ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তির মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠায় সর্বদলীয় বৈঠক করেছে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদসহ ২২টি রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে ফ্যাসিবাদী শক্তি উল্লেখ করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন নেতারা। বৈঠকে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরসহ নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন ও দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনে আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে হামলার প্রতিবাদে শহীদ মিনারে ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির সংহতি সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেন তারা।
সোমবার বিকালে রাজধানীর বিজয়নগরে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়। পরে দলগুলোর নেতারা হাত উঠিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকার অঙ্গীকার করেন। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতিসহ নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে বলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। সরকার ইতমধ্যে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করার আশ্বাস দিয়েছেন। ঘোষণা দিয়েছেন, কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেই কমিটি গঠন করেননি। যে কারণে আজকের এই সভা থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। যারা নুরুল হক নূরসহ গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের রক্তাক্ত করেছে, সেই সকল দোষীদের অবশ্যই গ্রেপ্তার করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের যে সকল ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তি একসাথে লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পতন নিশ্চিত করেছে, এই ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তির মধ্যে একতার প্রয়োজন। আমরা মোটামুটি বুঝতে পেরেছি, আমাদের মধ্যে যে বিভাজন এবং আমরা একে অপরকে ঘায়েল করার জন্য যে ধরনের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছিলাম। আমাদের এই বিভাজনের সুযোগেই মূলত নুরুল হক নুরের ওপর হামলা করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে পুনরায় ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তির মধ্যে একতা তৈরি করার বিষয়ে আমরা সবাই একমত পোষণ করেছি।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ এবং তার দোসর জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের বিচারের ব্যাপারে সর্বদলীয় সভার সবাই একমত পোষণ করেছে। গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের হামলা হয়েছে, তার প্রতিবাদে শহীদ মিনারের একটি সংহতি সমাবেশের আয়োজন করার ব্যাপারে ২২টি দল (বৈঠকে অংশ নেয়া) একমত পোষণ করেছে। শহীদ মিনারে যে কর্মসূচি হবে, সেই কর্মসূচি হবে ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তির কর্মসূচি।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুর নবী সোহেল, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ, এনসিপির সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম মেম্বার আশরাফ আলী আকন্দ, গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান, এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানি আব্দুল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালাল উদ্দিন আহমেদ, ভাসানী জনশক্তি পার্টির মুখপাত্র আব্দুল কাদের, গণফোরামের প্রেসিডিয়াম মেম্বার শাহ নুরুজ্জামান, জাতীয় সাম্যবাদীর সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার সৈয়দ নুরুল ইসলাম, এনডিএম এর মহাসচিব মোমিনুল আমিন, বাংলাদেশ জাতীয় দল চেয়ারম্যান এহসানুল হুদা, ডেমোক্রেটিক লীগ এর সাধারণ সম্পাদক খোকন চন্দ্র দাস, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর)-এর আহসান হাবীব লিংকন, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির আহমেদ আলী কাসেমী, এনপিপির মহাসচিব মোস্তফা, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টির মহাসচিব সাইফুল আলম, গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আক্তার, নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক কবির হোসেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান।
খুলনা গেজেট/এসএস