যশোরের চুড়ামনকাটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বর্তমান ও সাবেক দুই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। এরআগে এ ঘটনায় আদালতে মামলা করা হয়। আদালতের নির্দেশে ৭ মার্চ সকালে থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা রেকর্ড করা হয়। তবে পৃথক দুটি মামলায় এখনো কেউ আটক হয়নি।
যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মুন্নাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার আদালতে মামলা করেন বর্তমান চেয়ারম্যান দাউদ হোসেন দফাদার। এ মামলার অপর আসামিরা হলেন, আব্দুল মান্নান মুন্নার ছেলে ছাতিয়ানতলা গ্রামের আওয়াল হোসেন, ভাই আব্দুল হান্নান, হুমার হোসেনের ছেলে হিমেল, মোজাম উদ্দিন, হোসেন আলী ও হাসান আলী, মহিদুল ইসলাম, আক্তার হোসেন, চুড়ামনকাটি গ্রামের ইছাহাক আলী, পুকুর বাগডাঙ্গা গ্রামের শহিদুল ইসলাম, ইউনুছ আলী, কোরবান আলী, বাগডাঙ্গা বিশ্বাসপাড়ার মনিরুল ইসলাম, বাগডাঙ্গা পালপাড়ার অতুল পাল, আব্দুল মুজিদ, সাজিয়ালী গ্রামের হযরত আলী, চুড়ামনকাটি দাসপাড়ার অসীম দাস, আব্দুলপুর গ্রামের তপন দাস, রাম দাস, উত্তম দাস, রতন দাস, ভরত দাস, দুধু চান, সুমন দাস, আমির হামজা, আবুল হোসেন মন্ডল ও মহাসীন আলী।
মামলায় বলা হয়, গত ২৬ জানুয়ারি বিকেলে ধারালো অস্ত্র, সাইজ কাঠ ও বাঁশের লাঠি নিয়ে ছাতিয়ানতলায় মুন্না বাড়ির ভেতর অবস্থান করছিল। এসময় মুন্নার বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন দাউদের সমর্থক সেলিম। তাকে দেখামাত্রই মুন্নার নির্দেশে অন্য আসামিরা সেলিমের ওপর আক্রমণ করেন। তারা তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন। পরে মুন্নাসহ অন্যরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে হামলার উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে চুড়ামনকাটি বাজারস্থ মসজিদের সামনে দাউদের আরো দুই সহোদর সমর্থক হাফিজুর ও ইনছানকে দেখতে পেয়ে তাদের পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেন। এছাড়া হাফিজুর ও ইনছানের আড়তদারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে ক্যাশবাক্স ভেঙে প্রায় দেড় লাখ টাকা লুট করে নেন হামলাকারীরা। এরপর মুন্নার নেতৃত্বে অন্য আসামিরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে হামলা চালান
এদিকে, চুড়ামনকাটির ইউপি চেয়ারম্যান দাউদ হোসেনসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা করেন সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মুন্না। এ মামলার আসামিরা হলেন, ছাতিয়ানতলা গ্রামের চেয়ারম্যান দাউদ হোসেনের তিন ছেলে তানভির হাসান রক্সি, জাকির হোসেন ও রাসেল, টিপু, টিপু, সুমন, আশরাফ, হাফিজুর ও ইনছার আলী, দিপু ও লিপু, বাগডাঙ্গা গ্রামের আমিরুল, আব্দুলপুর গ্রামের আনিচ, আব্দুল আলিম, ক্ষিতিবদিয়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক ও হাফিজুর।
মামলায় বলা হয়, আব্দুল মান্নান মুন্না গত ইউপি নির্বাচনে পরাজয় বরণ করেন। সাজিয়ালি গ্রামের হযরত আলী তার পক্ষে নির্বাচন করায় চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয় বর্তমান চেয়ারম্যান দাউদ হোসেন ও তার অনুসারীরা। গত ১৪ জানুয়ারি পূর্ব শত্রুতার জের ধরে হযরত আলীকে একা পেয়ে চেয়ারম্যান দাউদ হোসেনের নির্দেশে আসামিরা তাকে মারপিটে গুরুতর জখম করে। এ সময় আসামিরা হযরত আলীর কাছে থাকা ৫ লাখ টাকা ও ২২ হাজার টাকা দামের একটি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। হযরত আলী চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হয়ে ২৬ জানুয়ারি আব্দুল মান্নান মুন্নার বাড়ি যান। এ সময় তারা বাড়ির সামনে রেললাইনের পাশে বসে কথাবার্তা বলছিলেন। এরমধ্যে আসামিরা হামলা করে মুন্না ও হযরত আলীকে বেদম মারপিট ও কাছে থাকা একটি মোবাইল ফোন ভাঙচুর করে। ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে মীমাংসায় ব্যর্থ হয়ে তিনি আদালতে এ মামলা করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর বিএম আলমগীর হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনো কাউকেই আটক করা হয়নি।
খুলনা গেজেট/কেডি