আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান। তিনি ‘মাটি ও মানুষের শিল্পী’ হিসেবে পরিচিত। যার রঙ তুলিতে দারিদ্র-ক্লিষ্ট ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো হয়েছেন পেশিবহুল এবং শক্তিশালী। এই গুণী চিত্রশিল্পীর ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (১০ অক্টোবর)।
এ উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের আয়োজনে আজ শুক্রবার সকালে সুলতান স্মৃতি সংগ্রহশালায় শিল্পীর রুহের মাগফেরাত কামনা করে কোরআন খতম, শিল্পীর সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও দোয়া অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, শিশুদের অংকিত চিত্র প্রদর্শনী, শিল্পী জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা ও পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ও সুলতান ফাউন্ডেশনের সভাপতি শারমিন আক্তার জাহান।

অন্যান্যদের মধ্যে পুলিশ সুপার মোঃ রবিউল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জুলিয়া সুকায়না, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর-ই আলম সিদ্দিকী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) লিংকন বিশ্বাস, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্চিতা বিশ্বাস, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মনিরুল ইসলাম, সুলতান ফাউন্ডেশনের সাবেক সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট ইকবাল হোসেন সিকদার, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: সাজেদুল ইসলাম, নড়াইল প্রেস ক্লাবের সভাপতি নড়াইল প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাড. এস এম আব্দুল হক, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রশিদ লাবলুসহ বিভিন্ন শ্রেণীর পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
চিত্রশিল্পের খ্যাতি হিসেবে শিল্পী সুলতান ১৯৮২ সালে একুশে পদক, ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদক, ১৯৮৪ সালে রেসিডেন্ট আর্টিস্ট স্বীকৃতি, ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের রেসিডেন্ট আর্টিস্ট স্বীকৃতি, ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননাসহ ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার’, নিউইয়র্কের বায়োগ্রাফিক্যাল সেন্টার থেকে ‘ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট’ এবং এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে ‘ম্যান অব এশিয়া’ পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন।

সৃষ্টিশীল এই শিল্পী নড়াইলের পুরুলিয়ায় ১৯৫৫-৫৬ সালে ‘নন্দন কানন ফাইন আর্ট এন্ড স্কুল, ১৯৭৩-৭৪ সালের দিকে যশোর এম এম কলেজের একটি পুরোনো হোষ্টেলে একাডেমী অব ফাইন আর্ট স্কুল, ১৯৭৮ সালের দিকে জন্মস্থান নড়াইলের মাছিমদিয়ায় ফাইন আর্ট স্কুল এবং ১৯৮৭ সালে নড়াইলের কুরিগ্রামে “শিশুস্বর্গ” নামে শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ১৯৯৩ সালের ১০ আগষ্ট শিল্পী নিজ উদ্যোগে চিত্রাংকন, নৃত্য ও সঙ্গীত শিক্ষার জন্য ‘লাল বাউল সম্প্রদায়’ নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন গড়ে তোলেন। শিল্পীর মৃত্যুর পর ২০০৩ সালে শহরের কুড়িগ্রামে সরকার শিল্পীর নামে সুলতান কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হয়েছে। ২০০৯ সালে শিল্পীর ভক্তরা সুলতানের বাগান বাড়ি শহরের পশ্চিম মাছিমদিয়ায় ‘এস এম সুলতান বেঙ্গল চারুকলা মহাবিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এসএম সুলতান ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইলের মাছিমদিয়ায় বাবা মেছের আলী ও মা মাজু বিবির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
খুলনা গেজেট/এনএম

