চুলচর্চায় তেল অপরিহার্য। এমনকি এ নিয়ে একটি প্রবাদও রয়েছে। তেলে চুল তাজা। অর্থাৎ চুলের যত্ন তেল ছাড়া হয় না এ কথা সবাই জানে ও মানে। কিন্তু রূপচর্চায়ও তেল অতুলনীয়, এ বিষয়ে হয়তো অনেকেই জানেন না বা জানলেও এত দিন গুরুত্ব দেননি।
তাঁরা এবার একটু নড়েচড়ে বসতে পারেন। কারণ, রূপবিশেষজ্ঞরা এখন ত্বকচর্চায় নারকেল তেল ও অলিভ অয়েল ব্যবহারের পরামর্শ দেন। তবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে রয়েছে নানা সতর্কতা। অর্থাৎ জানতে হবে এর সঠিক প্রয়োগ।
নারকেল তেল :
* যাঁদের হাত ও পায়ের ত্বক রুক্ষ, তাঁরা টানা সাত দিন গোসলের আগে নারকেল তেল সামান্য গরম করে হালকা ম্যাসাজ করুন। ত্বক কোমল হবে। এরপর নিয়মিত বিরতিতে একই পদ্ধতিতে ব্যবহার করুন।
* অতি সংবেদনশীল ত্বকের জন্য অনেকেই বাজারের বডি লোশন ব্যবহার করতে পারেন না। যাঁরা ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার চিন্তায় রয়েছেন, তাঁরা নারকেল তেলের সঙ্গে গ্লিসারিন, সামান্য গোলাপজল এবং পছন্দমতো এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে অর্গানিক বডি লোশন তৈরি করে নিন। যা ত্বকে র্যাশ তৈরি করবে না এবং নানা ধরনের সমস্যারও সমাধান করবে।
* আবার যাঁদের কেমিক্যাল বডি স্ক্রাবার ব্যবহারে ত্বকে নানা সমস্যা তৈরি হয়, তাঁরা বাড়িতে কোরানো নারকেলের সঙ্গে নারকেল তেল মিশিয়ে বডি স্ক্রাবার তৈরি করে নিতে পারেন। এতে ত্বকে অন্য কোনো সমস্যা হবে না।
* অনেকের ত্বকেই অতিরিক্ত মৃত কোষ জমতে থাকে, যা নিয়মিত পরিষ্কার না করলে অন্য সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাই প্রয়োজন ন্যাচারাল স্ক্রাব। আধা কাপ নারকেল তেল এবং সামান্য বেসনের সঙ্গে বড় দানার চিনি মিশিয়ে তৈরি করা যায় ন্যাচারাল স্ক্রাব এবং এতে চিনি গলে যাওয়া পর্যন্ত স্ক্রাব করুন। ত্বকের মৃত কোষ ঝরে যাবে, ডার্ক প্যাচও হালকা হবে।
* ঠোঁট ও চোখের যত্নেও নারকেল তেল অতুলনীয়। সেমিলিকুইড নারকেল তেল লিপ বাম হিসেবে দারুণ কার্যকর।
* ডার্ক সার্কলের সমস্যা দূর করতেও নারকেল তেল কার্যকর। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে তুলায় বা কটন প্যাডে নারকেল তেল নিয়ে চোখে চাপা দিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিলে ডার্ক সার্কলের সমস্যা সমাধান হবে।
* নানা সময়ে যাঁরা ভারী মেকআপ ব্যবহার করেন, তাঁদের জন্যও এটি প্রয়োজনীয়। কারণ, নারকেল তেল ন্যাচারাল মেকআপ রিমুভার হিসেবে বেশ ভালো। মুখ, ঘাড় ও গলার মেকআপ তুলতে এটি কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখায় না।
* মনে রাখতে হবে, ত্বকের যত্নে অর্গানিক নারকেল তেল ব্যবহার করা জরুরি। বোতলজাত বা কেমিক্যালাইজড নারকেল তেল ব্যবহার না করাই ভালো।
অলিভ অয়েল :
* রাতে ঘুমানোর আগে ভালোভাবে মুখ ধোয়ার পর সামান্য অলিভ অয়েল মুখে ও গলায় লাগিয়ে নিলে ত্বক কোমল ও মসৃণ হবে।
* গোসলের পর ভিজে ত্বকে অলিভ অয়েল লাগালে ত্বক সহজেই তেল শুষে নেবে এবং পুষ্টি পাবে।
* ন্যাচারাল কন্ডিশনার হিসেবে অলিভ বেশ কার্যকর। শ্যাম্পু করার ১৫ মিনিট আগে অলিভ অয়েল সামান্য গরম করে মাথার ত্বকে ও চুলে হালকা করে ম্যাসাজ করে নিন। চুল ঝলমলে হওয়ার পাশাপাশি ডগা ফাটার সমস্যাও কমবে।
* এক চা-চামচ অলিভ অয়েলের সঙ্গে সামান্য পাতিলেবুর রস এবং বড় দানার চিনি মিশিয়ে লিপ স্ক্রাব তৈরি করা যায়। অলিভ অয়েল দিয়ে ঠোঁট স্ক্রাব করলে ঠোঁট ফাটা কমবে।
* আঙুলের ডগায় অল্প অলিভ অয়েল নিয়ে চোখের চারপাশে ম্যাসাজ করুন রোজ। ১৫ মিনিট পর ভেজা তুলা দিয়ে মুছে নিন। ডার্ক সার্কলের সমস্যা কমবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই