Edit Content
খুলনা, বাংলাদেশ
বৃহস্পতিবার । ৭ই আগস্ট, ২০২৫ । ২৩শে শ্রাবণ, ১৪৩২

ই-পেপার

Edit Content

সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সপ্তাহের ব্যবধানে সাতক্ষীরার বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা। বর্তমানে পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬৬ টাকা ও ৭০ টাকা কেজি। মাত্র এক সপ্তাহ আগে যে পেঁয়াজের দাম ছিল ৪৬ টাকা ও ৫০ টাকা কেজি। একই সাথে আদার দাম বেড়েছে কেজিতে প্রায় ৫০ টাকা। হঠাৎ করেই বাজারে পেঁয়াজের ঝাঁঝ বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা।

এদিকে হঠাৎ করে দাম বাড়ার কারণ হিসাবে ব্যবসায়ীরা বলেছেন, পেঁয়াজের মৌসুম শেষ হয়ে গেছে অনেক আগেই। ফলে বছরের এ সময়ে এসে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কিছুটা কমেছে। এছাড়া, টানা বৃষ্টির কারণেও পেঁয়াজ সরবরাহে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে। যার প্রভাব পড়েছে দামের ওপর। তবে ভোক্তাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা সবসময় দাম বাড়ানোর সুযোগ খোঁজে। এখন বৃষ্টির অজুহাতে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড়বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, পাইকারি বাজারে দেশি দুই প্রকারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৬ টাকা ও ৭০ টাকা কেজি। যা মাত্র এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৪৬ টাকা ও ৫০ টাকা কেজি। খুচরা বাজারে এসব পেঁয়াজ কেজিতে ৫/১০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। একই সাথে বেড়েছে আদার দাম। পাইকারি বাজারে মাত্র ৮০ টাকার আদা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা কেজি। মৌসুম শেষ ও টানা বৃষ্টির কারণে বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়িরা।

সুলকানপুর বড়বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা শহরের মুনজিতপুর এলাকার বাসিন্দা প্রবীর কুমার ঢালী জানান, গত শুক্রবার (১ আগস্ট) পাইকারি বাজার থেকে পেঁয়াজ কিনেছি ৫০ টাকা কেজি। এসময় দেশি লাল একটি পেঁয়াজ ছিল ৪৬ টাকা কেজি। বৃহস্পতিবার(৭ আগস্ট) বাজারে এসে শুনি সেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৬ টাকা ৭০ টাকা কেজি দরে। ৮০ টাকা কেজির আদা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা কেজি। কোন কারণ ছাড়াই ব্যবসায়িরা ইচ্ছামত হঠাৎ করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু বাজারের এহাল হকিকত দেখার কেউ নেই। তিনি বাজার মনিটরিংয়ের দাবি জানান।

বাজারের খুচরা ব্যবসায়ি আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা পাইকারি বাজার থেকে কিনে এনে কেজিতে ৫/৬ টাকা বেশি দামে বিক্রি করি। কারণ এক বস্তা পেঁয়াজ কিনলে প্রায় ৫/৭ কেজি নষ্ট বের হয়। এরপরও আমরা ক্রেতাদের ধরে রাখার জন্য সবধরনের পণ্য দোকনে উঠাই। কিন্তু গত ৪/৫দিনের ব্যধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। হঠাৎ দাম বাড়ায় আমরা ক্রেতাদের কাছে কৈফিয়াত দিতে পারছিনা। দাম শুনলে অনেকে আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।

সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড়বাজারে পাইকারি ব্যবসায়ি আব্দুল আজিজ জানান, কিছুদিন আগেও বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ ছিল সন্তোষজনক। হঠাৎ করে কয়েকদিন আগে থেকে সরবরাহ কমে গেছে। কোন পণ্যের সরবরাহ কমে গেলে তার দামও বাড়তির দিকে থাকে। এছাড়া পেঁয়াজের মৌসুম শেষ হয়ে গেছে অনেক আগে। বছরের এ সময় বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কিছুটা কমে আসে। এ অবস্থায় দাম বাড়ার আশায় মজুতদার ও বড় কৃষকরা বাজারে পেঁয়াজ কম ছাড়ছেন। তাছাড়া টানা বৃষ্টির কারণে পরিবহন সমস্যায় পড়ে অনেকে পেঁয়াজ বাজারজাত করতে পারছেন না। ফলে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। বাজারে সরবরাহ বাড়লে দাম আবার কমে যাবে বলে জানান তিনি।

সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড়বাজারের কাঁচাপাকা মাল ব্যবসায়ি সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান মুকুল বলেন, এবার মৌসুমের শুরুতে মার্চ-এপ্রিলে প্রান্তিক কৃষকেরা চাষের খরচ তুলতে বাজারে একসঙ্গে বেশি পেঁয়াজ তুলেছিলেন। ফলে বাজারে সরবরাহ বেশি থাকায় তখন পেঁয়াজের দাম কম ছিল। এখন সব পেঁয়াজ মজুতদার ও বড় কৃষকদের কাছে। এছাড়া চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশে ভারতীয় পেঁয়াজ তেমন আসছে না। এ কারণে দেশি পেঁয়াজের বেশ চাহিদা রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বাজারে যেসব পেঁয়াজ বেচাকেনা হচ্ছে সেগুলো সবই দেশি। এছাড়া, দেশে পেঁয়াজের মৌসুম শেষ হয়ে গেছে অনেক আগে। এ সময় বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কিছুটা কমে আসে। ফলে দাম বাড়ার আশায় মজুতদার ও বড় কৃষকরা বাজারে পেঁয়াজ কম ছাড়ছেন। যে কারণে হঠাত করে দাম বেড়েছে। বাজারে সরবরাহ বাড়লে দাম আবার কমে আসবে বলে জানান তিনি।

খুলনা গেজেট/রুহুল কুদ্দুস/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন