সাতক্ষীরা–৪ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্ত বাতিল করে আশাশুনি উপজেলাকে সম্পূর্ণ পৃথকভাবে সাতক্ষীরা–৩ আসন হিসেবে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন উপজেলা জামায়াতের নেতৃবৃন্দ।
শনিবার (২৩ আগস্ট) বেলা ১২টায় আশাশুনি উপজেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত স্থানীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। তাদের দাবি, পূর্বের সাতক্ষীরার পাঁচটি আসন ফিরিয়ে শুধু আশাশুনিকে নিয়ে একটি আসন ঘোষণা করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা জামায়াতের আমীর আবু মুছা তারিকুজ্জামান তুষার। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আশাশুনি ও শ্যামনগর পৃথক দুটি সংসদীয় আসন ছিল। আশাশুনি ছিল সাতক্ষীরা–৩ এবং শ্যামনগর ছিল সাতক্ষীরা–৫ আসন। ভৌগলিকভাবে দুর্গম ও দুর্যোগপ্রবণ উপকূলীয় অঞ্চল হওয়ায় এ দুটি আসন আলাদা রাখা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আসন সংখ্যা কমিয়ে আশাশুনি ও শ্যামনগরকে একত্রিত করে সাতক্ষীরা–৪ আসন করা হয়। এবারের পুনর্বিন্যাসেও আশাশুনি ও শ্যামনগরকে একই আসনে রাখা হয়েছে, যা সমস্যার সমাধান না করে আরও জটিল করেছে।
তিনি উল্লেখ করেন, আশাশুনি থেকে শ্যামনগরের দূরত্ব প্রায় ১৫০ কিলোমিটার এবং পূর্ব–পশ্চিমে বিস্তার ১২৭ কিলোমিটার। দুটি উপজেলা নদ-নদী দ্বারা বেষ্টিত হওয়ায় তাদের মধ্যে সরাসরি সড়ক ও সেতু যোগাযোগ নেই। আশাশুনি ও শ্যামনগর উভয়ই ঘূর্ণিঝড়প্রবণ উপকূলীয় এলাকা। প্রতিবছর নদীভাঙন ও জলোচ্ছ্বাসে শত শত পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আইলা, আম্পান, বুলবুল, রেমেল ও ফনির মতো ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে এ অঞ্চল আজও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, আশাশুনি উপজেলার গ্রামগুলো কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়া, মরিচ্চাপা, বেতনা ও গলঘেষিয়া নদীর তীরে দ্বীপাকৃতির চারটি ভূখণ্ডে অবস্থিত। অন্যদিকে শ্যামনগর কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়া, কালিন্দী, কাকশিয়ালী, আদি যমুনা ও মালঞ্চ নদী দ্বারা বেষ্টিত। তাই শুধু ভোটার সংখ্যা নয়, ভৌগলিক অবস্থান, দুর্গম যোগাযোগ এবং ঘূর্ণিঝড়–বিধ্বস্ত উপকূলীয় এলাকার বাস্তবতা বিবেচনায় আশাশুনিকে পৃথক সংসদীয় আসন হিসেবে রাখা জরুরি।
তিনি সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, “এটি আশাশুনি উপজেলার লাখো মানুষের জীবন–মরণের দাবি।”
এ সময় উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাও. আনওয়ারুল হক, সহকারী সেক্রেটারি মাও. আব্দুল বারী ও ডা. রোকনুজ্জামান, অফিস সেক্রেটারি মাও. রুহুল কুদ্দুস, বাইতুলমাল সেক্রেটারি মাও. শহিদুল ইসলাম, কর্মপরিষদ সদস্য এবিএম আলমগীর পিন্টু, হাফেজ আব্দুল্লাহ, মাও. আব্দুল হাই প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা গেজেট/এসএস