যশোরে করোনা শনাক্তের ঊর্ধ্বগতি থামছেই না। শনিবার নতুন করে দুইশ’ ২৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন ৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলায় ৮৩, কেশবপুরে ছয়, ঝিকরগাছায় ১৪, অভয়নগরে ১৭, শার্শায় ৩২ ও চৌগাছায় ১১ জন রয়েছেন।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) প্রকৌশল অনুষদের ডিন ও কম্পিউটার বিজ্ঞান ও ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সৈয়দ গালিব ও একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আলম হোসেন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া যবিপ্রবি কর্মকর্তা ও কর্মচারীর মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৬ জন। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, করোনা আক্রান্ত অন্যান্য ব্যক্তিরা হলেন, যবিপ্রবির সাইন্টিফিক অফিসার জাহাঙ্গীর হোসেন, অফিস সহকারী সুমন হোসেন, কুক মারুফ হোসেন ও পাম্প অপারেটর হাফিজুর রহমান। ওই ব্যক্তিরা গত ১৬ জুন করোনা নমুনা পরীক্ষা করতে দিয়েছিলেন। এছাড়া অর্থ দপ্তরের হাবিবুর রহমান ও ডরমেটরির শরিফুল ইসলাম গত সপ্তাহেই আক্রান্ত হন। বর্তমানে দুই শিক্ষকসহ আক্রান্ত সবাই হোম কোয়ারেণ্টাইনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তারা সবাই এখন পর্যন্ত শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন ।
সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন জানান, শনিবার একদিনে দুইশ’ ২৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টার থেকে দেয়া ফলাফলে যশোরের চারশ’ ২০ জনের নমুনায় একশ’ ৬৩টি পজিটিভ হয়েছে। খুলনার ল্যাবে সাতজনের নমুনায় সবগুলো নেগেটিভ এসেছে। এছাড়া র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় একশ’ ৪৯ টি নমুনায় ৬০ জনের পজিটিভ এসেছে। এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন নয় হাজার চারশ’ চারজন। সুস্থ হয়েছেন ছয় হাজার সাতশ’ ৪০ জন। মৃত্যু হয়েছে একশ’ ছয়জনের। হাসপাতালের আইসলেশনে ৭৫ জন রয়েছেন।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আরিফ আহমেদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রেডজোনে ফজলুর রহমান (৭৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনি ঝিকরগাছাউপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা। ১৭ জুন করোনা উপসর্গ নিয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে ১৮ জুন তার করোনা শনাক্ত হলে রেডজোনে রেফার করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গভীর রাতে তার মৃত্যু হয়। এ পর্যন্ত রেডজোনে ভর্তি হয়েছে ৭৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয় ছয়জন ও ছাড়পত্র নিয়েছেন ১৩ জন। ইয়োলোজোনে মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৫১ জন। ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছে ২৬ জন। ছাড়পত্র নিয়েছে ১১ জন। এছাড়া, কেশবপুর উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের বাগদহা গ্রামের শামসুর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমান (৫৮) শুক্রবার রাত ১১টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। শনিবার মৃত্যুবরণ করেন উপজেলার ত্রিমোহিনী ইউনিয়নে আলেয়া বেগম (৬০)। তিনিও করোনায় আক্রান্ত হয়ে খুলনায় মারা গেছেন।
সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন বলেন, করোনা থেকে রেহাই পেতে হলে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। কিন্তু যশোরের মানুষের স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো লক্ষণ নেই। ন্যূনতম মাস্ক পরিধানের বিষয়টিও কেউ মানতে চায় না। এখনই স্বাস্থ্যবিধি না মানলে, সামনে বড় বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।