খুলনা, বাংলাদেশ | ১৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  সিরাজগঞ্জের কুঠিরচরে পিকআপের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী নিহত
  বাংলাদেশে দেখা গেছে জিলহজের চাঁদ, পবিত্র ঈদুল আজহা ৭ জুন
  ৭৫ শতাংশ ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েও নির্বাচন আয়োজনের পথে মিয়ানমারের জান্তা
  সব মামলা থেকে দণ্ড ও সাজা মুক্ত হলেন তারেক রহমান
  চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে জুলাই আহত-স্টাফ সংঘর্ষ, সেবা বন্ধ

খুলনার আদালত পাড়ার বাবুল দত্তের হোটেলে অস্বাস্থ্যকর খাবারের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক 

খুলনার আদালত চত্বরে বাবুল দত্তের হোটেলের নাম জানেন না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। যারা দূর-দূরান্ত থেকে আদালত পাড়ায় আসেন তাদের অধিকাশই দত্তের হোটেলের খাবারই খেয়ে থাকেন। তবে অধিকাংশ খাবারই নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তার হোটেলের খাবার খেয়ে খোদ আদালতে কর্মরত দুই জন অসুস্থ্য হয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মিষ্টি তৈরির মূল উপকরণ ছানা। সেই ছানা রয়েছে খোলা আকাশের নিচে ফেলানো। তার ওপর দেখা যায় একটি পোকা মরে পড়ে আছে। ছানা রাখার পাত্রের চার পাশে বসে রয়েছে ম্যালেরিয়া জীবাণু ছাড়ানো মাছি। এর পাশে রয়েছে ভাতের বড় ডিস। তার ওপর দেওয়া ছিল না কোন ঢাকনা। হোটেলের ভেতর ছিল না মিডসেফ। একটি তাকে থরে থরে উন্মুক্ত অবস্থায় সাজানো খাবার পণ্য।

সাংবাদিককে ছবি তুলতে দেখে টনক নড়ে হোটেল মালিক এবং কর্মচারীদের। সাথে সাথে খাবারগুলো ভেজা একটি কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়।

এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের রেকর্ড সহকারী কর্মকর্তা ওই হোটেলে খাবার খেতে গিয়ে বাঁধে হুলস্থুল কান্ড। খাবার শেষে পানি চাইলে তাকে নোংরা পানি ধরিয়ে দেয়। সেই পানি নিয়ে আদালত চত্বরের অনেক বিচারককে দেখান তিনি।

জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের অফিস সহকারী হাকিম বলেন, দীর্ঘদিন দত্তের হোটেলে দুুপুরে ভাত খেতে যান। সোমবার দুপুরে ওই হোটেল থেকে খাবার খান ডাল এবং ডিম দিয়ে। খাবার পর অফিসে ফিরে এসে পেটের ভেতর ব্যাথা অনুভত হয়। তিনি বিষয়টি তার সহকর্মীকে বিষয়টি জানান। প্রাথমিকভাবে তিনি গ্যাসের ব্যাথা অনুভব করে ওষুধ খান। এরপর থেকে তাকে একাধিকবার বাথরুমে যেতে হয়। খাবারে সমস্যা থাকার কারণে তার এ সমস্যাটি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, হোটেলের পানি খুবই নোংরা। পানি মূলত মান সম্মত নয়। পানির মধ্যে থাকা জীবাণু পেটে গিয়ে তার এই সমস্যা হয়েছে।

খুলনা জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের রেকর্ড সরকারী এনামুল হক বলেন, প্রতিদিন খাবার নিয়ে আসা সম্ভব হয় না। মাঝে মধ্যে দত্তের হোটেলে খাবার খেতে আসা হয়। আদালত চত্বরে হোটেলটি থাকায় এখানে আসা হয়। এখানে তারা যে পানি ব্যবহার করে তা নামে মাত্র ফিল্টার।

তিনি বলেন, আজ দুপুরে যখন এখানে এসে পানি খাই তখন গ্লাসের মধ্যে পোকা নয়, সাদা সাদা আবরণ দেখা যায়। সাপ্লাইয়ের পানির যে ট্যাংকি রয়েছে তা দীর্ঘদিন পরিস্কার করে না। প্রায়ই এ রকমের সমস্যা হয়। নিরুপায় হয়ে আমাদের এখানে দুপুরে খাওয়া লাগে। তারা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি করে। এ খাবার খেয়ে আমরা অনেকেই অসুস্থ্য হয়ে পড়ি।

জেলা জজ আদালতের নায়েব নাজির আবু সাইদ সেতু বলেন, হোটেল কর্তৃপক্ষ আমাদের স্টাফদের সাথে খারাপ আচারণ করেন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি করার কারণে আমি সেখানে ৬ মাসের বেশি সময় যাই না। তাছাড়া তাদের হোটেলের পাশে রয়েছে জজ কোর্টের রেকর্ড রুম। সেখানে খুলনা বিভাগের ২০০ বছরের বেশি সময়ের নথিপত্র। যে কোন সময়ে আগুন লেগে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

জানতে চাইলে হোটেল মালিক বাবুল দত্ত বলেন, পানিতে কোন সমস্যা নেই। সাধারণ মানুষকে ফিল্টারের পানি খাওয়ানো হয়।

রেকর্ড সরকারীর অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উনি আমাকে কিছু বলেন নি। বাইরে চলে গেছেন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার রাখা, তৈরি করা এবং পরিবেশনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!