জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে যারা দিন আনে দিন খায় তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ঋণ চেয়েছে সাড়ে চারশ কোটি ডলার। রিজার্ভ কমে যাওয়ার কারণে তারা ঋণ নিচ্ছে। অথচ এতদিন মিথ্যাচার করে আসছে। বলে আসছে আমাদের রিজার্ভের কোনো ঘাটতি নেই।
আইএমএফের ঋণ দেওয়ার শর্ত ‘খুব শক্ত’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা বলেছে কোথাও সাবসিডি (ভর্তুকি) দেওয়া যাবে না। তেলে সাবসিডি দেওয়া বন্ধ করতে।
শনিবার (৬ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সড়কে এক ছাত্র সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। ভোলায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নূরে আলমের হত্যার প্রতিবাদে ছাত্র সমাবেশের আয়োজন করে ছাত্রদল।
সমাবেশে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি বলেছিলেন- জ্বালানি তেলের দাম একটু বাড়ানো হবে। তা সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। তার কয়েক ঘণ্টা পরই তেলের দাম ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিতে ভয়ংকর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এই জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি দেশের মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যাবে পরিবহন ব্যয়, ভাড়া, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। চাল, ডাল তেলের দাম দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য সরকার দুর্নীতি শুরু করেছে। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে ফেলেছে। মধ্যরাতে হঠাৎ করেই জ্বালানি তেলের দাম দ্বিগুণ, তিনগুণ বৃদ্ধি করেছে। যে ডিজেলের দাম ৮৮ টাকা ছিল সেটা করেছে ১১৪ টাকা। ৮৯ টাকার পেট্রোল করেছে ১৩০ টাকা। যার ফলে আজকে যানবাহন কমে গেছে।
তিনি আরও বলেন, কাঁচা মরিচের কেজি ৩০০ টাকা। মানুষের ওপর অত্যাচার নির্যাতন শুরু হয়েছে। মানুষ এখন দিশেহারা হয়ে গেছে, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।
সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া একজন দেশপ্রেমিকের কাজ বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বর্তমান সরকার বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ দানবে পরিণত হয়েছে। সেজন্য এদের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া একমাত্র দেশপ্রেমিকের কাজ। সমস্ত রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে সংগঠিত করে একটা দুর্বার গণ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
নূরে আলম ও আব্দুর রহিমের হত্যা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা একটা সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আওয়ামী লীগ আজকে ক্ষমতায় টিকেই আছ হত্যা, ঘুম, খুন এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ৬ শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করেছে। জাতীয় সংসদ সদস্যসহ নেতা-কর্মীরা এর মধ্যে রয়েছেন। সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীকে রাজনৈতিকভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
ছাত্রদলের সভাপতি রওনকুল শ্রাবণের সভাপতিত্বে আর সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির নেতা আমান উল্লাহ আমান, আব্দু সালাম, খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/ এস আই