ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষ হলেও অর্জনের খাতা সমৃদ্ধ হয়েছে বাংলাদেশ দলের। রেকর্ডে রেকর্ডে প্রাপ্তি মিলেছে বেশ। লিটন দাসের তুলিতে আঁকা ১৪১ রানের সঙ্গে মুশফিকুর রহিমের হার না মানা ১৭৫ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস।
তবে মঙ্গলবার দিন শেষে আক্ষেপও নেহায়েত কম নয়। তাতে মুশফিকের ডাবল হান্ড্রেডের অপ্রাপ্তি যেমন লেগে থাকল, তেমনি ফিল্ডিংয়ে নেমে ক্যাচ মিস আর ডিআরএস ভাগ্যও বৈরী আচরণ করল স্বাগতিকদের সঙ্গে।
বাংলাদেশ দলের দ্বিতীয় দিনের শুরুটা ভালো হয়নি সেভাবে। মিরপুরে প্রথম দিন দায়িত্ব নিয়ে খেলা লিটন এদিন সুবিধা করতে পারলেন না। মুশফিক ছাড়া বাকিরাও যোগ দেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। তাতে অলআউট হয়ে ৩৬৫ রানে থামে স্বাগতিকদের ইনিংস।
এরপর ব্যাট করতে নেমে আগ্রাসী শুরু শ্রীলঙ্কার। ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করে রান তুলেছে তারা। সুযোগগুলো কাজে লাগিয়ে ২ উইকেট হারিয়ে সফরকারীরা স্কোর বোর্ডে জমা করেছে ১৪৩ রান। শেষ বিকেলে কুশল মেন্ডিসকে ফিরেছে দলে কিছুটা স্বস্তি আনেন সাকিব আল হাসান।
বাংলাদেশের থেকে প্রথম ইনিংসে এখনো ২২২ রানে পিছিয়ে থাকলেও ঢাকা টেস্টে দাপট লঙ্কানদেরই। আগামীকাল বুধবার ম্যাচের তৃতীয় দিন দিমুথ করুনারত্নে ৭০ এবং নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে নামা কাসুন রাজিথা ০ রান নিয়ে আবার ব্যাটিং শুরু করবেন।
দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে ব্যাট করতে নেমে বিপদে পড়েছিল শ্রীলঙ্কা। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ওপেনার ওসাধা ফার্নান্দোর বিপক্ষে কট বিহাইন্ডের আবেদনে সড়া দেন আম্পায়ার। তবে সাথে সাথেই রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান ওশাধা, ভাগ্য গেল অধিনায়ক মুমিনুল হকের বিপক্ষে। উইকেট বঞ্চিত খালেদ আহমেদ। এরপর যত সময় গড়িয়েছে ততই ম্যাচের দখল নিয়েছে শ্রীলঙ্কা দল।
যদিও ইনিংসের ১৫তম ওভারে আরেকটি সুযোগ মিলেছিল। তবে এ যাত্রায়ও ভাগ্য সঙ্গ দিল না। বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের বলে এলবিডব্লিউর জোরালো আবেদন নাকচ করেন আম্পায়ার শরফদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। সিদ্ধান্তের চ্যালেঞ্জ জানালেও বাংলাদেশ দলকে পুড়তে হয় আম্পায়ার্স কলের আক্ষেপে।যদিও খালি চোখে মনে হচ্ছিল সেটা নিশ্চিত এলবিডব্লিউ। তখন ৩৯ রানে ব্যাট করছিলেন ওশাধা।
পরে ১৮তম ওভারে সেই ওশাদার ফিরতি ক্যাচ হাত ফসকে গেছে সাকিব আল হাসানের। তখন ৪৩ রানে ব্যাট করছিলেন এই ওপেনার। জীবন পেয়ে ২০তম ওভারে সাকিবকে ছক্কা মেরেই ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটির দেখা পান ওশাধা।
চা বিরতির আগে ২২ ওভার ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে বিনা উইকেটে ৮৪ রান তুলে শ্রীলঙ্কা। ওশাধা ৫২ ও করুনারত্নে ৩১ রানে অপরাজিত ছিলেন। চা বিরতির পর ইনিংসের ২৬তম ওভারে দুই ব্যাটসম্যানকেই সাজঘরে ফেরানোর রাস্তা তৈরি করতে পেরেছিলেন পেসার এবাদত হোসেন। তবে ওশাদাকে ফেরানো গেলেও ফেরানো যায়নি করুনারত্নেকে।
করুনারত্নের এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিউ নেয়নি বাংলাদেশ দল। যদিও টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় রিভিউ নিলেই আউট হতেন করুনারত্নে। এর দুই বল বাদে অবশ্য স্লিপে শান্তকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ওশাদা। ৯১ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৫৭ রান তার ব্যাটে। তাইজুলের করা পরের ওভারেই শর্ট লেগে করুনারত্নের ক্যাচ ছাড়েন জয়। তখন ৩৭ রানে ব্যাট করছিলেন লঙ্কান দলপতি।
করুনারত্নে সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৯তম অর্ধশতক তুলে নেন। তাকে আরেকবারে ফেরানোর চেষ্টায় রিভিউ নিয়েছিল বাংলাদেশ দল, সেটিও বিপক্ষে গেছে স্বাগতিকদের। তবে শেষ বিকেলে বাংলাদেশ দলের স্বস্তি এনে দেন সাকিব। লেগ বিফোর ফাঁদে ফেলে ফেরান কুশলকে। ৪৯ বল খেলে ১১ রান করেন তিনি।
গোটা দিনে পাওয়া সুযোগগুলো কাজে লাগিয়ে ২ উইকেট হারিয়ে সফরকারীরা স্কোর বোর্ডে জমা করেছে ১৪৩ রানে। বাংলাদেশের থেকে প্রথম ইনিংসে এখনো ২২২ রানে পিছিয়ে থাকলেও ঢাকা টেস্টে দাপট লঙ্কানদেরই।
আগামীকাল বুধবার ম্যাচের তৃতীয় দিন দিমুথ করুনারত্নে ৭০.এবং নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে নামা কাসুন রাজিথা ০ রানে নিয়ে আবার ব্যাটিং শুরু করবেন।