উচ্চ আদালতের রায় পেয়েও অভয়নগর উপজেলার শ্রীধরপুর ইউনিয়নের পুড়াখালী বাওড় মৎস্য চাষ উন্নয়ন প্রকল্পের সদস্যরা মাছ ধরতে পারছে না। জীবিকা থেকে বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে শতশত মৎস্যজীবী। বিভিন্ন প্রজাতীর মাছ মরে যাওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চাষিরা। দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। দ্রুত সময়ের মধ্যে আদালতের রায় বাস্তবায়নের জন্য যশোর জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করা হয়েছে।
জানা গেছে, শ্রীধরপুর ইউনিয়নের পুড়াখালী গ্রামে ৫৭ হেক্টর জমির মধ্যে ৫৪ হেক্টর জমিতে পুড়াখালী বাওড় মৎস্য চাষ উন্নয়ন প্রকল্প রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ও ইফাদের মধ্যে ৫০ বছর মেয়াদে একটি চুক্তি রয়েছে। চুক্তি মোতাবেক উক্ত মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্প গত ৩০ বছর যাবৎ ভোগদখল ও ব্যবহার করে আসছে। জেলা জলমহল কমিটি ২০২০ সালের ১০ মার্চ তৃতীয় দফা চুক্তি নবায়ন না করে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এ ঘটনায় পুড়াখালী বাওড় মৎস্য চাষ উন্নয়ন প্রকল্পের সদস্যরা চরম বিপাকে পড়েছে। মাছ ধরা, সংরক্ষণ ও চাষ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করে। আদালত চলতি বছরের ১ এপ্রিল মাছ ধরা ও বাজারযাত করার অনুমোদন দেন।
এ ব্যাপারে পুড়াখালী বাওড় মৎস্য চাষ উন্নয়ন প্রকল্পের সভাপতি আব্দুর রহমান জানান, উচ্চ আদালতের রায় পেয়ে চুক্তি মোতাবেক বাংলা ১৪২৭ সালের ইজারার বাবদ ৯৪ হাজার ২০৬ টাকা, ভ্যাট ১৪ হাজার ১৩১ টাকা ও আয়কর বাবদ ৪ হাজার ৭১১ টাকা (মোট ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৮ টাকা) গত ১১ এপ্রিল সোনালী ব্যাংক নওয়াপাড়া শাখায় সরকারি রাজস্ব খাতে জামা দেওয়া হয়। এরপর আমরা মাছ ধরতে গেলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস বাধা প্রদান করে। গরমে প্রতিদিন বাওড়ে বিপুল পরিমান মাছ মরছে। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শতাধিক মৎস্য চাষি। তাদের দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে। সঠিক সময়ে মাছ ধরে বিক্রি করতে পারলে আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে উঠানো সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি আরো জানান, বৈশাখ মাসে মাছের ডিম থেকে পোনা আহরণ করা হয়। বৈশাখ মাস শেষ হতে চলেছে, জল মহল কমিটির অবহেলার কারণে মাছের পোনা আহরণ ও সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়নি। যে কারণে লাভজনক উন্নয়ন প্রকল্পটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে চলেছে। মাছ ধরার অনুমতি চেয়ে গত সোমবার (২৬ এপ্রিল) জেলা জলমহল কমিটির আহবায়ক জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদনপত্র জামা দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ্ ফরিদ জাহাঙ্গীর জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যে উচ্চ আদালতের রায় বাস্তবায়ন করা হোক। তবে পুড়াখালী বাওড় ব্যক্তিস্বার্থে নয়, সমষ্টিগতস্বার্থে ব্যবহার হওয়া দরকার।
যশোর জেলা জলমহল কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান মুঠোফোনে জানান, বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/কেএম