যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং নেদারল্যান্ডস-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রকাশনা সংস্থা এলসভিয়ার প্রকাশিত বিশ্বের শীর্ষ বিজ্ঞানীদের তালিকায় (Top 2% Scientists 2025) স্থান পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫ জন অধ্যাপক। দেশে এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যা। গত বছর এই তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থান পেয়েছিলেন মাত্র ১০ জন গবেষক, চলতি বছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫-এ। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় প্রায় ২৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে স্বীকৃত গবেষকের সংখ্যা।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি এই তালিকায় গবেষকদের প্রকাশিত প্রবন্ধের সংখ্যা, সাইটেশন, এইচ-ইনডেক্স, গবেষণায় ধারাবাহিকতা এবং সহ-লেখকদের প্রভাবের মতো সূচকগুলো বিবেচনা করা হয়েছে। গবেষণা খাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এবং বৈশ্বিক জ্ঞানচর্চায় এর প্রভাবকেই এই তালিকা প্রতিফলিত করে।
যেসব গবেষক স্থান পেয়েছেন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫ গবেষক ও তাঁদের বৈশ্বিক অবস্থান হলো:
এম. এ. খালেক (১৬,২৯৪), মো. মঞ্জুর হাসান (২১,০৫৭), মুহাম্মদ ইব্রাহিম শাহ (৩৮,১২৯), মো. আব্দুল মুকতাদির (৩৮,৪৩৯), মো. রাকিবুল হক (৩৯,৮৭০), মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী (৬২,৭৪২), নেপাল চন্দ্র রায় (৭৭,২৪২), অমিত আবদুল্লাহ খন্দকার (৮০,৩০১), তসলিম উর রশিদ (৯০,৯৫৩), আব্দুস সালাম (৯৪,৫৯৫), মো. নাজমুল হাসান (৯৬,৩৬৯), কাজী মতিন উদ্দিন আহমেদ (৯৯,৫৭৮), মো. শাদ সালমান (১,০৫,৭৬৩), এম. রেজাউল ইসলাম (১,০৬,৪১৬), মো. কাওসার আহমেদ (১,১১,৯৯৪), খাদিজা কুবরা (১,১৩,৭১৬), এম. এস. রহমান (১,১৭,১৭১), তাওসিফুর রহমান (১,১৯,১৬৭), আনিছুর রহমান (১,৩১,৩৫৩), সৈকত মিত্র (১,৩৫,৫২০), এম. মঈনুল ইসলাম (১,৫২,৫৫৭), মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন (১,৫৫,০৯৯), মো. আবু বিন হাসান সুসান (১,৭০,৪৮৩), মোহাম্মদ মিজানুর রহমান (১,৭১,৮১৬), এম. ফেরদৌস (১,৭৭,৯৮৮), মো. আব্দুল কুদ্দুস (১,৮২,৪৩৭), মো. মাহমুদুল ইসলাম (২,৩৮,৩৫৫), মোহাম্মদ ইউসুফ মো. মোল্লা (২,৪৮,৮২০), মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন (৩,০৮,৮২০), মো. রবিউল হাসান (৩,৫৬,৬৪৮), আল সাকিব খান পাঠান (৩৫৭,১৮০), মো. আব্দুর রাজ্জাক (৩৭১,৬৫৬), অনিমেষ পাল (৩৮১,৫৯৩), শেখ এম. এম. ইসলাম (৩৯৫,৭৮৫) এবং মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ (৪৩৮,২৭১)।
ঢাকা মো. উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান এই অসাধারণ অর্জনের জন্য স্বীকৃত শিক্ষক ও গবেষকদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই স্বীকৃতি শুধু আমাদের শিক্ষক ও গবেষকদের অসামান্য অবদানকে তুলে ধরে না বরং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞানচর্চার বিকাশ এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতিকেও প্রতিফলিত করে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বৃদ্ধিতে এবং শিক্ষা ও গবেষণার উৎকর্ষ সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তিনি আরো বলেন, নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন গবেষকদের জন্য টেকসই অনুকূল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে। এর অংশ হিসেবে গত এক বছরে গবেষণা ও প্রকাশনা কার্যক্রমে প্রণোদনা প্রদান, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক গবেষণা সংস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ততার মতো নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গবেষক সংখ্যার এই উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এক নতুন মাইলফলক। গবেষণার উৎকর্ষ ও আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে অগ্রগতির পাশাপাশি এটি উচ্চশিক্ষার বৈশ্বিক অঙ্গনে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খুলনা গেজেট/এএজে