নানা অনিয়মের অভিযোগে মোংলার রাতুল ক্লিনিককে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। রবিবার (৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে পৌর শহরের রবীন্দ্রনাথ সড়কে অভিযান চালান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন আক্তার সুমি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শাহীন।
অভিযানে ক্লিনিকে ব্যাপক অনিয়ম পাওয়া যায়। লাইসেন্স নবায়ন নেই, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চুক্তি নেই, নারকোটিক পারমিশন ও ড্রাগ লাইসেন্সও নেই। এসব অনিয়মের দায়ে ক্লিনিক মালিক জোহরা খাতুনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হালনাগাদ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ে তা করতে ব্যর্থ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
এর আগে গত ২০ নভেম্বর সেবার মূল্য তালিকা টানানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও তা বাস্তবায়ন করেনি ক্লিনিকটি।
স্থানীয়রা জানান, রাতুল ক্লিনিকে সিজার রোগীদের কাছ থেকে ইচ্ছেমতো টাকা আদায় করা হয়- কারো কাছ থেকে ২০ হাজার, কারো কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নেওয়া হয়। এতে রোগীরা প্রতিনিয়ত হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।
স্থানীয় ফার্মেসি মালিক সুব্র মণ্ডল বলেন, “ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়া নিয়মিত ওষুধ বিক্রি করছে রাতুল ক্লিনিক। এটি সম্পূর্ণ অনিয়ম।”
একই অভিযোগ করেন স্থানীয় শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, “ডাক্তার নিয়মিত থাকেন না। ভর্তি রোগীরা ভোগান্তিতে পড়েন। পরীক্ষার রিপোর্টও ভুল পাওয়া যায় অনেক সময়।”
স্থানীয়দের ভাষ্য- রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকায় ক্লিনিকটির বিরুদ্ধে এত অনিয়ম থাকা সত্ত্বেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছিল না। আগে আওয়ামী লীগের নেতাদের আশ্রয়ে ছিল আর ৫ আগস্টের পর ভর করেছে অন্য রাজনৈতিক গোষ্ঠীর ওপর।
এদিকে সম্প্রতি মাদ্রাসা রোডের রাব্বি ক্লিনিকে চিকিৎসকের অবহেলায় এক প্রসূতির মৃত্যু হলে ক্লিনিকটি সিলগালা করে প্রশাসন। সেখানেও অসংখ্য অনিয়ম পাওয়ার পর মালিক ও চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ- বছরের পর বছর মৃত্যুর ঘটনা ও মামলা চললেও রাব্বি এবং রাতুল- দু’টি ক্লিনিকই রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় বহাল তবিয়তে চলছে।

