যশােরের চৌগাছার পাশ দিয়ে বয়ে চলা কপােতাক্ষ নদ আজও দাঁড়িয়ে আছে বৃটিশদের হাতে তৈরী ব্রিজের ধ্বংসাবেশ। নদ খননের কারনে ঐতিহাসিক এই স্থপনা থাকবে কিনা তা নিয়ে দেখা দিয়েছে শংসয়। তবে ভবিষ্যাত প্রজন্মের জন্য এটিকে সংরক্ষন করা জরুরী এমনটিই মনে করছেন সচেতন মহল।
চৌগাছা পৌর সদরের পশ্চিমপাশ দিয়ে বয়ে গেছে কপােতাক্ষ। বৃটিশ শাসনামলে খরস্রোতা কপােতাক্ষ নদ পারাপারের জন্য বর্তমান বড় মাছ বাজারের নিচে নির্মান করা হয় একটি সুবিশাল ব্রিজ। জনশ্রুতি আছে কপােতাক্ষের প্রবল স্রোতের কারনে ইট আর চুন সুড়কি দিয়ে নির্মিত ব্রিজ বেশি দিন স্থায়ী হয়নি, স্রোতের দাপটে তা উপড়ে যায়। নদের পশ্চিম পাশের ব্রিজের অবশিষ্ঠ আজও বিদ্যামন। নদ খননের ফলে ব্রিজের ভাঙ্গা অংশ থাকবে কিনা দেখা দিয়েছ শংসয়।
কংশারীপুর গ্রামের দামােদার আলী, তারিনিবাস গ্রামের ফজলুর রহমান, স্বরুপদাহ গ্রামের জহুরুল ইসলাম বলেন, কপােতাক্ষ নদ তথা নদের ভাঙ্গা ব্রিজ এখন শুধুই স্মৃতি। দেশ স্বাধীনের পরও আমরা দেখেছি কপােতাক্ষে অঢেল পানি। তারও আগের কথা বর্তমানে যেখানে ব্রিজটি ভেঙ্গে আছে সেখানে একটি দােয়া আছে। সচারচার মানুষ স্থানটিতে যেতেন না। জেলেরা মাছ ধরতে গেলেও দােয়ার পাশ দিয়ে চলাচল করতাে। বাবা দাদাদের মুখে শুনেছি বৃটিশরা তাদের সুবিধার্তে দােয়ার পাশ দিয়ে ওই ব্রিজটি নির্মান করেন। কিন্তু বেশি দিন স্থায়ী হয়নি, পানির স্রোতের দাপটে ব্রিজ উপড়ে যায়। এরপর বর্তমানে চৌগাছা ব্রিজের সনিকটে খেয়া পারাপার শুরু হয়। বর্ষা মৌসুমে কংশারীপুর মহল্লা ছাড়িয়ে যেত পানি। সেখান থেকে মানুষ খেয়া পারাপার হতেন। নদের ওই সময়ের কাক চক্ষু পানি আর মাছের সমাহার আজ শুধুই অতীত।
পৌরসভার কালিতলা মহল্লার বাসিদা আব্দুর রশিদ, রবিদ্র নাথ বলেন, কপােতাক্ষ নদ তার যৌবন বহু আগেই হারিয়েছে। এখন নদ খনন চলছে, দেখে বেশ ভালই লাগছে। নদটি যদি পরিপূর্ণ খনন হয়, তাহলে এর হারানাে যৌবন হয়তো ফিরে আসবে না তবে কিছুটা হলেও সকলের কাছে ভালো লাগবে।
স্মৃতিচারণ করতে যেয়ে তারা বলেন, বৃটিশদের শাসনের সময় চৌগাছাতে তারা অনেক কিছুই নির্মান করেন। তারমধ্যে ছিল কপােতাক্ষের ব্রিজ। কিন্তু পানির স্রোতের কারনে তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি এমনটিই শুনেছি।
ব্রিজের যে ভাঙ্গা অংশটুকুও আজও দৃশ্যমান এটি সংরক্ষন করা জরুরী কেননা এই ধ্বাংশাবেশ থেকে আগামী প্রজন্ম অনেক কিছুই জানতে বা শিখতে পারবে।
চৌগাছা পৌরসভার মেয়র নুর উদ্দিন আল মামুন হিমেল বলেন, যেহতু কপােতাক্ষ নদের পশ্চিম পাশে আমরা একটি শিশুপার্ক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ইতিমধ্যে সব কাজ প্রায় সম্পন। সে জন্য দর্শনীয় স্থান হিসাবে ভাঙ্গা ব্রিজটি নদে রাখার ব্যাপারে আমরা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবাে।
খুলনা গেজেট/এএজে