খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৮৩
  ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে কোনো ধরণের হামলার শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

অভয়নগরে কৃষি অফিসের দেয়া ধানের বীজ ভেজালের অভিযোগ, হতশায় কৃষক

শাহিন হোসেন, অভয়নগর

অভয়নগরে কৃষি অফিস কৃর্তক প্রদত্ত ধানের বীজ ভেজালের অভিযোগ উঠেছে। যে কারণে হতাশার মধ্যে রয়েছে উপজেলার কৃষকেরা। ক্ষতি পোষাতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা। আর এ অভিযোগ টি গতকাল রবিবার ৭ মে ১২ জন কৃষক উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওর্য়াডের মধ্যপুর গ্রামের কৃষকদের মাঝে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর অফিস কৃর্তক প্রদত্ত ধানের বীজ ও সার প্রদান করা হয়। উক্ত বীজ পুরাতন ও তিন ধরণের ভেজাল মিশ্রিত ধান। কৃষকেরা চারা রোপনের পর যথাযথ পরির্চযা করেন। মুকুল বের হওয়ার সময় প্রথম ধাপে ধান পেকে গেছে। আবার দ্বিতীয় ধাপের ধান কিছু বের হয়েছে এবং ৩য় ধাপের ধান গর্ভাস্থায় আছে। ধানের এ অবস্থা দেখে উপজেলার কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

কৃষি মাঠ কর্মকর্তার সাথে কথা বললে এ ব্যাপারে কোন স্ব – উত্তর পাননি। এরপর কৃষককেরা মুঠোফোনে আবার কৃষি মাঠ কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ধান কেটে ফেলার কথা বলেন। ওই কৃষি মাঠ কর্মকর্তাকে তারা দেখনি বলেও অভিযোগে উল্লেখ্য করেন। ওই ১২ জন কৃষক ধান না পেয়ে প্রায় ৪ লাখ টাকার ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন। যে কারণে তারা উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের অফিসারের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

কৃষক গোলাম সরোয়ার বলেন, ৮৪ শতকে বীজ বোনার তিন থেকে চার মাসের মধ্যে ভালো ফলন হওয়ার কথা। কিন্তু এত দিনেও তাঁর ক্ষেতে কোনো ফলন আসেনি। জমির ইজারা খরচ, শ্রমিকের মজুরি, খেত রক্ষণাবেক্ষণসহ অন্তত ৬০ হাজার খরচ হয়েছে। ভেজাল বীজের কারণে এই টাকা তুলে আনার আর কোনো সম্ভাবনা নেই।

মধ্যপুর গ্রামের কৃষক মো. সামছুর মল্লিক জানান, সরবরাহ করা বীজ থেকে চারা করে ক্ষেতে লাগানোর কিছুদিন পরেই মিশ্রণ দেখতে পান। এখন ধান গাছগুলো থেকে ছড়া বের হওয়ার সময়। কিন্তু জমিতে ছোটবড় নানা জাতের ধান গাছ দেখা যাচ্ছে।

একই গ্রামের কৃষক জাহিদুল সরদার বলেন, ফলন বেশি হওয়ার আশায় মাঠের পর মাঠ কৃষি অফিস কৃর্তক প্রদত্ত ধান চাষ করেছি। ফলন ভাল হয়নি। ধার দেনা করে চাষ করে ক্ষতি হয়েছে ৩০ হাজার টাকা । ক্ষতি পোষাতে সরকারের কাছে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, উপজেলা কৃষি অফিস কর্তৃক ধান বীজ নিয়ে প্রতারিত হয়েছেন। ক্ষেতে লাগানো ধানগাছ কোনোটি ছোট, কোনোটি লম্বা আকার ধারণ করেছে।ওই সব গাছ থেকে আর মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে ছড়া বের হওয়া শুরু হবে। এ অবস্থায় কৃষকের চোখে জল ছলছল করছে। কৃষকরা ওই ধানের বীজ নিয়ে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

ফিল্ড সুপার ভাইজার সবাংকর মিত্র বলেন, আমি ৫ টি গ্রামের ফিল্ড সুপার ভাইজার হিসাবে কাজ করি। মধ্যপুর গ্রামের কিছু কৃষকের অফিস কর্তৃক প্রদত্ত ধানের বীজ দেওয়া হয়। তাদের ধানের ভাল ফলন হয়নি। তবে তার আসপাশের অঞ্চলের ধানের ফলন ভাল হয়েছে। কৃষকেরা তাকে চিনেন না এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমার অনেক দ্বায়িত্ব। কুটি কয়েকজন কৃষক হতবা অভিযোগ দিতে পারে। যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাদের ব্যাপারে ক্ষতি পুসিয়ে দেওয়া যায় কিনা । সে ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার পরিদর্শনে আসছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার লাভলী খাতুন জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর আমি ওই অঞ্চলে আসছি। কৃষকদের সাথে কথা বলছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।

এ বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেজবাহ উদ্দিন বলেন, কৃষকেরা অভিযোগ দেওয়ার পর আমি ও চেয়ারম্যান এক জায়গায় বসে পরার্মশ করে কৃষি অফিসারকে দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ ফরিদ জাহাঙ্গীর বলেন, কৃষি অফিস কৃর্তক প্রদত্ত ধানের বীজ ভেজালের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ দ্বায়ভার আমি ও নির্বাহী অফিসার নিব না। এ দ্বায়ভার নিতে হবে কৃষি অফিসকে।

খুলনা গেজেট/ এসজেড

 

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!