খুলনা, বাংলাদেশ | ১লা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৪ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘনা আলমের আটকাদেশ কেন অবৈধ নয় : হাইকোর্ট
  এবারের ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ শুরু হবে সকাল ৯টায়

চিতলমারীতে তিন নার্সের বিরুদ্ধে নবজাতকের হাত ভাঙ্গার অভিযোগ

চিতলমারী প্রতিনিধি

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিনজন নার্সের বিরুদ্ধে প্রসূতির প্রসবের সময় নবজাতকের হাত ভাঙ্গার অভিযোগ করা হয়েছে। বাগেরহাট সিভিল সার্জন, চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও চিতলমারী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবরে মোঃ আতাউর রহমান শেখ নামের এক ব্যক্তি এ লিখিত অভিযোগ করেছেন।

আতাউর রহমান শেখ উপজেলার চরকচুড়িয়া গ্রামের আব্দুর সালাম শেখের ছেলে ও পার্শ্ববর্তী নাজিরপুর উপজেলার বাঘাজোড়া গ্রামের ডাকুয়াবাড়ি জামে মসজিদের ইমাম।

অভিযোগপত্রে জানা গেছে, গত ৪ মার্চ সকালে আতাউর রহমান তাঁর প্রসূতি স্ত্রীকে (২৭) সন্তান প্রসবের জন্য চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ওইদিন বিকেল ৫ টা ৫০ মিনিটে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স পূরবী রানী মৃধা, সাথী ও অনন্যা তাঁর স্ত্রী’র সন্তান প্রসব করান। তাদের একটি কন্যা সন্তান ভূমিষ্ট হয়। কিন্তু নার্স পূরবী রানী মৃধা, সাথী ও অনন্যা হীরার অদক্ষতার কারণে তারা আতাউর রহমানের নবজাতক কন্যা (মাইমুনার) বাম হাতটি ভেঙ্গে ফেলেন। এতবড় দূর্ঘটনা ঘটানোর পরও নার্সরা তাকে কিছু না বলে এবং কিছু বুঝতে না দিয়ে নবজাতক শিশু মাইমুনাকে ৫ মার্চ বাগেরহাট সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। চিতলমারী থেকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে গেলে কর্তৃপক্ষ রাত সাড়ে ১২ টায় আতাউর রহমানের শিশু কন্যাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা এক্সরে করে দেখতে পান নবজাতকের বাম হাতের হাড় ভাঙ্গা। সেখানে ৮ দিন আইসিইউতে নবজাতক মাইমুনাকে চিকিৎসার পর ১৩ মার্চ বাড়িতে নিয়ে আসেন। ১৯ মার্চ শিশু মাইমুনা আবারো অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে দ্রুত গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক পুনরায় শিশু মাইমুনাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বর্তমানে নবজাতক শিশুটি চিকিৎসাধীন রয়েছে।

বুধবার (৯ এপ্রিল) সকালে ইমাম মোঃ আতাউর রহমান শেখ সাংবাদিকদের বলেন, ‘নার্স পূরবী, সাথী ও অনন্যার ভুল চিকিৎসা ও অদক্ষতার কারণে বর্তমানে আমার শিশু কন্যাটি হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়ছে। আমি মসজিদে মাত্র ৮ হাজার টাকা বেতনে ইমামতি করি। আমার আরও দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। এই সামান্য আয়ের টাকা দিয়ে সংসারই চলে না। তাই আমার সহায় সম্বল যা ছিল এতদিনে নবজাতকের চিকিৎসায় সব শেষ। এখন মেয়ের চিকিৎসার জন্য আরও অনেক টাকার প্রয়োজন। তাই অদক্ষ নার্স পূরবী, সাথী ও অনন্যার বিচার এবং নবজাতক কন্যার চিকিৎসার আর্থিক সহযোগিতা চাই।’

চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স অনন্যা হীরা বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারব না। কিছু জানতে হলে স্যারদের সাথে কথা বলেন।’

চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স পূরবী রানী মৃধা বলেন, ‘ওই বাচ্চাটি স্বাভাবিকের চেয়ে বড় ছিল। আমরা সেফলি বাচ্চাটিকে প্রসব করিয়েছি। আমাদের দ্বারা বাচ্চাটির হাত ভাঙার কোন ঘটনা ঘটেনি। শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শর্মী রায় বলেন, ‘স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিনজন নার্সের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সেটি রিসিভ করে রেখেছি। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করা হবে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পর বোঝা যাবে ঘটনাটি কি ঘটেছে।’

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. আ স ম মাহবুবুল আলম বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়টি আমি জানি। ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি করে দিচ্ছি। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!