বাগেরহাটের চিতলমারীর সীমান্তবর্তী মধুমতি নদী থেকে কতিপয় প্রভাবশালী ব্যাক্তি অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছেন। ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার ফুট বালু উত্তোলন করায় ফসলি জমি, গাছপালা ও রাস্তা-ঘাট নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। দিনদিন এ উপজেলার মানচিত্র ছোট হচ্ছে। স্থানীয় পরিবেশবাদীরা অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে ভূমি মন্ত্রণালয়, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক, পিরোজপুর জেলা প্রশাসক ও গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন এবং বিষয়টি চিতলমারী উপজেলা মাসিক আইন-শৃংখলা সভায় উত্থাপন করা হয়েছে। এ ঘটনায় পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন চিতলমারী উপজেলার প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডকোট ফজলুল হক আইনি পদক্ষেপ গ্রহণসহ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ সাজ্জাদ হোসেন জানিয়েছেন অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে কাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বালুমহল ইজারায় একটি নির্দিষ্ট সীমানা বা এলাকা নির্ধারণ করা থাকে। নাজিরপুর উপজেলার বালুমহলের বা বালু উত্তোলনের সীমানা ২৪.২১ একর। কিন্তু পিরোজপুরের নাজিপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গা ও বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার শৈলদাহ এলাকার কয়েকজন প্রভাশালী চিতলমারী উপজেলার অতুলনগর, কুনিয়া ও শৈলদাহ গ্রাম সংলগ্ন মধুমতি নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন। ফলে নদীর ভূ-প্রাকৃতিক পরিবেশ, মৎস্য ও জলজ প্রাণী তথা জীববৈচিত্র্য মারাত্মক ভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছে।
চিতলমারীর শৈলদাহ এলাকার একাধিক গ্রামবাসী জানান, একটি মহল কলাতলা ইউনিয়নের মধুমতি নদীর অতুলনগর, কুনিয়া ও শৈলদাহ এলাকায় ৩-৪টি বলগেট ও ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রতিদিন প্রায় শতাধিক বোট (ট্রলারে) ভরে বালু উত্তোলন করছে। এতে ফসলি জমি, গাছপালা ও রাস্তা-ঘাট নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। দিনদিন এ উপজেলার মানচিত্র ছোট হচ্ছে। কয়েকশ’ একর জমি ও বসত বাড়ি এখন হুমকির মুখে পড়েছে। এ ছাড়া প্রায় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মাটিভাঙ্গা সেতুটিও এখন ঝুঁকির মুখে।
এ ব্যাপারে কলাতলা ইউনিয়ন বিএনপি’র সহ-সভাপতি মোঃ কামাল শেখ ওরফে কামাল মেম্বার বলেন, “পিরোজপুর ও নাজিরপুরের কিছু লোক এবং আমিসহ ৬ জনে মিলে নাজিপুরের বালুমহাল ইজারা নিয়েছি। যার পার্টনারশীপের কাগজপত্র আমাদের রয়েছে। অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন হচ্ছে না। আমরা আমাদের সীমানা থেকে বালু উত্তোলন করছি। যার নামে সরকারি ইজারা আনা হয়েছে তার নামটি এই মুহুর্তে আমার মনে নেই।”
চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, “পিরোজপুর থেকে ওরা বালুমহাল ইজারা নিয়েছে। রাতের আধারে এসে চিতলমারীর সীমানা থেকে বালু উত্তোলন করে। আমরা বেশ কয়েকবার অভিযানে গিয়েছি। আমাদের অভিযানের খবর শুনে ওরা আগে থেকেই চলে যায়।”
খুলনা গেজেট/এনএম

