চৌগাছায় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিন শিক্ষকসহ উপজেলায় মোট ছয় শিক্ষক জাল সার্টিফিকেটে বছরের পর বছর ধরে চাকরি করছেন বলে জানা গেছে। ১৮ মে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ হতে এ ধরনের একটি প্রজ্ঞাপন জারি করলে বিষয়টি নিয়ে চৌগাছায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। ছয় শিক্ষকের মধ্যে দুইজন ননএমপিও আর বাকি চারজন এমপিওভুক্তক। এই চার শিক্ষক বছরের পর বছর ধরে জাল সনদে চাকরি করে প্রায় ৪৪ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে প্রায় ৬৭৮ শিক্ষক জাল সনদে বছরের পর বছর চাকরি করে আসছেন। যাদের এমপিও আছে তারা রীতিমত মাস গেলে বেতন তুলছেন আর ননএমপিও ভুক্ত শিক্ষকরা বেতনের অপেক্ষায় আছেন।
সম্প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ দেশব্যাপী এক জরিপ করলে এই সতত্যা প্রকাশ পাই। তারই ধারাবাহিকতায় ১৮ মে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সহকারী সচিব মোঃ সেলিম শিকদার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন স্যোসাল মিডিয়াতে প্রকাশ পেলে চৌগাছাতে শুরু হয় তোলপাড়।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ আছে এ পর্যন্ত যে শিক্ষক যত বেতন তুলেছেন তা ফেরত দিতে হবে। তাতে চৌগাছার এমপিওভুক্ত চার শিক্ষককে মোট ৪৩ লাখ ৮৬ হাজার ৮২২ টাকা ফেরত দিতে হবে।
চৌগাছায় জাল সনদে চাকরি করা শিক্ষকদের মধ্যে একটি বিদ্যালয়ে আছেন তিনজন শিক্ষক। তারা হলেন, উপজেলার গরীবপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মোছাঃ নাজমা খাতুন ( সহকারী শিক্ষক সমাজ) তার ইনডেক্স নং ১০৪০৫৬৩ ও প্রজ্ঞাপনে সিরিয়াল নং ৩৭৮, মোছাঃ রোজীনা খাতুন (সহকারী শিক্ষক সমাজ) তার ইনডেক্স নং ১০৬৪৫৬৩, সিরিয়াল নং ৩৮৮ এবং জ্যেতিন্দ্র নাথ মন্ডল (সহকারী শিক্ষক হিন্দু ধর্ম) ননএমপিও তার সিরিয়াল নং ৩৮৯।
অপর তিন শিক্ষক হলেন, উপজেলার মাকাপুর বল্লভপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মোছাঃ মুসলিমা খাতুন (সহকারী শিক্ষক সমাজ) ননএমপিও, তার সিরিয়াল নং ৩৮৬, পলুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শফিকুল ইসলাম (সহকারী শিক্ষক কম্পিউটার) তার ইনডেক্স নং ১০৪২২৯৬, সিরিয়াল নং ৪৬৬ এবং চাঁদপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তানিয়া আক্তার (সহকারী শিক্ষক) ইনডেক্স নং ১০৬২১৮৬ ও সিরিয়াল নাম্বার ৪৯৮।
চাঁদপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের খবর আমরা শুনেছি। তবে এখনও কোন চিঠি পত্র পাইনি। বিষয়টি জানার পর আমি শিক্ষক তানিয়া আক্তারের কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জাল সনদে চাকরি করার প্রশ্নই উঠেনা বলে জানিয়েছেন। তানিয়া আক্তার ২০১১ সাল হতে এই বিদ্যালয়ে চাকরি করছেন।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম মোঃ রফিকুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অফিসের কাজে জেলা শহরে আছি।এ ধরনের কোন চিঠি পাইনি, বিস্তারিত আগামী রবিবার জানানো যাবে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মাহফুজুল হোসেন প্রজ্ঞাপনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সারা দেশে প্রায় ৭শ শিক্ষককে চিহিৃত করা হয়েছে।যশোরে যারা এই তালিকায় আছেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে, প্রমানিত হলে সমুদয় বেতন সরকারী কোষাগারে জমা দিতে হবে। তবে জাল সনদের বিষয়টি নিয়ে কোন শিক্ষক চ্যালঞ্জ করেন তাহলে সেটি অধিকতর যাচাই বাছাই করে দেখা হবে।
খুলনা গেজেট/ এসজেড