ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সাংবাদিকদের মারধরের ঘটনায় তিন শিক্ষার্থীকে দুই সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইসঙ্গে, অভিযুক্ত আরও ৯ জন শিক্ষার্থীকে সতর্ক করা হয়েছে। গত ৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭১ তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বুধবার (৫ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক স্বাক্ষরিত চারটি পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আফসানা পারভীন তিনা, নাহিদ হাসান ও রিয়াজ মোর্শেদ। এছাড়া সতর্ক করা ৯ শিক্ষার্থী হলেন- একই বিভাগের ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের সাইফুল ইসলাম, মিল্টন মিয়া, মশিউর রহমান, রাকিব হোসেন, ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের সৌরভ দত্ত, মিনহাজুল আবেদীন, সাব্বির হোসেন, সৌরভ হোসেন সজীব ও ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের ফরিদুল আলম পান্না।
প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা যায়, সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় সাংবাদিক আরিফের মোবাইল কেড়ে নেওয়া ও মারধরের উস্কানি দেওয়ার জন্য আফসানা পারভীন তিনাকে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া সাংবাদিক রবিউল ইসলামকে তলপেটে লাথি মারে নাহিদ হাসান এবং সাংবাদিক আরিফ বিল্লাহর মোবাইল রিসেট দিয়ে মেডিকেল সেন্টারে ফেলে রাখার দায়ে নাহিদ হাসানকে ২ সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়। অপরজন প্রক্টরের কাছে জুনিয়রদের দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করানো এবং এ ঘটনায় নাহিদকে সহযোগিতা করায় রিয়াজ মোর্শেদকেও বহিষ্কার করা হয়েছে।
অন্যদিকে ঘটনায় পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার কারণে ৯ শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যতে এসব কর্মকাণ্ডে জড়ানোর জন্য সতর্ক করা হয়। বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের সংশ্লিষ্ট হল প্রভোস্ট জানিয়েছেন, বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের এখন থেকে হলে থাকার অনুমতি নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে নোটিশ পেলেই তাদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ১২ জুলাই বিকেল ৫টার দিকে অর্থনীতি বিভাগের আন্তঃসেশন ফুটবল ম্যাচ চলাকালে সিনিয়র-জুনিয়র মারামারি শুরু হয়। এ সময় ভিডিও করতে গিয়ে মোবাইল কেড়ে নেয় আফসানা পারভীন তিনা। এক পর্যায়ে তার উস্কানিতে আরিফের ওপর হামলা চালায় বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ সময় আরেক সাংবাদিক রবিউল ইসলাম উপস্থিত হলে, তাকে তলপেটে লাথি মারেন নাহিদ হাসান। ঘটনার পর, তিনিও মারধরের ভান করে মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি হন।
এছাড়া, জুনিয়রদের দিয়ে প্রক্টর বরাবর মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করানো হয়। পরবর্তীতে ১৪ জুলাই অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী সিন্ডিকেটে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
খুলনা গেজেট/এএজে

