‘ছিলোনা কোন জায়গা-জমি, ঘরবাড়ি। ছিলাম রাস্তায়, পাইলাম পাকা ঘর। এ যেন স্বপ্নের মতো। কোনদিন ভাবিনি নিজের একটি ঘর হইবো, তাও আবার পাকা ঘর। সারাজীবন ক্যানেলের পাশে সরকারি জায়গায় ঘুপচি ঘর তুইলা বাস করছি। এখন শেখের বেটি আমাগো ঘর দিছে, কি যে খুসি লাগতাছে তা কইতে পারুম না। খাই না খাই এখন পাকা ঘরে আরামে শান্তিতে ঘুমাইতে পারুম। আল্লাহই শেখের বেটি হাসিনা কে বাঁচায় রাখুক।’ কথাগুলো বলছিলেন ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের মকিমপুর গ্রামের বিধবা চায়না খাতুন (৫০)।
তিনি রোববার দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের জমির দলিল ও চাবি পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে এসব কথা বলেন। শুধু চায়না খাতুন নয় তার মতো ঘরের জমির দলিল ও চাবি পেয়ে তাদের অনুভুতির কথা ব্যক্ত করেন অসহায় ভূমিহীন-গৃহহীন আনেছা খাতুন, আরা খাতুন, আবু তাহের, নাজমুল, শ্যমল কুমারসহ ৪০ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের সদস্যরা।
আনেছা খাতুন নামে এক অসহায় নারী তার অনুভুতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ছিলাম রাস্তার ভিখারি এখন হলাম লাখপতি। মানুষের বাড়িতে কাজ করে জীবন চালাতাম, নিজের কোন মাথাগোজার ঠাই ছিলোনা। কোনদিন স্বপ্নেও ভাবিনি এমন একটা পাকা ঘর পাবো। চায়না, আনেছাদের মতো ঘর পাওয়া সবাই এভাবেই তাদের অনুভুতি ব্যক্ত করেন। এ সময় তারা আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।
রোববার সকাল ১১ টায় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক গণভবন থেকে সারাদেশে ভূমিহীন-গৃহহীনদের মাঝে সেমি-পাকা ঘর হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধনের পর দুপুরে উপজেলার ৪০ জন ভূমিহীন-গৃহহীন অসহায় ছিন্নমূল এসব পরিবারের হাতে ঘরের জমির দলিল ও চাবি হস্তান্তর করা হয়। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসাইন ও ইউএনও সৈয়দা নাফিস সুলতান এসব গৃহহীন পরিবারের হাতে এসব জমির দলিল ও ঘরের চাবি তুলে দেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয় হতে প্রাপ্ত অর্থ থেকে প্রথমে ৩০ টি ও পরে আরও ১০টিসহ মোট ৪০ টি পরিবারের হাতে আজ এই জমির দলিল ও ঘরের চাবি তুলে দেওয়া হয়।
এ সময় এসিল্যান্ড রাজিয়া আক্তার চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা ও সংসদ সদস্যের প্রতিনিধি রওশন আলী, পৌরসভার মেয়র ফারুক হোসেন, ওসি আব্দুর রহিম মোল্লা, পিআইও জামাল হোসাইন, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মহিউদ্দিন মাষ্টারসহ বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যানবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই