খুলনার চালনা পৌরসভা নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরুর পর থেকে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেওয়া ও একজনের ভোট অন্যজন দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে ভোট বর্জন করেছে বিএনপি প্রার্থী। একই সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অনিয়মের অভিযোগ তোলেন। বিএনপির প্রার্থী মো. আবুল খয়ের খাঁন এবং নারকেল গাছ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী গৌতম কুমার রায় ওই ভোট কারচুপির অভিযোগ করেন।
সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচন বর্জন করা হয়েছে।
চলনা পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকর লোকজন জোরপূর্বক ভোট প্রদানে বাধ্য করা এবং বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে দলের নির্বাচনী প্রধান এজেন্ট উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মান্নান খান সংবাদ সম্মেলনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। যুবলীগ, ছাত্রলীগ সহ আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাকর্মীরা কেন্দ্রে ত্রাস সৃষ্টি করে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে বাধ্য করছে। ভোটারদের প্রথম ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়ার পরে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে এবং বাকি কাজ আওয়ামী লীগ দলীয় লোকজন সেরে নিচ্ছে।
নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের সনত কুমার বিশ্বাস, বিএনপি’র মো. আবুল খয়ের খাঁন এবং স্বতন্ত্র অচিন্ত্য কুমার মণ্ডল ও গৌতম কুমার রায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
দুই প্রার্থী অভিযোগ করে খুলনা গেজেটকে জানান, সকালে ভোট গ্রহণ শুরুর পর আওয়ামী লীগের এজেন্ট ও কর্মী- সমর্থকেরা তাদের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিচ্ছেন। বুথে ইভিএমের গোপনকক্ষে নৌকার এজেন্টরা ফিংগার প্রিন্ট দেওয়ার পর ভোটারদের জোর করে ভোট দিতে বাধ্য করছেন।
বিএনপির প্রার্থী অসুস্থ থাকায় খুলনা নগরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। প্রথম থেকে তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় নামেননি। পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, কয়েকটি কেন্দ্রে থেকে আওয়ামী লীগের কর্মীরা আমাদের এজেন্টদের বের করে দেয়। এছাড়া অনিয়ম করার অভিযোগে আমরা ভোট বর্জন করছি। যেখানে একজন ভোটার তার ভোট সঠিকভাবে প্রদান করতে পারছে না। সেখানে ভোট করে আর কি হবে। ফিংগার প্রিন্ট দেওয়ার পরে ইভিএমে আওয়ামী লীগের লোকজন ভোট দিয়ে দিচ্ছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী গৌতম কুমার রায় বলেন, আমার এজেন্টদেরকে কেন্দ্র থেকে বের করে দিচ্ছে। ভোটারদের সঠিকভাবে ভোট দিতে দিচ্ছে না। ভোটারদের আঙুলের ছাপ মেশিনে দেওয়ার পরে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকেরা গোপনকক্ষে ঢুকে জোর করে মেশিনের বাটুন চেপে ভোট প্রদান করছে। অভিযোগ করেছি তবে ভোট বর্জন করবো না।
এর আগে, স্বতন্ত্র প্রার্থী অচিন্ত্য কুমার মণ্ডল খুলনা গেজেটকে বলেন, বয়স্ক লোকদের সঙ্গে আনসার বা পুলিশের লোক যাচ্ছে। এতে সমস্যা হচ্ছে। বয়স্ক লোকদের স্বজনদের যেতে দেওয়া হোক। এছাড়া ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কেন্দ্রে মাসুম নামের একজন নৌকার এজেন্ট বোতামে চাপ দিয়ে দিচ্ছেন। সারাদিন ভালো ভোট হলে জয়ের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।
দাকোপ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনের সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা কাজী মাহামুদ হোসেন খুলনা গেজেটকে জানান, মৌখিকভাবে শুনেছি বিএনপি ভোট বর্জন করেছে। বিভিন্ন নির্বাচনের দিনে দ্বিতীয়ার্ধে বিএনপি ভোট বর্জনের এমন কাজ করে থাকে। এতো সুন্দর ফ্রি অ্যাণ্ড ফেয়ার নির্বাচনের পরও যদি ভোট বর্জন করে তাহলে করার কিছু নেই।