শুক্রবার । ৩রা অক্টোবর, ২০২৫ । ১৮ই আশ্বিন, ১৪৩২

যশোরে সড়ক প্রশস্থকরণে সাহিত্য পরিষদ ভবনে বুলডোজার

যশোর প্রতিনিধি

শিল্প-সাহিত্য চর্চার ঐতিহ্যবাহী সংগঠন যশোর সাহিত্য পরিষদের একাংশ ভেঙে দেয়া হয়েছে। সামনের সড়ক প্রশস্তকরণের কথা বলে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ ভবনটির একাংশ ভেঙে দেয়। এছাড়া ভবনের বাকি অংশও ব্যবহার করতে বাধা দিচ্ছে জেলা পরিষদ। সাহিত্য পরিষদ নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, তাদেরকে উচ্ছদ করতে পরিকল্পিত চক্রান্তের অংশ হিসেবেই এমন তৎপরতা চালানো হচ্ছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ যশোরের কর্মকর্তারা জানান, দড়াটানা থেকে ঈদগাহ মোড় পর্যন্ত সড়কটি সংকুচিত থাকায় সেটা প্রশস্তকরণের উদ্যোগ নেয়া হয়। এ জন্য জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ তাদের কার্যালয়ের সামনের তিনফুট জায়গা রাস্তার জন্যে দিতে সম্মতি দেয়। এরপর তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী শুধুমাত্র ওই তিনফুট জায়গায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। কিন্তু এরসাথে সাহিত্য পরিষদের একাংশ ভেঙে দিয়েছে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ।

যশোর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক শাহিন ইকবাল অভিযোগ করেন, জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ ভবন ভাংচুরের ব্যাপারে তাদেরকে লিখিত কোন নোটিশ দেয়নি। বরং মাত্র তিন কার্যদিবস আগে মৌখিকভাবে তাদেরকে ভবন ছেড়ে দেয়ার জন্যে বলা হয়। এ ব্যাপারে তারা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি এ জাতীয় সংগঠন জেলা পরিষদ চত্বরে রাখতে দেবেন না বলে জানিয়ে দেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে আকস্মিক সাহিত্য পরিষদের কার্যালয়ে বুলডোজার চালানো হয়।

উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালে যশোর সাহিত্য পরিষদ গঠিত হওয়ার পর ওই বছরই তৎকালীন জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল জেলা পরিষদ অভ্যন্তরে দ্বিতল ভবন নির্মাণ করে সেটা সাহিত্য পরিষদকে বরাদ্দ দেন। সেই থেকে ওই ভবনে সাহিত্য পরিষদের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। যশোরের সাহিত্য আন্দোলন ও নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সাহিত্য পরিষদের রয়েছে অগ্রণী ভূমিকা। সুনীল গঙ্গোপাধ্যয়, কবি আজীজুল হক, হাসান আজীজুল হক, ড. মনিরুজ্জামান, হেলাল হাফিজ, রফিক আজাদ, আহসান হাবীব, নির্মলেন্দু গুণের মত খ্যাতিমান কবি-সাহিত্যিকরা একাধিকবার যোগ দিয়েছেন যশোর সাহিত্য পরিষদের বিভিন্ন আয়োজনে। কবি রেজাউদ্দিন স্ট্যালিন, দারা মাহমুদ, ফখরে আলমসহ পরিচিত কবি-সাহিত্যিকদের শিল্পচর্চার হাতেখড়ি এ সংগঠনে।

এ ব্যাপারে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল বলেন, ভবনটি জেলা পরিষদের। সাহিত্য পরিষদ সেটা ব্যবহার করতো মাত্র। এখন ওই ভবনের যে অবস্থা সেখানে কোনো লোক উঠানো সম্ভব নয়। এমনকি সংস্কার করেও সেটা ব্যবহারের পরিবেশ নেই। ফলে তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছি, কেউ জমি দিলে জেলা পরিষদের তহবিল থেকে সেখানে সাহিত্য পরিষদের জন্য ভবন নির্মাণ করে দেয়া হবে।

খুলনা গেজেট/এ হোসেন




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন