চলতি আমন মৌসুমে এক কেজি ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ। ব্যাপক ঘটা করে ধান সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু করা হলেও নির্ধারিত সময়ে কৃষকরা কোন ধান দেয়নি। সরকার ধার্যকৃত দামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এমতাবস্থায় ধান সংগ্রহের লক্ষে আবারও এক সপ্তাহ সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে চাল সংগ্রহ সন্তোষজনক বলে জানা গেছে।
উপজেলা খাদ্য গুদাম সূত্রে জানা গেছে, এ বছর আমন মৌসুমে চৌগাছাতে ৭৩৫ মেঃ টন ধান সংগ্রহের লক্ষমাত্রা নিয়ে খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ প্রায় তিন মাস আগে কার্যক্রম শুরু করেন। চলতি বছরের ২৮ ফের্রুয়ারী পর্যন্ত ধান সংগ্রহের দিন ধার্য ছিলো। কিন্তু দীর্ঘ এই সময়ে ১ কেজি ধানও কিনতে পারেনি গুদাম কর্তৃপক্ষ।
লক্ষমাত্রা পুরোন না হলেও কিছু ধান যাতে সংগ্রহ করা যায় সে লক্ষে এ মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত আবার সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। সূত্র জানায়, সরকারী ভাবে এক মন ধানের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১১২০ টাকা। কিন্তু খোলা বাজারে ধানের দাম সরকার বেধে দেয়া দামের চেয়ে অনেক বেশি।
বাজারে ১ মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২৫০ হতে ১ হাজার ২৮০ টাকা পর্যন্ত। তাই কৃষক খাদ্য গুদাম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। এ ছাড়া সরকারী গুদামে ধান দিতে যেয়ে কৃষককে নানা সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়, সে কারণে কৃষক খাদ্য গুদামে ধান বিক্রিতে অনিহা প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কৃষক বলেন, সরকারি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করতে হলে তা রোদে শুকানোর পর তাদের মাপা যন্ত্রে দেয়ার পর যদি সঠিক উত্তর না আসে তাহলে ওই ধান পুনরায় বাড়িতে ফিরিয়ে এনে আবার রোদে শুকিয়ে তারপর গুদামে দিতে হয়।
এতে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যে ধান গুদাম থেকে ফিরিয়ে দেয় সেই ধান বাজারে কমপক্ষে ১শ টাকা বেশি দরে বিক্রি হয়। এদিকে খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ ধান সংগ্রহে ব্যার্থ হলেও চাল সংগ্রহে বেশ সাফল্য পেয়েছেন। মিলাদের মাধ্যমে এ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার ৯৮ শতাংশ চাল সংগ্রহ সম্ভব হয়েছে। চালের সরকারী দাম আর বাজারের দামে খুব একটা পার্থক্য না হওয়ায় এটি সম্ভব হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান জানান, আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করেও এক কেজি ধান কিনতে পারেনি। বাইরে ধানের দাম বেশি থাকায় কৃষক গুদামে ধান দিতে অনিহা প্রকাশ করেছেন। তবে চাল সংগ্রহ সন্তোষজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ৯৮ শতাংশ চাল সংগ্রহ হয়েছে আগামী ৭ মার্চ পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ে চাল শতভাগ সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।
খুলনা গেজেট/ এসজেড