মঙ্গলবার । ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৫ । ১৯শে কার্তিক, ১৪৩২
প্রতিবাদে বামরা একট্টা

মোংলা বন্দর ব্যবস্থাপনায় বিদেশিদের সঙ্গে চুক্তি ডিসেম্বরের মধ্যেই!

নিজস্ব প্রতি‌বেদক

বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফ-এর পরামর্শে মোংলা বন্দরকে ইজারা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাঁচ বছর ধরে এমন প্রক্রিয়া চলছে। ডিসেম্বরেই সরকার এ উদ্যোগ বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই ডিপি ওয়ার্ল্ড নামের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করতে চায় সরকার। এর বিরুদ্ধে বামেরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।

নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অবঃ) ড. সাখাওয়াত হোসেন গত বুধবার ঢাকায় এক সেমিনারে বলেছেন, “দু’বন্দর ইজারা দেওয়ার উদ্যোগ পাঁচ বছর ধরে চলছে। এ সরকার এটি বাস্তবায়নে দেরি করতে চায় না। ডিসেম্বরের মধ্যেই বাস্তবায়ন হবে। রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় এলে প্রক্রিয়া আরও পিছিয়ে যাবে।”

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, “গত অর্থবছরে মোংলা বন্দরের আয় হয় ৬২ কোটি ১০ লাখ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪১ কোটি ৬৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা বেশি। এতে বন্দরের রাজস্ব আয় বেড়েছে ২ দশমিক ৮৩ ভাগ।

বন্দরের সংকট, সম্ভাবনা, সুবিধা ও চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে বন্দর কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জাহাজ আগমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮শ’ টি, জাহাজ আসছে ৮৩০টি। এ সময়ে কার্গো হ্যান্ডেলিং লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৮ দশমিক ৮০ লাখ টন, কিন্তু হ্যান্ডেলিং হয়েছে ১০৪ দশমিক ১২ লাখ টন। কনটেইনার হ্যান্ডেলিং লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার টিইইউজ, হ্যান্ডেলিং হয়েছে ২১ হাজার ৪৫৬ টিইইউজ।

চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ইজারা দেওয়ার প্রতিবাদে গত সোমবার ঢাকায় বামপন্থাদের এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা বলেন, “অন্তর্র্বতী সরকার চট্টগ্রামের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল ও মোংলা বন্দর কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির কাছে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

বামেরা আগস্ট থেকে এর প্রতিবাদে ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি পালন করছে। নভেম্বরে খুলনা নগরী ও মোংলাতে তারা প্রতিবাদ কর্মসূচি আহ্বান করবে। বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা ইজারার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে।

বাসদের মুখপাত্র ভ্যানগার্ডের অক্টোবরের সংখ্যায় বলা হয়েছে, বন্দর দেশের অর্থনীতির হৃৎপিন্ডই শুধু নয়, একটি কৌশলগত স্থাপনা। বিদেশিরা ইজারা পেলে জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। মোংলা বন্দরও ইজারা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, “বিদেশি কোম্পানি বন্দর পরিচালনা করার দায়িত্ব নিলে সেখানে দেশীয় কর্মীদের ছাঁটাই করা হবে। সরকার ঘোষণা করেছে, চট্টগ্রামের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল ও মোংলা বন্দর কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির কাছে ইজারা দেওয়া হবে। ডিসেম্বরের মধ্যেই সেই চুক্তি তারা সম্পাদন করতে চায়।”

সিপিবি সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন বলেন, “বাম গণতান্ত্রিক দলগুলোর একজন নেতা কর্মী জীবিত থাকতে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে কোনো ভাবেই বিকিয়ে যেতে দেওয়া হবে না।”

 

খুলনা গেজেট/এনএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন