যশোরের চৌগাছার কৃষকরা চলতি মৌসুমে ঝিঙ্গা চাষ করে ব্যাপক লাভবান হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বিশেষ করে লালতীর কোম্পানীর ঝিঙ্গা চাষে কৃষক অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে। ঝিঙ্গা চাষে তুলনামূলক ব্যয় কম আয় বেশি। তাই চাষিরা ঝিঙ্গা চাষে বেশ মনোযোগী হয়ে উঠেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলাতে ৩৫ হেক্টর জমিতে নানা জাতের ঝিঙ্গা চাষ হয়েছে। সকল ইউনিয়নে কমবেশি ঝিঙ্গা চাষ হলেও হাকিমপুর, পাতিবিলা, জগদীশপুর, নারায়নপুর, স্বরুপদাহ ইউনিয়নে তুলনামূলক কিছুটা বেশি চাষ হয়েছে।
সরেজমিন উপজেলার জগদীশপুর ইউনিয়নের কান্দি, মির্জাপুর, স্বর্পরাজপুর, জগদীশপুর গ্রামের মাঠে যেয়ে দেখা যায় বিঘার পর বিঘা জমিতে কৃষক ঝিঙ্গা চাষ করেছেন। মাচায় চাষ করা এই সবজি এখন বাজারজাত করনের উপযুক্ত সময়। প্রতিটি ক্ষেতেই ঝিঙ্গার ব্যাপক ফলন হয়েছে, কোন কৃষক ক্ষেত পরিচর্যা করছেন আবার কেউ বাজারজাত করতে ঝিঙ্গা ক্ষেত থেকে তুলতে শুরু করেছেন।
এ সময় কথা হয় মির্জাপুর গ্রামের চাষি শহীনুর রহমানের সাথে। তিনি জানান, এ বছর চৌগাছার মেসার্স বুলু বিজ ভান্ডার হতে লালতীর কোম্পানীর বিজয় জাতের ঝিঙ্গা বীজ সংগ্রহ করে ২০ শতক জমিতে রোপন করি। গত মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় হতে এ পর্যন্ত ২০ শতক জমি হতে প্রায় ৬০ হাজার টাকার ঝিঙ্গা বিক্রি করেছি। সপ্তাহের দুই দিনে ৬ থেকে ৭ মন করে ঝিঙ্গে বিক্রি করতে পারেন বলে জানান তিনি।
কৃষক শাহীনুর রহমানের মত ওই মাঠে কৃষক ঠান্ডু মিয়া, মোঃ মিঠুন, রমজান আলীসহ অনেকে বলেন, ঝিঙ্গা গ্রাম বাংলার মানুষের কাছে জনপ্রিয় একটি তরকারী, তাই বাজারেও এর রয়েছে বেশ চাহিদা। সে কারনে ঝিঙ্গা চাষ করে কৃষক বেশ লাভাবান হচ্ছেন।
লালতীর কোম্পানীর যশোরের ডিভিশন্যাল ম্যানেজার কৃষিবিদ এসএম হামিদুল ইসলাম ও রিজিওনাল ম্যানেজার খন্দকার বায়জীদ বোস্তামী বলেন, লালতীর দীর্ঘদিন ধরে কৃষকের মাঝে অত্যান্ত গুনগত মানসম্পন্ন বীজ সরবরাহ করে আসছে। প্রতিনিয়ত গবেষণার মাধ্যমে পরিবর্তিত আবহাওয়া ও জলবায়ুর সাথে মানানসই নতুন নতুন ফসলের বীজ সমূহ উদ্ভাবন করে যাচ্ছে। আমাদের নতুন উদ্ভাবনের মধ্যে অন্যতম একটি বীজ হচ্ছে ঝিঙ্গা, বিজয় জাত ইতোমধ্যে উচ্চ ফলনশীল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
এ বিষয়ে নবাগত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সমরেন বিশ্বাস বলেন, আমি যতটুকু জেনেছি চৌগাছার মাটি সব ধরনের ফসল উৎপাদনে বরাবরই বিখ্যাত। এ জনপদের কৃষক নতুন নতুন ফসল উৎপাদনে বেশ পারদর্শী, সব ধরনের ফসল উৎপাদনে উপজেলা কৃষি অফিস কৃষককে সার্বিক সহযোগীতা অতীতে যে ভাবে করে এসেছে বর্তমানেও করে যাবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই