সাতক্ষীরার জনপ্রতিনিধি,রাজনৈতিক,সামাজিক, সাংস্কৃতিক সুশীল ব্যক্তি ও সাংবাদিকদের সহযোগিতায় এ জেলার সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধান করতে চাই। সাতক্ষীরা সম্ভাবনাময় এক অনন্য জেলা। জেলার মানুষ শান্তিপ্রিয়। এই মুহূর্তে আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ করোনা মহামারী প্রতিরোধ করা। করোনা রুখতে আমাদের প্রত্যেককে সহযোগিতা করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় জুম প্লাটফর্মে সাতক্ষীরার গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় সাতক্ষীরার নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
নবাগত জেলা প্রশাসক আরও বলেন, সাতক্ষীরার প্রধান সমস্যা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে আমি এ জেলায় যোগদানের আগেই কাজ শুরু হয়েছে। আমি বেড়িবাঁধ নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে ইতোমধ্যে কথা বলেছি। আশা করছি, সফল হবো। সাতক্ষীরার জলাবদ্ধতা সমস্যাসহ যেসব সমস্যা রয়েছে তা পর্যায়ক্রমে সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করবো। সুশীলসমাজকে সাথে নিয়ে এ জেলার সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানের পথ খুঁজবো।
তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ করোনা মহামারী প্রতিরোধ করা। করোনাকে রুখতে হলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। মুখে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। সাধারণ মানুষ যাতে মুখে মাস্ক পরে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সে ব্যাপারে আমাদের স্ব-স্ব অবস্থান থেকে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে হবে। শতভাগ মানুষকে টিকা না নেওয়া পর্যন্ত মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে হবে। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন কঠোর ভূমিকা পালন করবে। যদিও এ জেলায় ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের জনবল সংকট রয়েছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, সাতক্ষীরার যেসব সমস্যা রয়েছে তা সমাধান করতে আমি সকলের সহযোগিতা চাই। পারস্পারিক সহযোগিতা ছাড়া সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। তিনি বলেন, সাংবাদিকরা জাতির বিবেক। তাদের জন্য ২৪ ঘন্টা আমার ফোনটি খোলা থাকবে। জেলায় কোন ধরনের দুর্নীতি অনিয়ম হলে আমাকে বলবেন। দেখবেন পত্রিকায় প্রকাশের আগেই সেটা সমাধান হয়েগেছে। সাংবাদিকদের জন্য একটি তথ্য সেল করার বিষয়টিও ভাবা হবে। গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা নিজেদেরকে যেনো নিরাপদ রেখেই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে দায়িত্ব পালন করি।
‘মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক-আমি আপনাদেরই লোক’-এমনই প্রত্যয়োদ্দীপ্ত ভালোবাসায় সাতক্ষীরা নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির আরো বলেন, আমি শুধু সাংবাদিক বান্ধব নই, আমি সাতক্ষীরা বান্ধব হতে চাই। আপনারা আমাকে সহযোগিতা করবেন।
প্রায় ২ ঘন্টা ১০ মিনিট ব্যাপী মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির ছাড়াও বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপী, সাবেক সভাপতি আবু আহমেদ, সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, প্রথম আলোর কল্যাণ ব্যানার্জী, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী সুজন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম কামরুজ্জামান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল, রামকৃঞ্চ চক্রবর্তী, দৈনিক পত্রদূত সম্পাদক লায়লা পারভিন সেঁজুতি প্রমুখ।
সাংবাদিকরা নবাগত জেলা প্রশাসককে সাতক্ষীরার বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভবনার কথা তুলে ধরেন এবং এ ব্যাপারে সুদৃষ্টি কামনা করেন। বক্তারা সাতক্ষীরার প্রাণ সায়ের খাল পুন:খনন নিয়ে দুর্নীতি, ভোমরা স্থল বন্দরের সমস্যা, সুন্দরবনের সম্পদ সংরক্ষণ, স্থানীয় জলাবদ্ধতা নিরসন, করোনা রুখতে সীমান্তে কঠোরভাবে সীলগালা করা, ভূমীহীনদের মাঝে খাসজমি বন্টন, স্বাস্থ্যখাতে সীমাহীন দুর্নীতি, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগিরা যথাযথ সেবা না পাওয়া, সাতক্ষীরার দুর্বল শিক্ষা ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। জেলা প্রশাসক মনোযোগসহকারে সাংবাদিকদের এসব কথা শোনেন এবং তা সমাধানের আশ্বাস দেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই