সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে একটি গাছ থেকে আবির হোসেন বাবু (২৮) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের নীলকন্ঠপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ মঙ্গলবার সকালে ওই গ্রামের একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে এটিকে হত্যাকান্ড বলে ধারণা করছেন পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ নিহতের স্ত্রী ছাবিনা ইয়াসমিন (৩০) কে হেফাজতে নিয়েছে।
নিহত আবির হোসেন বাবু সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের নীলকন্ঠপুর গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে। তার পরিবারের দাবি, শ্বশুরবাড়ির লোকজন পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেয়ার জন্য বাবু’র মৃতদেহটি বাড়ির পাশে গাছে ঝুলিয়ে রেখেছে।
তবে পুলিশের ধারণা এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। হত্যার পর লাশ গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৮ মাস অগে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বন্দকাটি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আরশাদ আলী আমিন এর বিধবা মেয়ে দুই সন্তানের জননী ছাবিনা ইয়াসমিন (৩০) এর সাথে পার্শ্ববর্তী নীলকন্ঠপুর গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে আবির হোসেন বাবুর বিয়ে হয়। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সৃষ্ট পরিবারিক বিবাদের কারণে গত কয়েকদিন ধরে তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের কথাবার্তা চলছিল। এর মধ্যেই মঙ্গলবার ভোরে এলাকাবাসী নিহত বাবুর বসতবাড়ি থেকে প্রায় একশ’ গজ দূরে পুকুর পাড়ে একটি বাতাবী লেবু গাছের ডালে গলায় ওড়না পেচানো অবস্থায় বাবু’র মৃতদেহ ঝুলতে দেখে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে থানায় খবর দেয়।
পরে কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক জিয়ারত আলী ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। মৃতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। খবর পেয়ে কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ দেলোয়ার হুসেন ও দেবহাটা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (কালিগঞ্জ সার্কেলে অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) ইয়াছিন আলী ঘটনাস্থল পুরদর্শন করেন।
এদিকে নিহতের চাচা মোঃ ওমর আলী মোল্যা (৭০) জানান, তার ভাতিজা আবির হোসেন বাবুকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে মারার পর গাছের ডালে ঝুলিয়ে দিয়েছে। তার পা মাটিতে স্পর্শ করা ছিল। শরীরের অনেক স্থানে জখমের চিহৃ রয়েছে। পায়ের নখ তুলে ফেলা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে বলে জানান তিনি।
কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ দেলোয়ার হুসেন জানান, ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। হত্যার পর নিহতের লাশ গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্ত্রী ছাবিনা ইয়াসমিনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপতাল মর্গে প্রেরণ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান।
খুলনা গেজেট/এনএম