সাতক্ষীরার দেবহাটার চাঞ্চল্যকর জুয়েল হত্যাকান্ডের ঘটনার দু’দিন পেরিয়ে গেলেও হত্যার মোটিভ সম্পর্কিত কোন ক্লু এখনো উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। পাশাপাশি বিরামহীন তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়েও খোঁজ মেলেনি হত্যার আগে জুয়েলের সাথে দেখা করতে আসা সেই দুই বাইক আরোহী বা হত্যাকান্ডে জড়িতদের। এখনও সন্ধান মেলেনি জুয়েলের মোবাইল ফোন ও হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রের।
পুলিশের দাবি, হত্যাকারীরা অনেকটা চতুরতার সাথে হত্যাকান্ডটি সংঘটিত করায় মোটিভ উদ্ধারে বেগ পেতে হচ্ছে পুলিশকে। জুয়েল হত্যাকান্ডটিকে ক্লু’লেস বা ওয়েল প্লানড মার্ডার আখ্যা দিলেও, ঘটনার রহস্য ও খুনীদের চিহিৃত করতে যৌথভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশের একাধিক ইউনিট। হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও জুয়েলের মোবাইল ফোনটি খুঁজে না পেলেও আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ অ্যানালাইসিস, হত্যার স্থান ও উদ্ধারকৃত আলামত বিশ্লেষণ, নিহতের পরিবারের সদস্য ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং জুয়েলের মোবাইল কললিস্ট অনুসরণ করে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। এছাড়া পূর্ব কোন শত্রুতা, আর্থিক লেনদেন, পারিবারিক জীবনযাপন, অর্থ-সম্পদ, মাদক কিংবা নারী ঘটিত কোন কারণে হত্যাকান্ডটি সংঘটিত হয়েছে কিনা তাও সুক্ষ্ণভাবে খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
প্রসঙ্গ, গত বুধবার (২ জুন) রাত সোয়া ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার ভিতরে দেবহাটা থানা থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে নিজের বাড়িতে দুর্বৃত্তদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হন আশিক হাসান জুয়েল (৩২)। তিনি দেবহাটা সদরের মৃত আনিছুর রহমানের ছেলে। হত্যার আগে বাড়ির সামনের পুকুরের সিড়িতে বসে ছিলেন জুয়েল। সে সময়ে তার খোঁজে আসে অজ্ঞাত দু’জন বাইক আরোহী। অন্ধকারে জুয়েলের মায়ের কাছ থেকে অবস্থান জিজ্ঞেস করে পুকুর পাড়ে জুয়েলের সাথে দেখা করতে যান বাইক আরোহীরা। ঘটনার বিশ্লেষণে মূলত ওই সময়েই হত্যাকান্ডটি সংঘটিত এবং হত্যায় ওই দু’জন বাইক আরোহীর সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে দৃঢ় সন্দেহ পুলিশের।
এদিকে মামলা দায়েরের আগে ও পরে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় জুয়েলের মা ও ভাই সহ নিয়মিত সংস্পর্শে থাকা পার্শ্ববর্তী এলাকার ইমরোজ আলী, কাজের ছেলে আলিম, সম্প্রতি কাজ ছেড়ে যাওয়া গৃহপরিচারিকা রওশন আরা, শাঁখরা কোমরপুরের মিনহাজ, নাংলা নওয়াপাড়ার হারুন বিশ্বাসসহ কমপক্ষে দশ জনকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
দেবহাটা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এসএম জামিল আহমেদ বলেন, পুলিশের একাধিক ইউনিট হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচনে বিরামহীন ভাবে কাজ করছে। বেশ কিছু বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত করা হচ্ছে। সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্তের স্বার্থে এই মূহুর্তে সবকিছু প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/এনএম