যশোরের চৌগাছায় ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা করলো বাবা, মা ও ছোট ভাই। এ ঘটনায় ছোট ভাই ইসরাফিল হোসেন মনি (১৭), বাবা আয়তাল হক (৫০) ও মা সালেহা বেগমকে (৪৫) আটক করেছে পুলিশ।
নিহত রেজাউল ইসলাম সাইমন উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের বড়খানপুর ঢাকাপাড়া গ্রামের আয়তাল হকের ছেলে। নিহতের দেড় বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
সোমবার (৪ মার্চ) নিজ বাড়িতে মারপিটের এ ঘটনা ঘটে। বিকেলে পাশ্ববর্তী কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে সেখানে মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাত ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের স্ত্রী সুমি খাতুন ও চাচা আয়নাল হক জানান, সোমবার গুড়িগুড়ি বৃষ্টি শুরু হলে খোলা জায়গা থেকে জ্বালানী কাঠ ভেজা থেকে রক্ষায় ঘরে তোলা নিয়ে নিহত রেজাউলের স্ত্রী সুমি খাতুন ও শ্বশুড়ি সালেহা বেগমের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হয়। এ গোলযোগকে কেন্দ্র করে নিহত রেজাউল ইসলাম সাইমন ও তার আপন ছোট ভাই ইসরাফিল ইসলাম মনির মাঝে হাতাহাতি শুরু হয়।
একপর্যায়ে ছোট ভাই ইসরাফিল মনি, মা সালেহা বেগম ও বাবা আয়তাল হক একসাথে মিলে রেজাউলকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে। এতে রেজাউল অসুস্থ হয়ে পড়লে বড়খানপুর বাজারের গ্রাম্য চিকিৎসক আব্দুস সালামকে ডেকে এনে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে রেজাউলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বিকেল ৫টার দিকে তাকে ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাত ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
এ সংবাদ পেয়ে চৌগাছা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রেজাউলের পিতা আয়তাল হক এবং কোটচাঁদপুর থানা পুলিশের মাধ্যমে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রেজাউলের মা সালেহা বেগমকে আটক করা হয়। তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। স্বীকারোক্তি ও বাবা-মায়ের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতের হত্যায় প্রধান অভিযুক্ত ছোটভাই ইসরাফিল হোসেন মনিকে চৌগাছা কামিল মাদরাসা পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে গ্রেফতার করা হয়।
ইসরাফিল উপজেলার গুয়াতলী মাকানুচ্ছুন্নাহ দাখিল মাদরাসা থেকে দাখিল পরীক্ষার্থী হিসেবে চৌগাছা কামিল মাদরাসা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছিলো। পরীক্ষা কেন্দ্রে পুলিশ অপেক্ষা করে পরীক্ষা শেষ হলে দুপুর একটায় তাকে গ্রেফতার করে।
চৌগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত নিহতের ছোট ভাই ইসরাফিল, বাবা আয়তাল হক ও মা সালেহা বেগমকে আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মৃতদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেডি