পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া সুমদ্র বন্দর জাহাজযোগে আনা চালের গুণগত মান ‘উন্নত করা’র লক্ষ্যে লবনচরার খান মেজর অটো রাইস মিল ভাড়া নেওয়া হয়। আমদানীকৃত এ চাল মোংলা বন্দরে আসার পরপরই খাবার অনুপযোগী বলে খাদ্য অধিদপ্তর বাজেয়াপ্ত করে। বাজেয়াপ্তকৃত চালের পরিমান ১ হাজার ৫১৬ মেট্রিকটন। মূল্য আনুমানিক ৬ কোটি টাকা।
খাদ্য অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, ভারতের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এনসিসিএফ এ চালের আমদানীকারক। জাহাজযোগে চাল আনতে যেয়ে ভেতরে পানি ঢুকে ২৫ শতাংশ চাল নষ্ট হয়ে যায়। মোংলা বন্দরে পরীক্ষা নিরীক্ষার সময় দুর্গন্ধ এবং চালের গুণগত মান নষ্ট হওয়ায় খাদ্য বিভাগ বাজেয়াপ্ত করে। লবনচরা এলাকার শ্রমিকরা জানান, বাজেয়াপ্তকৃত চাল বাজারজাতকরণের লক্ষে গুণগত মান ‘উন্নত করা’র লক্ষে (শ্রমিকদের ভাষায় শ্যুটারিং) এ মিল ভাড়া নেয়। মিল চত্বরে ও গুদামে রেখে পর্যায়ক্রমে চালের মান ‘উন্নত করা’ হচ্ছিল। এ মিলের দৈনন্দিন কোন কার্যক্রম ছিল না। এমনকি সরকারের সাথে বোরো সংগ্রহের অভিযানের কোন চুক্তিও ছিল না। সে সুযোগটি ব্যবসায়ীরা কাজে লাগায়।
মিলের মালিক খান কামরুল ইসলাম গত বছরের ২৬ আগষ্ট ইন্তেকাল করার পর এ মিলের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। গুদাম ও মিল চত্বরে বাজেয়াপ্তকৃত চাল পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে রাখা হয়েছে। রাইস মিলের এখনকার মালিক মাহমদু আলম খান চালের গুণগত মান উন্নত করার প্রক্রিয়ার কথা অস্বীকার করেন। তিনি তথ্য দিয়েছেন দু’মাসের জন্য মিল চত্বরে চাল মজুদ রাখার লক্ষ্যে ৭ জুন ম্যাঙ্গে শিপিং লাইন্সের জন্য তারা চুক্তিবদ্ধ হয়। চুক্তিতে জুন ও জুলাই মাসে এক লাখ টাকা ভাড়া উল্লেখ করা হয়।
পরিবহণ প্রতিষ্ঠান ম্যাংগো শিপিং লাইন্সের সহকারি জেনারেল ম্যানেজার মোঃ সোহেল খান শ্রমিকদের দেওয়া তথ্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোন ধরনের মন্তব্য যুক্তিযুক্ত নয়।
উল্লেখ্য, এনসিসিএফ নামক প্রতিষ্ঠান ভারত থেতে চার হাজার ৯৬৩ মেট্রিকটন চাল আমদানী করে। তার মধ্যে তিন হাজার চারশ মেট্রিকটন মহেশ্বরপাশা কেন্দ্রীয় খাদ্য গুদামে খালাস করার প্রক্রিয়া চলছে। লবনচরা মিলে রাখা একহাজার ৫৫৬ মেট্রিকটন চাল এখনকার আলোচ্য বিষয়।
খুলনা গেজেট/এনএম