সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন, খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক গাজী আলাউদ্দিন আহমদ সম্পাদিত ‘উন্নয়নের সরণিতে পদ্মা সেতু’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠান আজ শুক্রবার সকালে খুলনা প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তৃতায় বলেন, পদ্মা সেতু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের জন্য আশীর্বাদ, আত্মমর্যাদা ও অহংকারের প্রতীক। অনেক বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে আর ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে প্রমত্তা পদ্মার বুকে আজ বহু-কাঙ্খিত সেতু দাঁড়িয়ে আছে। এই অঞ্চলের মানুষ দীর্ঘ দিন অবহেলিত ছিলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া এই সেতু নির্মাণ করার সাহস কারও ছিলো না।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করে বিশ্বকে বাংলাদেশের সক্ষমতা দেখিয়ে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। এই সেতু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে। ইতোমধ্যে এসব জেলায় সেতু ঘিরে নানারকম অর্থনৈতিক কর্মকান্ড শুরু হয়েছে। পদ্মা সেতুর চালু হওয়ার পরে এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে এবং কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি ‘উন্নয়নের সরণিতে পদ্মা সেতু’ গ্রন্থটি সম্পাদনা করায় গাজী আলাউদ্দিন আহমদকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। পরে মেয়র গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন।
গ্রন্থের সম্পাদক ও সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন, খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি গাজী আলাউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পুলক কুমার মন্ডল, সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও গ্রন্থের প্রকাশক অধ্যাপক মাওলানা মোহাম্মদ আবেদ আলী এবং পরিচালক ড. মুহাম্মদ মাসুম চৌধুরী।
ফাউন্ডেশনের নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক এম এ মান্নান বাবলু’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন ও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা এস এম শাহনেওয়াজ আলী, সাংবাদিক শেখ দিদারুল আলম, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আছাদুজ্জামান, ‘দেশ সংযোগ’ পত্রিকার সম্পাদক মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগ, ‘খুলনা গেজেট’র নির্বাহী সম্পাদক কাজী মোতাহার রহমান বাবু, আইনজীবী ফরিদ আহমেদ, যশোর এমএম কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ড. খ ম রেজাউল করিম, খুবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মামুন উর রশীদ, খুবি উপ-রেজিস্ট্রার জি এম লুৎফর রহমান, রুহুল আমিন হাওলাদার, সরদার আবু তাহের, মো: আরিফ, আব্দুস সালাম শিমুল, মো: হুমায়ুন কবীর, হালিম মোড়ল, অধ্যাপক আবুল বাশার, সাংবাদিক এহতেশামুল হক শাওন, হাসান হিমালয়, মাহবুবুর রহমান মুন্না, সুনীল দাস, মোহাম্মদ মিলন, হাসানুর রহমান তানজির, মনিরুল ইসলাম, জাহিদুল সাগর, একরামুল হক লিপু সহ গণমাধ্যম কর্মী, শিক্ষাবিদ ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
গ্রন্থটির সম্পাদক গাজী আলাউদ্দিন আহমদ অনুভূতি প্রকাশকালে বলেন, পদ্মাসেতুর কাজ শেষ পর্যায়ে থাকার সময়ে আমার কাছে মনে হয়েছে- এটি শুধু রড সিমেন্ট বা স্টিলে গড়া সেতু নয়, এটি একটি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি। যা বদলে দিতে পারে দেশকে। এই সেতু দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে কী প্রভাব ফেলবে, তা ফুঁটে উঠেছে লেখকদের লেখনীতে ।
বইটির মুখবন্ধ লিখেছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ট্রেজারার মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘উন্নয়নের সরণিতে পদ্মা সেতু’গ্রন্থটির প্রকাশনার উদ্যোগ গ্রহণ করে সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা মোহাম্মদ আবেদ আলী ও বিশিষ্ট গণমাধ্যমসেবী গাজী আলাউদ্দিন আহমদ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় কাজ করেছেন। এতে পদ্মা সেতু নির্মাণের পটভূমি, ইতিহাস, পরিকল্পনা, পরিসংখ্যান, প্রযুক্তিগত বিষয়সমূহ ছাড়াও দেশের অবহেলিত দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে এর প্রভাব নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসহ সচিত্র প্রতিবেদন রয়েছে যা শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অনুসন্ধানী গবেষক ও সাধারণ পাঠকদের তথ্য প্রাপ্তির উৎস হয়ে থাকবে।
উল্লেখ্য, ‘উন্নয়নের সরণিতে পদ্মা সেতু’ গ্রন্থে তিন পর্বে ৫২টি প্রতিবেদন, নিবন্ধ ও সাক্ষাৎকার বা অভিমত প্রকাশিত হয়েছে।