিয়া স্বপন বলেন, ব্যাপক পশুর আমদানি হয়েছে। ক্রেতাদের ভিড়ও বেড়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় বিক্রিও বেড়েছে। আজ ১ হাজার ৩৯১ টি গরু ও ৪০৫ টি ছাগল বিক্রি হয়েছে। হাসিল আদায় হয়েছে ৬৪ লাখ ৭১ হাজার ৩০৫ টাকা। তিনি আরও বলেন, ঈদের বাকী আছে আর একদিন। শনিবার বিক্রি ব্যাপক বাড়বে বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান।