দাফনের মাসখানেক পর গৃহবধূ মাহমুদা আক্তার মিলির লাশ কবর থেকে উত্তোলন করতে চায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে এ বিষয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। একই সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই নারীর স্বামী আবাসন ব্যবসায়ী তারেক বিশ্বাসের সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হচ্ছে। শনিবার এ বিষয়ে আদালতে আবেদন করা হতে পারে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি নগরীর একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মাহমুদা আক্তার মিলি। এক মাস পর গত ২৫ মার্চ খুলনার আদালতে হত্যা মামলার আবেদন করেন নিহতের মা সেলিনা বেগম। এতে তারেকসহ চারজনকে আসামি করা হয়েছে। আদালত নগরীর হরিণটানা থানা পুলিশকে মামলাটি নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন। দু’দিন পর সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ এটি নথিভুক্তির পাশাপাশি ব্যবসায়ী তারেককে গ্রেপ্তার করে।
মামলার বাদী সেলিনা বলেন, ‘বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে মারধর করত তারেক। এসব নির্যাতনের অনেক ছবি ও ভিডিও ফুটেজ আমাদের দেখিয়েছে মাহমুদা। কিন্তু মেয়ের সংসারের কথা চিন্তা করে আমরা চুপ ছিলাম। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে আবার ওকে বেদম মারধর করা হয়। মিলির সারাশরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। হাসপাতালে মারা যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তারেক ও তার পরিবারের লোকজন মাহমুদার লাশ দাফন করে ফেলে। এতদিন তারেক ও তার ভাইদের ভয়ে পুলিশকে জানাতে সাহস পাইনি।’
মাহমুদাকে নির্যাতনের দৃশ্যসংবলিত বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ সাংবাদিকদের সরবরাহ করেছেন সেলিনা। সেখানে মাহমুদার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। একটি ভিডিওতে মাহমুদাকে বলতে শোনা যায়, তারেক তাঁকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়েছেন। এ ছাড়া মাহমুদার ব্যক্তিগত ডায়েরির বিভিন্ন পাতায় মারধরের বর্ণনা লেখা আছে।
আওয়ামী লীগ নেতা তারেক বিশ্বাস প্রপার্টিজের স্বত্বাধিকারী আজগর বিশ্বাস তারার ছোট ভাই। এর আগেও নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য আলোচনায় এসেছে পরিবারটি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও হরিণটানা এসআই রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভিডিও রেকর্ডগুলো সংগ্রহ করেছি। মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করতে মরদেহের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত করা প্রয়োজন। এ জন্য কবর থেকে লাশ তোলার আবেদন করা হয়েছে। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামলার প্রধান আসামি তারেককে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হবে। অপর আসামি তারেকের প্রথম স্ত্রী নাসিমা, তাদের সহযোগী মো. বিল্লাল ও বঙ্কিম অধিকারীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
খুলনা গেজেট/হিমালয়