‘একদিন তুমি পৃথিবী গড়েছো, আজ আমি স্বপ্ন গড়ব, সযত্নে তোমায় রাখব আগলে’ এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উপলক্ষ্যে শ্যামনগরে ব্যতিক্রমী নবীন-প্রবীণ গল্পের আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলার গোপালপুর পল্লী সমাজ যুব নারী সংগঠন, সবুজ সংহতি, সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিমের উদ্যোগে ও বারসিক এর সহযোগিতায় গতকাল বুধবার সকালে ব্যতিক্রমী নবীন-প্রবীণ গল্পের আসর অনুষ্ঠিত হয়।
গোপালপুর গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি প্রভাষ চন্দ্র মন্ডল (৮৫) সভাপতিত্বে এবং বারসিক এর কর্মসূচি কর্মকর্তা মারুফ হোসেন (মিলন) এর সঞ্চালনায় গল্পের আসরে ১২ জন প্রবীণ, ১৫ জন যুবক, ১০ জন নবীন গৃহবধূসহ গোপালপুর পল্লী সমাজ যুব নারী সংগঠনের সভাপতি ও সবুজ সংহতির সদস্য দেলোয়ারা বেগম, বারসিক এর সহযোগী কর্মসূচি কর্মকর্তা প্রতিমা চ্যাটার্জী উপস্থিত ছিলেন।
গল্পের আসরে প্রবীণ ব্যক্তিরা তাদের আগেকার দিনের পরিবেশ কেমন ছিল, তাদের জীবনযাত্রা কেমন ছিল, এলাকাতে কি কি প্রাণ বৈচিত্র ছিল, রাস্তাঘাটের অবস্থা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের অবস্থা, খাদ্যের মান, চিকিৎসা পদ্ধতি, বিয়ে, পারিবারিক প্রথা, রীতিনীতি, রাজনীতিসহ বিভিন্ন ধরনের সংস্কৃতি অনুষ্ঠান কেমন ছিলো তা গল্পের মাধ্যমে তুলে ধরেন। এছড়াও যুব, কিশোর, গৃহবধূরা প্রবীণদের কীভাবে শ্রদ্ধা করত, সেসময় নবীন-প্রবীণের সম্পর্ক কেমন ছিল ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত গল্পের মাধ্যমে তুলে ধরেন।
ক্রন্দনরত অবস্থায় প্রবীণরা নবীনদের সাথে গল্পের মাধ্যমে বর্তমানে নিত্যদিনের জীবনযাত্রা কেমন কাটছে সেটিও তুলে ধরেন। নবীনরা প্রবীণদের গল্পগুলো মনোযোগ সহকারে শুনে যেমন আনন্দ পেয়েছে আবার কষ্টের কথাগুলো শুনে অনেকেই কেঁদেও ফেলেছেন। এ সময় অনেক নবীনরা অভিজ্ঞতা সঞ্চারও করেছে।
এ সময় অংশগ্রহণকারী নবীন শিক্ষার্থীরা বলেন, “আমাদের প্রবীণদেরকে শ্রদ্ধা করতে হবে। তারা তো আমাদের পথ দেখাচ্ছেন। আজকে আমরা তো আমাদের না জানা অনেক কিছু তাঁদের মুখ দিয়ে শুনতে পেলাম। তাঁরা যে গল্পগুলো বললেন তা যেন রূপকথার মতো মনে হয়েছে আমাদের কাছে। আমাদের চারপাশ সম্পর্কে আরো ভালো করে জানতে হলে তাঁদের খুবই দরকার। প্রবীণরা সত্যিকার অর্থেই আমাদের বন্ধু।” আজ থেকে আমরা আমাদের মা, বাবা, দাদা, দাদিদের ভালো রাখার জন্য যেটুকু দ্বায়িত্ব ও কর্তব্য আছে সেগুলো অবশ্যই পালন করার চেষ্টা করব।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রবীণ-নবীন মাঝেমধ্যে এমন আয়োজন করার জন্য আবেদন জানান।
খুলনা গেজেট/এনএম