যশোরের অভয়নগরে সীমান্তে ডাকাত সন্দেহে মাসুদ রানা (৩০) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এসময় আরও পাঁচ যুবককে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) ভোর রাতে উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের বনগ্রামের কাটাখালী এলাকা থেকে মরদেহ ও আহত পাঁচজনকে উদ্ধার করে পুলিশ। তবে নিহতের পরিবারের দাবি মাসুদ রানাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ডাকাতির নাটক সাজানো হয়েছে।
নিহত মাসৃুদ রানা যশোর সদর উপজেলার গাইদগাছি গ্রামের মৃত সোহরাব হোসেনের ছেলে। আহতরা হলেন, গাইদগাছী গ্রামের ইসমাইল আলীর ছেলে জুলফিক্কার আলী (৩০), মণিরামপুর উপজেলার সুবলকাটি গ্রামের মনসুর আলী বিশ্বাসের ছেলে ইসরাফিল হোসেন (১৯), একই উপজেলার করেরাইল গ্রামের শামীম মোল্যার ছেলে সজিব মোল্যা (১৯), একই গ্রামের আলমগীল হোসেনের ছেলে সুমন হোসেন (১৯) ও বারপাড়া গ্রামের বাবুল গাজীর ছেলে মঈন উদ্দিন (১৯)।
প্রেমবাগ ইউপি চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন জানান, ডাকাত সন্দেহে একজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে এমন সংবাদ পেলেও নিরাপত্তার অভাবে রাতে সেখানে যেতে পারিনি। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পরে পুলিশ এসে মরদেহ ও আহত পাঁচজনকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
নিহতের চাচাতো ভাই জিয়াউর রহমান বলেন, ‘ আমার ভাই কাঠ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল। তবে সে একজন মাদকাসক্ত। প্রায় রাতে সে সদর উপজেলার গাইদগাছি গ্রামে গিয়ে জুলফিক্কারের বাড়িতে মাদকসেবন করত। ঘটনার দিন রাতে সে জুলফিক্কারের বাড়িতে চার বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে মাদক সেবন করছিল। মধ্যরাতে স্থানীয় বাবু, মুরাদ, শিমুল, রাজু, পিন্টু, আফসারসহ অজ্ঞাতনামা কয়েক যুবক দেশীয় অস্ত্র সহকারে জুলফিক্কারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা আমার ভাইকেসহ ঘরের মধ্যে থাকা সকলকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে নিয়ে আসে এবং ডাকাত ডাকাত চিৎকার করে পেটাতে শুরু করে। পরে তারা গুরুতর আহত অবস্থায় ছয়জনকে অভয়নগরের বনগ্রাম কাটাখালি মোড়ে এনে ফেলে রাখে। ওরা আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে নাটক সাজিয়েছে।’ এ হত্যার সুবিচার দাবি করেন তিনি।
এ ব্যাপারে অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম মেহেদী মাসুদ জানান, অভয়নগর ও যশোর সদর উপজেলার সীমান্তে মারপিট ও হত্যাকান্ডের সংবাদ পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ৬ জনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক মাসুদ রানা নামে একজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আহত অপর পাঁচজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ যশোর মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে যশোর কোতয়ালী মডেল থানা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
খুলনা গেজেট/ বিএম শহিদুল